পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের বড় অংশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সম্ভাবনা সাপেক্ষে আসন্ন বাজেট কিছুটা সঙ্কোচনমুখী হবে- এটাই স্বাভাবিক। তবে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনো কাটছাট করা একেবারেই সমীচীন হবে না। বরং এ খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়ে এর বৃহত্তম অংশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ করা এখন সময়ের দাবি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ, ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে ‘স্বাস্থ্য বাজেট বিষয়ক অনলাইন জাতীয় সংলাপ’ অনুষ্ঠানে আলোচকরা এসব মতামত ব্যক্ত করেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টসের ষষ্ঠ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৮ শতাংশ আসছে নাগরিকদের পকেট থেকে, আর সরকারের কাছ থেকে আসছে ২৩ শতাংশ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বাবদ ব্যয় বাড়ানো গেলে নাগরিকদের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা।
মূল নিবন্ধ উপস্থাপনের সময় ড. আতিউর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাতে গতানুগতিকভাবে মোট বাজেটের ৫-৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সচরাচর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় মোট স্বাস্থ্য বরাদ্দের ২৫ শতাংশের মতো বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই অনুপাত আসন্ন অর্থবছরে ৩০ শতাংশ এবং মধ্যমেয়াদে ৩৫-৪০ শতাংশ করার পক্ষে মত দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহের জন্য যে বরাদ্দ আছে তা তিন গুন করা গেলে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ে নাগরিকদের নিজস্ব খরচ ৬৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫৮ শতাংশের নিচে নেওয়া সম্ভব।
ড. মুশতাক রাজা চৌধুরী বলেন, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা বিশেষত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সর্বজনের জন্য সহজলভ্য করতে একটি জাতীয় কমিশন গঠন করার কথা ভাবা যায়। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী তাদের আয়ের ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা বাবদ ব্যয় করতে বাধ্য হয় উল্লেখ করে ড. জুলফিকার আলি এ জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনায় রেখে স্বাস্থ্য বিমা কর্মসূচি চালু করার উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও অল্প সময়ের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের জন্য করোনা টিকা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সব স্তরের মানুষের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের সদিচ্ছা প্রতিফলিত হয়েছে। এ দক্ষতা পুরো স্বাস্থ্য খাতের অন্যান্য কার্যক্রমে বজায় রাখা সম্ভব হলে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
একইসঙ্গে ডা. রুহুল হক ও ডা. হাবিবে মিল্লাত এমপি তাদের বক্তব্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়াতে এ খাতের বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য মো. আব্দুল আজিজ এমপি দেশে ৪৯৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাহিদা মতো স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ধাপে ধাপে এগুলোর আধুনিকায়নের পরামর্শ দেন।
ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত তার আলোচনায় দেশের বাজারে যে ওষুধ পাওয়া যায় তার গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ প্রশাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় বাজেটে সার্বজনীন স্বাস্থ্য বিমার জন্য বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানান।
অনলাইন আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি অংশীজনদের পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
অনলাইন আলোচনায় সংসদ সদস্যদের মধ্যে অংশ নেন ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল এমপি, ডা. হাবিবে মিল্লাত এমপি, ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি, ডা. আ. ফ. ম. রুহুল হক এমপি, ডা. মো. আব্দুল আজিজ এমপি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের কনভেনর ড. মুশতাক রাজা চৌধুরী, বিআইডিএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এস. এম. জুলফিকার আলি, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ। অনুষ্ঠানে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। আলোচনা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের থিমেটিক গ্রুপের সভাপতি ড. রুমানা হক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।