Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাচার হওয়া টাকা দেশে আনা যাবে- সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী

ক্রয় কমিটিতে ৭টি প্রস্তাব অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০২২, ১২:৩১ এএম

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে ৭টি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ১৭৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভা শেষে অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জিল্লুর রহমান যৌথভাবে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য (টেবিলে ১টি প্রস্তাবসহ) ২টি এবং ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ৭টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ক্রয় কমিটির সাতটি প্রস্তাবই অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্রয় কমিটির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ২টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ১টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ১টি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১টি, স্থানীয় সরকার বিভাগের ১টি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রস্তাবনা ছিল।

অর্থমন্ত্রী বলেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ ট্যাক্স নিয়ে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগ মিলছে। এটি বাজেটে এটা থাকবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক যেটি করছে, সেটি বাজেটের আগেই করছে। যারা টাকা পাচার করেছে, তারা ট্যাক্স দিয়ে রেকর্ডে নাম লেখাতে চাইবেন কি না? এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশে তো এ সুযোগ অনেকে নিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়া যখন এমন একটি অ্যামনেস্টি ঘোষণা করলো, তখন অনেক টাকা বিদেশ থেকে দেশে ফেরত আসছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এখান থেকে যারা টাকা নিয়ে গেছেন, এ সুযোগটি তাদের জন্য অত্যন্ত ভালো একটি সুযোগ, সেটি তারা কাজে লাগাবেন। সব দিক থেকে আমাদের চেষ্টা করতে হবে।

বিদেশ থেকে পাঁচ হাজারের বেশি ডলার পাঠানোর ক্ষেত্রেও কোনো ডকুমেন্টস লাগবে না, এতে বিদেশ থেকে কালোটাকা আসবে কি না এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা চাইছি, বিভিন্ন সময়ে যেসব কালোটাকা বিদেশে থেকে গেছে, বিভিন্ন সোর্স থেকে সেটি জানতে পারি। অনেক সময় বলা হয়, বিদেশে যারা টাকা নিয়ে গেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? বিদেশে যে টাকা চলে গেছে, আমরা বলেছি যাতে টাকাগুলো দেশে ফেরত আসে।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, যেসব টাকা বিভিন্ন চ্যানেলে চলে গেছে, সেগুলো ফেরত আনার জন্য এ উদ্যোগ। এ ধরনের অ্যামনেস্টি (সাধারণ ক্ষমা) বিভিন্ন দেশ দিয়ে থাকে। তবে কত টাকা গেছে, সেটির ধারণা দিতে পারবো না। ডলার সঙ্কটের জন্য এ সিদ্ধান্ত কি না- প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই ডলার ক্রাইসিসের জন্য। ডলার আমাদের দরকার। তবে যে ক্রাইসিস বুঝিয়েছে সেটি নেই, আমাদের ফরেন রিজার্ভ ভালো। এখনো ফরেন রিজার্ভে আশেপাশের দেশের তুলনায় আমরা অনেক স্বাভাবিক অবস্থায় আছি।

গত দু’তিনবারের বাজেটে ধনি শ্রেণির জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে, নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য তেমন কিছু রাখা হয়নি-এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বাজেটে নিচু, মাঝারি, উচ্চ সব শ্রেণির মানুষকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। যখন কোনো সিদ্ধান্ত আসে তখন অনেকেই সুবিধাভোগী হন। এখন যদি বড় কাউকে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে মূল লক্ষ্য থাকে যে এখানে কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে কি না। সামাজিক ক্ষেত্রে কোনো সুবিধা থাকে কি না সেটি দেখা হয়। সুযোগ দিলে যদি কোনো ভালো কিছু হয় উপকারভোগী হবেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। এদেরই আমরা প্রাধান্য দিয়েছি।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে বাজেট হচ্ছে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপস অ্যান্ড ডাউন সারাবিশ্বেই হচ্ছে। ধনি-দরিদ্র কোনো দেশ এর বাইরে নেই। আমাদের মূলকাজ হবে স্ট্যাবিলাইজেশন। আমরা বিভিন্ন পলিসির মাধ্যমে এটি একটি জায়গায় নিয়ে আসতে চাই। আমাদের গ্রোথ দরকার। আমেরিকায় ৪০ বছরে যেটা হয়নি সে পরিমাণ ইনফ্লেশন হয়েছে। প্রত্যেক দেশে একই রকম অবস্থা।

গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ালে সেটি আত্মঘাতী হবে, ব্যবসায়ীদের এমন প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরাও সেটি বুঝি। দাম বাড়ালে তো অবশ্যই কোনো না কোনোভাবে কারও না কারও ওপরে গিয়ে সেটির ইম্প্যাক্ট পড়ে। আমরা চাই ইম্প্যাক্ট যেন কম পড়ে। সব জিনিস যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে সেই ব্যবস্থা করবো। সেজন্য সরকার নিজেই কনজ্যুমারের সঙ্গে এটি শেয়ার করে নিচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ