ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
এখন সবার আগ্রহ ক্রিকেটের প্রতি। কিন্তু ’৭০-৮০-র দশকে এর চেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল ফুটবলের প্রতি। তখন বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পেত না দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যেই ফুটবলের সাফল্যের সাগরে ভাসার কথা, সেই ফুটবলের এখন করুণ হাল। সর্বশেষ বড় সাফল্য ২০০৩ সালের সাফে চ্যাম্পিয়ন। এ ছাড়া ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে রানার্স আপ। তাছাড়া আর কোনো সাফল্যই নেই। শুধু ভরাডুবি আর হতাশা। সর্বশেষ ভারতে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের ১৬ কোটি মানুষ যখন সাফে চ্যাম্পিয়নের স্বপ্ন দেখছিল এবং ভারতের ফুটবল বিশ্লেষকরাও বাংলাদেশকে সমীহ করছিল ঠিক তখনই ফুটে ওঠে আরেক ব্যর্থতার চিত্র। তারপর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের শুরুটা দুর্দান্ত হলেও শেষ দিকে তার ধারাবাহিকতা আর ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ কয়েকটি ম্যাচ ড্র। বাংলাদেশ বিদায় নিল সেমিফাইনাল থেকেই। অবশ্য এর জন্য আলোচনা ও সমালোচনা কম হয়নি। গঠন করা হয়েছিল তদন্ত কমিটি। তদন্তের ফলাফল খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের প্রতি অনাগ্রহ এবং কিছু খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে মদ্যপান, অনিয়ম ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগও ওঠে। এই অভিযোগে কয়েকজনের শাস্তিও হয়। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন ঘটেনি। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মাপের কোচ টম সেইন্ট ফিটকে নিযুক্ত করা হলো। তিনি যখন ভুটানের ম্যাচের ক্যাম্পিং করছেন ঠিক সেই সময় শাস্তিপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের কয়েকজন জাতীয় দলের ক্যাম্পিং ছেড়ে নৌবাহিনীর হয়ে খেলেছে। অনেক ঝালাই এবং পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর ঘরের মাঠে ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচের ফলাফল ড্র। অথচ শেষার্ধে খেলানো হয়েছে বেশ কয়েকজন স্ট্রাইকার। সকলেই ছিলেন ব্যর্থ। কাজে লাগাতে পারেনি অনেক সুবর্ণ সুযোগ। এতেই বোঝা যায়, দেশের ক্লাবগুলোতে দেশি স্ট্রাইকারদের চেয়ে বিদেশি স্ট্রাইকারদের গুরুত্ব দেয়া দেশের ফুটবলের কতটুকু ক্ষতি করেছে। অথচ ’৭০-৮০-র দশকে এই ভুটানই বাংলাদেশের বিপক্ষে পাত্তাই পেত না। হারের ব্যবধানও ছিল বিশাল। ৮-০, ৫-০, ৩-০। এমনকি তারা গোল কম দেয়ার জন্যও ফুটবল কর্মকর্তাদের অনুরোধও করত। আর কালের পরিবর্তনে এই ভুটানই এখন ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের। এত ব্যর্থতা কাঁধে নিয়েই বাংলাদেশ সফরকারী হয়ে ১০ অক্টোবর মাঠে নামল তাদের অগ্নিপরীক্ষা দিতে। ম্যাচ হারলে আগামী তিন বছর ফিফার কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারবে না বাংলাদেশ। কাজেই জয় ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই বাংলাদেশের সামনে। অন্তত ১-১ গোলে ড্র করতে হবে। এত প্রশ্ন এত সমীকরণ মাথায় নিয়ে অভিজ্ঞ ও তরুণদের সমন্বয়ে মূল একাদশ গঠন করলেন কোচ টম সেইন্ট ফিট। প্রত্যাশা পূরণ হলো।
ম্যাচে গোল করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচ শেষে ফলাফল ৩-১ গোলে হার বাংলাদেশের। এর ফলে আগামী তিন বছর ফিফা ও এএফসির আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ এবং র্যাঙ্কিংয়েও বিশাল অবনমন ঘটেছে। সর্বনাশের ষোল আনাই যখন পূরণ হয়েছে বাংলাদেশের, এখন টনক নড়েছে বাফুফের। জোর দিতে যাচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের ফুটবলে। কিন্তু আদৌ বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
অতীতেও অনেক আশ্বাস দেয়া হয়েছে বাফুফের পক্ষ থেকে। কিন্তু তা শুধু মুখের কথায় আর কাগজে কলমে, বাস্তবায়ন আর হয়নি। এখন সরকার যদি ফুটবলে হস্তক্ষেপ করে তবে হয়তোবা সুদিন ফিরবে ফুটবলের। ফুটবল তার আগের সাফল্যের সোনালি দিনগুলো ফিরে পাক এবং সাফল্যের জোয়ারে ভাসুকÑ এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
মোঃ ইশফাক উজ্জামান শাহীর
চুয়ারিয়া খোলা, বড়বাড়ী কালীগঞ্জ, গাজীপুর।
ফরম পূরণ বাণিজ্য
যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত। আর তাই আমরা শিক্ষা চাই। শিক্ষা এখন বাণিজ্যের রূপ নিয়েছে। এ বাণিজ্য শুধু শহরের প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলে এমনটা ভাবলে সত্যিই অনেক বড় ভুল হবে। গ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলোরও কম যায় না।
সারা দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে এখন চলছে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ। ফরম পূরণের আগে শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা দিতে হয়। নির্বাচনী পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়, তাদের নিজস্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমতি দেয় ফরম পূরণের । রহস্য শুরু এখান থেকেই । যারা পাস করে তাদের ফরম পূরণ করতে গুণতে হয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ধার্যকৃত নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা। আর কর্তৃপক্ষ এই অঙ্কটা নিজের ইচ্ছামতো ধার্য করে। শিক্ষার্থীদের সেটা দিতে হয়। অভিযোগ করার জায়গা নেই, কোথায় জানাবে তারা অভিযোগ? কিন্তু নির্বাচনী পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়নি, তাদের নির্দিষ্ট ফির তিন চার গুণ বেশি টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করতে হয়। কারণ, কোনো অভিভাবকই চান না টাকার জন্য তাঁদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাক। অভিভাবদের আরও একটি অভিযোগ হলো, টাকার জন্য অনেক শিক্ষার্থীকে ইচ্ছে করেই ফেল করিয়ে দেন শিক্ষকেরা। দেখা যায়, যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফাইনাল পরীক্ষায় প্রায় শতভাগ পাস করে শিক্ষার্থীরা, একই প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনী পরীক্ষায় পাস করে মাত্র ৩০-৪০ শতাংশ। এই শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আমরা কী করব।
মো. শরীফ
কুমিল্লা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।