পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
টানা দুই বছর ছিল করোনাভাইরাসের প্রকোপ। এ সময়ে কোনরকমে টিকে ছিলেন রাজধানীর মিরপুর বেনারসি পল্লীর ব্যবসায়ীরা। মেট্রোরেল নির্মাণের কারণে মিরপুর-আগারগাঁও সড়কের অবস্থা ছিল শোচনীয়। তবে এখন অনেকটাই বদলে গেছে দৃশ্যপট। মিরপুর ১০ পর্যন্ত মেট্রোরেলের অবস্থা অনেকটাই স্বাভাবিক। তাই মানুষের চলাচল বেড়েছে, বেড়েছে ক্রেতা। রোজার ঈদকে সামনে রেখে প্রাণ ফিরেছে মিরপুরের বেনারসি পল্লীতে। নানান রং এবং নক্সার শাড়ি উঠানো হয়েছে বেনারসি পল্লীর প্রতিটি শোরুমে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিপণিবিতানগুলো বাহারি সাজে সাজানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর এবারের রমজানে হাসি ফুটেছে বিক্রেতাদের মুখে। সামনের দিনগুলোতে ক্রেতার ভিড় ও বেচাকেনা আরও বাড়বে বলে আশা করেন তারা।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে পল্লীর বেচাকেনা। অধিকাংশ ক্রেতাই আসছেন মিরপুর-১ ও কচুক্ষেত-ইব্রাহিমপুর সড়ক দিয়ে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মেট্টোরেলের বেনারসি পল্লীর অংশের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নিচের সড়ক অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসছেন।
বেনারসি পল্লীর কয়েকজন বিক্রেতা জানান, ক্রেতাদের সাধ ও সাধ্যের দিক বিবেচনায় রেখে এবার নিয়ে এসেছেন দেশীয় ঐতিহ্যের নানা বাহারের শাড়ি। এসব শাড়িতে কারিগরদের সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় ফুটে উঠেছে দেশের ঐতিহ্য। এর মধ্যে রয়েছে-কাতান, গাদোয়াল, ইক্কত, তসর, মটকা, মেঘদূতসহ নানান রকমের শাড়ি। মূল্যভেদে এগুলোর দাম ২০০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাদের মতে, এ বছর ক্রেতাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে কাতানের পাশাপাশি গাদোয়াল, ইক্কত, তসর, মটকা, মেঘদূত শাড়ি।
বেনারসি পল্লীর নামকরা শোরুমের মধ্যে রয়েছে-মনেরেখ, শাহিনা ফ্যাশন, তানহা, আলহামদ, লীলাবালি, সিল্ক সম্বার, মিরপুর বেনারসি কুটির, বেনারসি মিউজিয়াম, বিয়ের বাজার, পাবনা এম্পোরিয়াম, ব্রাইডাল, মাহমুদা শাড়ি, টপটেন, গোল্ডেন বেনারসি ইত্যাদি। মিরপুর বেনারসি কুটিরের বিক্রয়কর্মী জানান, ক্রেতা আসছেন, বিক্রিও হচ্ছে আগের তুলনায় ভাল। বলা যায়, বহুদিন পর প্রাণ ফিরেছে বেনারসি পল্লীর। গোল্ডেন বেনারসির বিক্রয়কর্মী জানান, খুচরা ক্রেতার সঙ্গে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও আসছেন। সড়কের অবস্থা এখনও পুরোপুরি ঠিক হয়নি। তাই সব ক্রেতা চাইলেও আসতে পারছেন না। গুলশান থেকে শাড়ি কিনতে আসা নাসরিন সিরাজ জানান, আমি বিভিন্ন উৎসবে বেনারসি পল্লী থেকে শাড়ি কিনে থাকি। গত দুই বছর করোনা মহামারী এবং সড়ক ভাল না থাকায় আসতে পারিনি। এবার পছন্দের অনেক শাড়ি দেখে তিনটি কিনেছি।
বিক্রেতারা জানান, বেনারসি পল্লীতে ২৫-৩০ ধরনের বিভিন্ন নাম ও ডিজাইনের শাড়ি রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে থ্রি-পিস, প্রিন্টের শাড়ি, টাঙ্গাইলের শাড়ি, লেহেঙ্গা, সিল্ক আর সুতি শাড়ি, শেরওয়ানি, পাঞ্জাবি, পায়জামা, লুঙ্গি, গামছা, ছোটদের ড্রেসসহ রকমারি পোশাকের সমাহার। তাই প্রতিবছর ঈদ উৎসবের কেনাকাটায় একশ্রেণীর ক্রেতার আগ্রহের শীর্ষে থাকে মিরপুর বেনারসি পল্লী। ফলে রমজানের শুরু থেকেই সরগরম হয়ে ওঠে এ পল্লী। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানালেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরও ভারতীয় শাড়ির কদর বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা দেশী বেনারসি শাড়ির জন্য মিরপুরের এ পল্লীতে এলেও হরেক রকমের ডিজাইন ও মনকাড়া রঙের কারণে শেষমেশ ভারতীয় শাড়িই কিনছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।