Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ব্যবস্থাপনার ওপর প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

আগামী মাস থেকে ২৩ লাখ কলেরা ভ্যাকসিন দেয়া হবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৫ এএম

সরকার পানির ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উপকূলীয় এলাকায় ক্রমবর্ধমান লবণাক্ততা অনুপ্রবেশ ও দেশের কিছু অংশে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যেতে দেখা যাচ্ছে। সরকার বৃষ্টির পানি সংগ্রহসহ প্রাকৃতিক সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছে। পানি সম্পর্কিত অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ।

গতকাল শনিবার জাপানের কুমামোটো শহরে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য পানি-সর্বোত্তম ব্যবহার এবং পরবর্তী প্রজন্ম’ প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী পানি সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা লবণাক্ততা ও পানি-প্রতিরোধী এবং খরা-সহনশীল ফসলের উন্নয়নে কাজ করছে এবং ইতোমধ্যে বেশকিছু জাত উদ্ভাবন করেছে। আমরা আমাদের জলাভূমি রক্ষা করার জন্য একটি প্রতিবেশ ভিত্তিক পদ্ধতি গ্রহণ করছি। আমরা আমাদের নদীগুলোকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে স্বীকৃতি দেই। চলমান কোভিড-১৯ মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠন উদ্যোগ ‘বিল্ড ব্যাক বেটারের’ জন্য একটি উন্নত পানি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় অববাহিকাভিত্তিক পদ্ধতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করার জন্য আমাদের অবশ্যই ভালো অনুশীলন, জ্ঞান এবং প্রযুক্তির সমন্বিত শক্তির বিনিময় ঘটাতে হবে এবং আন্তসীমান্ত নদী ব্যবস্থাপনায় অববাহিকাভিত্তিক পদ্ধতি গ্রহণ করা প্রয়োজন। শেখ হাসিনা জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহসহ আঞ্চলিক ও উপ আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

পানিকে জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বলে বর্ণনা করে তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন এবং শান্তির সংস্কৃতির প্রচারের জন্য এটি মৌলিক।’ চলমান কোভিড-১৯ মহামারি থেকে ‘ভালোভাবে পুনরুদ্ধারের’ জন্য আমাদের সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। এসডিজিতে পানি সম্পর্কিত বিষয়সহ পানির ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারগুলো পূরণ করার জন্য তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ঋণী। তিনি বলেন, আমাদের যুবকদের অবশ্যই ক্ষমতায়িত করতে হবে যাতে তারা দক্ষ ও টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক পানি ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্ব দিতে পারে।

২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি পানি সংক্রান্ত জাতিসংঘ উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলের সদস্য ছিলেন। তখন ‘কল টু অ্যাকশন’ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। আগামী বছরে ওয়াটার অ্যাকশন দশকের মধ্যমেয়াদি পর্যালোচনা আমাদের অ্যাকশন এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে। কুমামোটো ঘোষণা সেই প্রক্রিয়ায় একটি কার্যকর অবদান রাখবে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, তার সরকার পানি ব্যবস্থাপনার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমগ্র সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে। দেশের ৮৫ শতাংশর বেশি মানুষের নিরাপদ পানীয় জল এবং উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের অবসান ঘটিয়েছি। পানিবাহিত রোগের বিরুদ্ধে আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা চলছে। আগামী মাস থেকে আমরা রাজধানীতে ২৩ লাখ কলেরা ভ্যাকসিন দেব। পানি সংক্রান্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বন্যার নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, উপকূলীয় হোল্ডার, সবুজ বেষ্টনী, ভাসমান কৃষি, নদী খনন এবং শহরের ঝড়ের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়িয়েছে। আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা এবং কমিউনিটিভিত্তিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে। বাংলাদেশে প্লাবন ভূমি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য হচ্ছে বিভিন্ন মৌসুমে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি স্থিতিস্থাপক এবং সমৃদ্ধ ব-দ্বীপ গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি ক্রস-সেক্টরাল বাংলাদেশ ডেলটা প্ল্যান ২১০০ তৈরি করেছি। আমাদের সরকার এই পরিকল্পনার অধীনে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংস্থান সংগ্রহের জন্য আগামী মাসে একটি আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সম্মেলনের আয়োজন করছে। আমরা আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমি পুনরুদ্ধার ও উঁচু করার জন্য বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত পলির স্তূপ ব্যবহার করার জন্য উন্মুখ। বাংলাদেশও ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রস্তুত রয়েছে।



 

Show all comments
  • Dr. Miah Muhammad Adel ২৪ এপ্রিল, ২০২২, ৭:৩০ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, দেশের পানির সমস্যা আপনিই সমাধান করতে পারেন। আপনি কার জন্য ঐ কথাগুলো বলেছেন? পানির চাবিকাঠি তো আপনার হাতে। অনেক গবেষণা করেছি বিদেশে বসেও। অনেক আর্টিকল লিখেছি, অনেক মিটিং-এ উপস্থাপনা করেছি, অনেক বইও লিখেছি। জিয়াউর রহমানের ঠেলায় প্রতিবেশী পানি দিতে বাধ্য হয়েছিল। উনি তো বাঁকা আংগুলে ঘি উঠাছ্ছিলেন। আপনারা তো সোজা আংগুল ব্যবহার করে থাকেন যাতে ঘি উঠে না। নিজে স্বয়ং ক্ষমতাধর হয়েও দেশের স্বার্থে তা ব্যবহার করছেন না। আপনি বিশ্বাস করবনে না যে পানি বিনা দেশের ক্ষয়ক্ষতি গগনচুম্বি। .....
    Total Reply(0) Reply
  • জাবেদ ২৪ এপ্রিল, ২০২২, ৫:৩৪ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Dr. Miah Muhammad Adel ২৪ এপ্রিল, ২০২২, ৭:৩০ এএম says : 0
    In other words, you'll reject it.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ