Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহে ইউনিসেফ শুভেচ্ছা দূত লিয়াম নিসন টিকায় অধিকতর বিনিয়োগের আহ্বান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০২২, ৮:১৭ পিএম

গত দুই দশক ধরে শিশুদের টিকাদানে সহায়তা করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকা সকল বিজ্ঞানী, বাবা-মা, স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে একটি বৈশ্বিক বার্তার মাধ্যমে ইউনিসেফের পৃথিবীব্যাপী টিকাদান উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির শুভেচ্ছা দূত লিয়াম নিসন। বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহের প্রাক্কালে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নিসন পোলিও প্রতিরোধে প্রথম টিকা তৈরি করা জোনাস সাল্কের মতো বিজ্ঞানী এবং কারখানায় টিকার শিশি ভর্তি বা ভ্যাকসিন ইনজেকশন সরবরাহে নিয়োজিত নিবেদিত কর্মীদের প্রচেষ্টাগুলো কীভাবে প্রতিবছর ২০ থেকে ৩০ লাখ শিশুর জীবন বাঁচানোর প্রচেষ্টাকে সম্ভব করে তুলছে সে সম্পর্কে কথা বলেন।

ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত লিয়াম নিসন বলেন, ভ্যাকসিন হচ্ছে মানব সাফল্যের একটি অসাধারণ গল্প। গত ৭৫ বছরে কোটি কোটি শিশুকে টিকা দেয়া হয়েছে, যার কৃতিত্ব বিজ্ঞানী, স্বাস্থ্যকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকদের। আপনি যদি কখনও টিকা নিয়ে থাকেন বা আপনার শিশুদের টিকা দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি হাতে হাত রেখে গড়ে তোলা সেই বন্ধনের অংশ, যা মানবতাকে সুরক্ষিত রাখে। আমরা গুটিবসন্তে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করছি। এক সময়ে ভয়ঙ্কর রোগ হিসেবে পরিগণিত পোলিওকে এখন বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই আর হুমকি হিসেবে দেখা হয়না। টিকা যে আমাদের প্রত্যেকের জন্য কতটা ভালো কাজ করেছে, এ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক আলোচনায় সেই দৃষ্টিভঙ্গি ইদানীং দেখা যায় না। কিন্তু আমাদের এটা উদযাপন করতে হবে। এটি সম্ভবত মানব ইতিহাসের বৃহত্তম সম্মিলিত অর্জনগুলোর একটি।

ইউনিসেফের একটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টকে ‘মেনশন’ করে এবং এখন থেকে আগামী ১০ মে পর্যন্ত হ্যাশট্যাগ #ষড়হমষরভবভড়ৎধষষ ব্যবহার করে প্রতিটি পোস্টে লাইক, শেয়ার বা মন্তব্য করলে সব শিশু যাতে তাদের প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী টিকা পায় তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ ফাউন্ডেশনের ঝযড়ঃ@খরভব প্রচারাভিযান ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ইউনিসেফের অ্যাকাউন্টে ১ ডলার করে সর্বোচ্চ ১ কোটি ডলার পর্যন্ত জমা হবে।

 

সাফল্য সত্ত্বেও ২০২০ সালে ২ কোটি ৩০ লাখ শিশু টিকা থেকে বাদ পড়ে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই সংখ্যা শুধু টিকাদান পরিষেবাগুলোর প্রতি প্রতিশ্রুতি এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কমানো যেতে পারে। ইউনিসেফ ১০০টিরও বেশি দেশে শিশুদের জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় টিকা সরবরাহকারী সংস্থা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স ‘গাভি’ ও অংশীদারদের সঙ্গে মিলে পাঁচ বছরের কম বয়সী বিশ্বের ৪৫ শতাংশ শিশুর কাছে টিকা পৌঁছে দেয়। জাতীয় স্বাস্থ্য ও টিকাদান কর্মসূচিকে জোরদার করতে ইউনিসেফ ১৩০টিরও বেশি দেশের সরকারের সঙ্গে কাজ করছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এ বিষয়ে বলেন, গেলো দুটি বছর আমাদের শিখিয়েছে, যে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় কিছু শিশু ঝুঁকিতে থাকে, সেই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় সব শিশুই ঝুঁকিতে থাকে। বিশ্বের জন্য এই মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা ও ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যজনিত জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হওয়ার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং প্রতিটি শিশুর জন্য টিকাদান ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার পেছনে বিনিয়োগ করা।

প্রতি বছর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে উদযাপিত হওয়া ‘বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ’-এর নেতৃত্বে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং এটি সব বয়সের মানুষকে রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য টিকা ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরতে বৈশ্বিক অংশীদারদের একত্রিত করে। এই বছরের প্রতিপাদ্য হলো #খড়হমখরভবঋড়ৎঅষষ, যেখানে ‘দীর্ঘ জীবন’ জীবদ্দশায় টিকা দেওয়ার গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।

বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের গ্লোবাল পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রেসিডেন্ট গার্গী ঘোষ বলেছেন, আমরা কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ব্যাহত হওয়া টিকাদান পরিষেবাগুলো পুনরায় চালু এবং টিকায় প্রতিরোধযোগ্য সব রোগের বিরুদ্ধে অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে সময়ের সঙ্গে লড়ছি। এ কারণেই দীর্ঘ সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় টিকা যাতে শিশুরা পায়, বিশেষ করে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর শিশুরা যাতে পায় তা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।

জাতিসংঘ ফাউন্ডেশন ঝযড়ঃ@খরভব-এর নির্বাহী পরিচালক মার্থা রেবার বলেন, বিশ্বের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রায় অর্ধেকই জীবন রক্ষাকারী টিকা দিয়ে যাতে 'ভালোবাসায় সুরক্ষিত থাকে' তা নিশ্চিত করছে ইউনিসেফ। বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহে তাদের কাজকে সমর্থন ও প্রচার করতে পেরে আমরা সম্মানিত। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক টিকাদান কর্মসূচিতে আমাদের কার্যক্রমে অন্যরাও যোগ দেবে বলে আমরা আশা রাখি ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ