পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘যা মা তোর জামাইর বাড়ি আমি যাব না/ তোমার জামাই চাকরি করে; মহিমাগঞ্জের চিনির মিলে/ মাঝে মাঝে চিঠি লেখে; বাড়ি আসে না/ যা যা মা তুই জামাইর বাড়ি আমি যাব না’। রংপুরের আঞ্চলিক এই গানটি মানুষের মুখে মুখে শোনা যেত। সত্তুর দশকের মাঝামাঝি স্কুলের সহপাঠীদের একের পর এক বিয়ে হয়ে যাওয়ায় বান্ধবীদের এই গান গেয়ে খেঁপাতাম আমরা। রংপুর থেকে দূরে হলেও যতবার মহিমাগঞ্জ গেছি; দেখেছি হাজার হাজার মানুষের কর্মযজ্ঞ। চিনির মিলকে কেন্দ্র করে ২৪ ঘণ্টা হৈচৈ-হাকডাক-হৈহুল্লোর। ‘দ্যানতো ভাই একন্যা গরম চিনি খ্যাও’ চেয়ে চিন্তে কত গরম চিনি খেয়েছি।
বিদেশ থেকে দেশে প্রতিবছর শত শত টন চিনি আমদানি করা হচ্ছে; অথচ সেই মহিমাগঞ্জ চিনির মিল এখন শুধুই স্মৃতি। চৈত্র মাসে খড়া। ইরি ধানের চাষ এতো ছিল না। আউসের বীজ ছিটানোর ঢের সময় বাকি। বনে জঙ্গলের গাছের পাতা ঝড়ে যেত। ঘরে ধান তুলে দলবেঁধে ১০/১২ দিনের জন্য শিকারে বের হতো সাঁওতালরা। রোদে ভর দুপুরে দেখা যেত দল বেঁধে সাঁওতালরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন বনেজঙ্গলে। এইভাবে পশু-পাখি শিকারকে তারা উৎসব হিসেবে নিত। দেখতাম কোনো কোনো দলের সামনে থাকতো একটা কুকুর। দড়িতে বাধা শিকারী বেজিও দলে থাকতো। বনের ভিতর এবং রাস্তাঘাটের গর্তে ইদুর খরগোশ খুঁজতো মরিয়া হয়ে।
গর্তে ইদুর বা শেয়াল পেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাটি খুঁড়ে তা বের করতো। শিকার ধরার পর কি যে আনন্দ! আমরাও উপভোগ করতাম। ১০/১২ জনের দলে কারো হাতে থাকতো তীর ধনুক-বল্লম। শুধু তীর নয়; শিকার লক্ষ্য করে ৩০/৪০ গজ দূর থেকে ঢিল ছুড়লেও নির্ঘাত সফল হতো। আমরা কম বয়সী ছেলেমেয়েরা ছুটতাম তাদের পিছে পিছে। তাঁদের কারো হাতের লাঠিতে বাঁধা থাকতো ইদুর-ঘরগোশ-বেজি বা বুনো কোনো প্রাণী। রাতে কোথাও স্কুল ঘরে কোথাও গাছের নীচে আবার কোথাও নিজেরা তাঁবু টানিয়ে রাত কাটাতেন। বাচ্চাদের আমরা ভয় দেখাতাম ‘সাঁওতাল আসচে তোমাক ইঁদুর খায়া দেইম’। ইঁদুর খাওয়ার ভয়ে ছোটরা দৌড়ে পালালে আমরা ওদের পিছু নিতাম। সাঁওতালরা এ দেশের ভূমিপুত্র হলেও তারা নিজেদের মতোই করে জীবন যাপনে অভ্যস্ত। এটাই হলো মূল সমস্যা। সাঁওতালরা মুসলিম বা হিন্দু তথা আমাদের মতো বসবাস করতে অভ্যস্ত নন। তারা অন্য রকম। তাই বলে দেশপ্রেম তাদের কমতি নেই। ’৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে তারা অসামান্য অবদান রেখেছেন। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহের কথা কে না জানেন? সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব ৪ ভাইয়ের নেতৃত্বে সাঁওতালসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী ব্রিটিশ ঔপনিবেশি শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার আদায়ের লড়াই করে। অথচ ওই সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বী বেশিরভাগ শিক্ষিত ব্যক্তি ইংরেজ তোষণ করে জোতদার জমিদারী বাগিয়ে নেন। ভারত উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশের আদিবাসী হিসেবে যাদের আখ্যায়িত করা হয় তাদের মধ্যে সাঁওতাল সম্প্রদায় সবচেয়ে সহজ-সরল জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। অল্পেই সন্তুষ্ট একটি জাতী গোষ্ঠী। শান্তপ্রিয় আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সাদামাটা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর যোগসাজশে স্থানীয় জমিদার, জোতদার এবং মহাজনরা প্রচ-ভাবে ব্যাহত করে। সাঁওতালদের ওপর ক্রমাগত শোষণ, বঞ্চনা, নির্যাতন, দাসত্ব আর নারীর অবমাননা যখন সহ্যের সীমা অতিক্রম করে; তখনই সাঁওতালরা ঐক্যবদ্ধ হয়। গড়ে তোলেন দুর্বার আন্দোলন। এই বিদ্রোহে প্রতিবাদী সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরবসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল প্রাণ হারায়। মুক্তিযুদ্ধে সাঁওতালরা সন্মুখভাগে অংশগ্রহণ করে। সামাজিক ভাবে ছোট বেলায় তীর চালানো শিক্ষা নেয়ায় তীর-ধনুক হাতে সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করে পরাস্ত করে পাকিস্তান বাহিনীকে। সাঁওতালদের তীরের লক্ষ্য অব্যর্থ, নিশানায় সাধারণত ভুল হয় না। গ্রামে, বনে, জঙ্গলে দিকচিহ্নে ও দিকনির্দেশনায় তারা হন নির্ভুল; অতএব প্রতিপক্ষ হন অনায়াসে কুপোকাত।
৬ নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বাগদাফার্ম এলাকার চিনিকলের দখল করা জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করার অভিযানের একটা ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায় কুয়াশাচ্ছন্ন গ্রামে একদল পুলিশ দলবেঁধে এগিয়ে যাচ্ছে অস্ত্র উঁচিয়ে, গুলি করতে করতে। দৃশ্য রীতিমতো যুদ্ধের মতোই। পুলিশের সামনে কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি, অগ্নিসংযোগ করছে সাঁওতালদের ঘরবাড়িগুলোয়। দাউ দাউ করে জ্বলে উঠছে ঘরবাড়িগুলো। টিনের চালা বেঁকে যাচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে, সে দৃশ্য দেখা যায়। অন্ধকারে ঘরে আগুন; আর গুলির শব্দ। নিরীহ মানুষ জীবন বাঁচাতে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে দিগি¦দিক ছুটছে। মিডিয়ার খবরে বলা হয় মহিমাগঞ্জ চিনিকলের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে নিরীহ সাঁওতালদের মুম্বাই সিনেমার ঢঙে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় রাজনীতির টাউট-গু-া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বেধড়ক লাঠিপেটা করেছে; রক্তপাত ঘটিয়ে ৩ সাঁওতালকে হত্যা করেছে। অনেক সাঁওতাল গুরুতর আহত হয়। গুলিবিদ্ধ দু’জনকে গ্রেফতার করে হাসপাতালে নেয়া হলেও হ্যা-ক্যাপ পরিহিত অবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হয়। নিরীহ সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে সাঁওতাল পল্লী ভস্মীভূত করে। প্রায় আড়াই হাজার মানুষ পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর সব সবকিছু ফেলে প্রাণ নিয়ে পালাতে বাধ্য হয়। টিভি চ্যানেলে সচিত্র প্রতিবেদনে দেখা যায় বাস্তুচ্যুত শত শত সাঁওতাল শিশু, বৃদ্ধা, নারী, পুরুষ-মহিলা গির্জা চত্বরে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেয়। খাবার জুটছে না অনেকেরই। ত্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছিল। কৌশলে তা দেয়া হয়েছে। ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ। ঘটনার পর মানবাধিকার সংগঠনসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা গেছেন। গেছেন নাগরিক কমিটির বিবেকবানরা। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের তল্পিবাহক ড. আবুল বারাকাতের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল পুড়ে যাওয়া সাঁওতাল পল্লী পরিদর্শন করে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নৃশংসতার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন। আবুল বারাকাতের প্রস্তাবনা-উপদেশ সরকারের কাছে সাধারণত হয় অবশ্যই পালনীয়। অথচ সাঁওতালদের ক্ষেত্রে দেখা গেল ব্যতিক্রম। সচিবালয়ে দায়িত্বশীল মন্ত্রী ও আমলারা যে সব কথাবার্তা শোনালেন তা যেন পুরনো রেকর্ড। ভাবখানা যেন সেখানে তেমন কিছুই ঘটেনি; বরং ঘটনার জন্য দায়ী ওই নিরীহ সাঁওতালরাই। অবশ্য উচ্চ আদালত এ নিয়ে একাধিক নির্দেশনা দিয়েছে।
বাংলাদেশে নানান ধর্মের-জাতের মানুষের বসবাস। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাড়াও চাকমা, মারমা, মুরং, খাসিয়া, হাজং, টিপরাসহ নানা জাতি ধর্মের লোকের বসবাস। কিন্তু ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে সাঁওতালরা। ২৬ বছর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করে পাহাড়ে হাজার হাজার মানুষের রক্ত ঝড়িয়ে শান্তিবাহিনীর নেতা সন্তু লারমা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ ভোগ করছেন। অথচ সারাজীবন সুনাগরিক হিসেবে দেশের প্রান্ত সীমায় বসবাসরত সাঁওতালদের ওপর কেন এই নিপীড়ন? সাঁওতাল পল্লীতে অগ্নিকা-ের পর রাজশাহীস্থ ভারতীয় উপ-হাইকমিশনের উপ-হাইকমিশনার অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ছুঁটে যাওয়ার নেপথ্যে কি কোনো রহস্য আছে?
জনসংখ্যার অনুপাতে দেশে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নেহায়েত কম। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, দিনাজপুরের খানসামা, বিরল উপজেলা, সেতাবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা, বগুড়ার কিছু এলাকায় সাঁওতালদের বসবাস। প্রান্তসীমায় বসবাসকারী এই নৃ-গোষ্ঠী সাঁওতাল সবচেয়ে সুবিধাবঞ্ছিত। জনসংখ্যা কমতে কমতে জাতিটি নিঃশেষ হতে চলেছে। অন্য আর দশজন নাগরিকের মতো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। চাষাবাদের পাশাপাশি বনের পশুপাখি তাদের খাবার। সে বন উজাড় হয়ে গেছে; পশুপাখিরাও। সাঁওতালরা একটি ধ্বংসোন্মুখ ক্ষুদ্র জাতিসত্তা হিসেবে টিকে আছে।
জাতি হিসেবে সাঁওতালরা প্রচ-ভাবে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন। সমাজ জীবনে কখনো মিথ্যা কথা বলতে জানে না তারা, বলে না, বলানোও যায় না। ঢাকায় নিত্যদিন হাজার হাজার ভিক্ষুক দেখা যায়; অথচ একজন সাঁওতালকে পাওয়া যায় না সে কাতারে। যত অভাবই হোক সাঁওতালরা ভিক্ষা করে না। কারও কাছে ভিক্ষা চায় না; হাত পাতে না। ১৮৫৫ সালে সাঁওতাল বিদ্রোহের মূল দাবি ছিলÑ ভূমির চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কারণে সাঁওতালরা বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে যে জমি ফসল উৎপাদনের উপযোগী করে তোলে, সে জমি সমতল ভূমিতে বসবাসকারী জমিদার-জোতদার-তালুকদাররা জোরপূর্বক দখল; ব্রিটিশদের মুদ্রা ব্যবস্থা প্রচলনের সুযোগে ব্যাপারী-মহাজনরা নিরক্ষর-অজ্ঞ ও সহজ-সরল সাঁওতালদের ছল-চাতুরির মাধ্যমে প্রতারিত; সুদখোর মহাজনদের অতি লোভ ও লুণ্ঠনের প্রবৃত্তির ফলে জোরজবর দখল করে সাঁওতালদের সম্পদ ও উৎপাদিত আত্মসাৎ; ঋণগ্রস্ত সাঁওতালদের ব্যক্তিগত বংশগত ক্রীতদাসত্ব ও আজীবন পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা; পুলিশের সীমাহীন অত্যাচার, দুর্নীতি, উৎপীড়ন এবং জমিদার-জোতদার-ব্যাপারী-মহাজনদের দুষ্কর্ম ও অত্যাচারে সহাযতা দান ও সরকারি বিচার-ব্যবস্থা কিংবা আদালতে সুবিধা না পাওয়া; এগুলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। সাঁওতাল বিদ্রোহে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিকামী মানুষের মনে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে কাজ করে। এই সাঁওতালদের কৃষ্টি, সংস্কৃতির বিকাশ সাধন সরকার এবং দেশের প্রতিটি মানুষের জাতীয় দায়িত্ব, নৈতিক কর্তব্য। অথচ সাঁওতালদের ক্ষুদ্র জাতিসত্তাকে শ্রদ্ধা না করে তাদের উদ্বাস্তু করার অপচেষ্টা চলছে।
গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জ চিনিকলের জন্য অনেক জায়গাজুড়ে জমি অধিগ্রহণ হয় পাকিস্তান আমলে। আওয়ামী লীগ অনুগত বুদ্ধিজীবী-অর্থনীতিবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারকাত চিনিকলের ভূমির দলিল, পুরনো কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বলেছেন, ‘জমি সাঁওতালদেরই। ১৯৬২ সালের ৭ জুলাই একটি চুক্তির মাধ্যমে ৪ মৌজার ১৮৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। চুক্তিপত্রের পঞ্চম ধারায় বলা আছে, চিনিকল ও আখ চাষের জন্য এই জমি নেওয়া হলো। কখনো যদি এই জমিতে আখ চাষ ছাড়া অন্য কিছু হয় তাহলে এটা মূল মালিকদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।’ ২০০৪ সালে চিনিকল লে-অফ ঘোষণা করা হয়। জমি এখন অবশ্যই সাঁওতালদের ফেরত দিতে হবে। সরকার চরম মানবাধিকার লংঘন করেছে।’ সাঁওতালদের ওপর এ আক্রমণ যে ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসন জড়িত তা সরেজমিন তদন্তের পর আওয়ামী লীগ সমর্থিত বুদ্ধিজীবীদের কথাতেই স্পষ্ট।
গোবিন্দগঞ্জে মহিমাগঞ্জ চিনিকলের অধিগ্রহণকৃত জমি উদ্ধারের দাবিতে আন্দোলনরত সাঁওতালদের ওপর যেভাবে হামলা হয়; তার ভিডিও থেকে স্পষ্ট, সাঁওতালদের আমরা মানুষ ভাবিনি; বাংলাদেশের নাগরিক ভাবিনি। তাঁদের ভেবেছি শুধুই আদিবাসী-বহিরাগত-দখলদার উদ্বাস্তু। তা না হলে মানুষের ওপর এমন নিষ্ঠুরতা হয়? সাঁওতালরাও মানুষ। অথচ পুলিশি গ্রেফতারের ভয়ে অনেক সাঁওতাল চিকিৎসা নেননি। পাহারে যার নেতৃত্বে দুই যুগ ধরে সন্ত্রাস চললো, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হলো সেই সন্তুু লারমা এখন রাষ্ট্রীয় সুবিধা ভোগ করছেন। অথচ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখা, মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা সমতল ভূমির সাঁওতালদের ওপর কেন এই বর্বরতা?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।