Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আ’লীগ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে-মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:০৭ পিএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়ার দেয়া ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য’ নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে তাদের এ  প্রতিক্রিয়া আগে থেকেই ঠিক করা ছিলো বলেও অভিযোগ মির্জা ফখরুলের।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর কচিকাঁচা মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ‘জিয়া আমার চেতনা’ শীর্ষক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘জিয়া নাগরিক ফোরাম’ (জিনাফ)।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও শক্তিশালীকরণের প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির ২০ প্রস্তাবনা ও সুপারিশ তুলে ধরেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রস্তাবনাকে অন্তঃসারশূন্য আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, সংবিধান অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমেই নতুন ইসি গঠন হবে।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও শক্তিশালীকরণে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া প্রস্তাব ও সুপারিশের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে হবে।  
আওয়ামী লীগের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের নীল-নকশা বাস্তবায়ন করতেই এ প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবনা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিক্রিয়ায় তা প্রত্যাখ্যান করেছে। মনে হচ্ছে এটা তাদের আগেই তৈরি করা ছিল। যেমন বাজেট হলে কেউ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন। অথচ সেই প্রস্তাবনায় আমাদের চেয়ারপার্সন দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা এবং রক্ষার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের চরিত্র সম্পর্কে দেশবাসীর ভালো জানা আছে। তারা জানে যে আওয়ামী লীগ অতীতে কী করেছিল। তাদের কর্মকা- কী। এ জন্যই তারা সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা আমাদের সম্ভাবনাগুলো এবং গণতান্ত্রিক স্বপ্নগুলোকে নষ্ট করে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় আন্দোলনে নামা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
দেশে কোনো আইনের শাসন নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। এমন অবস্থায় বিদেশি বিনিয়োগ হতে পারে না। দলীয় স্বার্থেই আওয়ামী লীগ এ অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করছে।
তিনি বলেন, আজ জঙ্গিবাদের নামে লোক ধরা হচ্ছে। কিছুদিন পর তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে। কোনো তদন্ত হচ্ছে না। বিনা বিচারে তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে। তাহলে জঙ্গিবাদের উৎস চিহ্নিত হবে কি করে? এজন্যই আমরা জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তা হয়নি।
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনী রূপরেখাই চূড়ান্ত নয়। এটি একটা প্রস্তাবনা মাত্র। আপনারা আসুন আলোচনা করে যদি কিছু পরিবর্তন করার থাকে তাহলে তা করবেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি প্রমাণ করে দেবে দেশে বিএনপিই একমাত্র গণতান্ত্রিক দল।
খালেদা জিয়ার প্রস্তাবে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়ার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা হারানোর ভয় এতই যে বেগম জিয়া প্রস্তাবনা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
জাসদ সম্পর্কে তিনি বলেন, জাসদ হচ্ছে সুবিধাভোগী দল। নিজের স্বার্থের জন্য সব করতে পারে। এখন যেমন সংসদে আছে।
জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, জিয়া নাগরিক ফোরামের কে জামান, মুসা ফরাজী, বাস্তুহারা দলের শরীফ হাফিজুর রহমান টিটু বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ