Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চতুর্থ স্ত্রীকে খুন করে ধরা ঘাতক শফিকুল

যৌতুকের জন্য একের পর এক বিয়ে সম্পত্তির দ্বন্দ্বে ছোট ভাইয়ের বড় ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার এক

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০২২, ১২:১৩ এএম

১১ বছরে চারটি বিয়ে করেন শফিকুল ইসলাম (৩২)। প্রতিটি বিয়ের পরই যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। সর্বশেষ চতুর্থ বিয়ে করেন ২০২০ সালে, সাতক্ষীরার রোজিনা বেগমকে (৩৩)। যৌতুকের বিষয়ে কথা কাটাকাটির পর তাকে গলাটিপে হত্যা করেন শফিকুল। এরপর তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। গত রোববার রাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের আকবর শাহ থানা থেকে শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে সিআইডি। গতকাল মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সব কথা বলেন বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১৫ মে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ থানার চরদাহ সাকিনস্থ জনৈক ছবিলার রহমানের ভাড়া করা বাসার তালাবদ্ধ ঘরে রোজিনা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর সিআইডি ছায়াতদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে শফিকুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি স্বীকার করেন যে, এ পর্যন্ত তিনি ৪টি বিয়ে করেছেন। প্রথম বিয়ে ২০০৯ সালে, নিজ এলাকায় কোহিনুর খাতুনকে (১৮)। এ সংসার মাত্র ২ মাস স্থায়ী হয়। দ্বিতীয় বিয়ে ২০১১ সালে। এ সংসারের স্থায়িত্ব ছিল ১ বছর ২ মাস। তাদের জান্নাতি (৯) নামে একটি সন্তান রয়েছে। তৃতীয় বিয়ে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামের ফয়েজ লেক এলাকায়। তাদের খাদিজা আক্তার সুমাইয়া (৭) নামে একটি সন্তান রয়েছে। এ সংসার থাকতেই ২০২০ সালে চতুর্থ বিয়ে করেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানায়।
মুক্তা ধর বলেন, প্রায় ১ বছর ৬ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে সে স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিল। ১৪ মে বিকেলে ভিক্টিমকে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করার সংবাদ পেয়ে নিহতের বাবার বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে যেয়ে স্বামী শফিকুলের দাবিকৃত যৌতুকের ১ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। কিন্তু একই তারিখ রাত সাড়ে ১১টার দিকে শফিকুল ইসলাম ও ভিক্টিম রোজিনা বেগমের মধ্যে এ ঘটনার বিষয়ে পুনরায় কথা কাটাকাটি হলে রোজিনা বেগমকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
অন্যদিকে নোয়াখালীর কবিরহাটে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে মারা যান বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন (৪৫)। ছোট ভাই মো. আব্দুল হাই মাস্টারের (৪৩) লাঠির আঘাতে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সাজেদা আক্তার (৪০) বাদি হয়ে মামলা করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাজধানীর জিগাতলা থেকে আব্দুল হাইকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
সিআইডি জানায়, গত ২১ মে বিকেলে কবিরহাটের নবাবপুরে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে দেলোয়ার ও আব্দুল হাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে দেলোয়ার হোসেনের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন আব্দুল হাই। এতে মাটিতে লুটিয়ে পরেন দেলোয়ার। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে নোয়াখালীর মাইজদীতে গুডহিল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে পাঠানো হয় ঢাকায়। কিন্তু ঢাকা আনার আগেই মারা যান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ