Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুদকের মামলায় ডিআইজি মিজানের জামিন বহাল

সাজা কেন বাড়ানো হবে না-হাইকোর্টের রুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের মামলায় পুলিশের বরখাস্তকৃত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার কোর্ট। দুদকের লিভ টু আপিলের বিষয়ে কোনো আদেশ না দিয়ে (নো-অর্ডার) হাইকোর্টের আদেশই বহাল রাখলেন। গতকাল সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার জাস্টিস এম.ইনায়েতুর রহিমের আদালত এ আদেশ দেন।
দুদকের লিভ টু আপিলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। মিজানুর রহমানের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।
এর আগে এ মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মিজানুর রহমানের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে দুদক। গত ১৩ এপ্রিল ঘুষ লেনদেনের মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে ২ মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিকে ডিআইজি মিজানের সাজা কেন বাড়ানো হবে না-এই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা আপিল শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম এবং বিচারপতি কাজী মো: ইজারুল হক আকন্দের ডিভিশন বেঞ্চ এই রুল দেন। রুলের বিষয়ে দুদকের অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান বলেন, তথ্য পাচার ও ঘুষ লেনদেনের মামলায় সাবেক ডিআইজি মিজানের সাজা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ এর (২) ধারায় ৩ থেকে বাড়িয়ে ৭ বছর কেন করা হবে না-এই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালত মিজানুর রহমানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। কিন্তু অর্থ পাচারের অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। পরে গত ৭ এপ্রিল অর্থপাচার আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ থেকে দেয়া খালাসের বিরুদ্ধে আমরা (দুদক) আপিল করেছি। শুনানি শেষে এ রুল জারি করা হয়।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে আট বছর ও পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া বাছিরকে ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
গত ৬ এপ্রিল ঘুষ লেনদেনের মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানের খালাস চেয়ে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। গত ৪ এপ্রিল নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন মিজানুর রহমান। আপিলে তিনি ৩ বছরের সাজা থেকে খালাস চেয়েছেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘুষ নেয়ার অভিযোগে দুদকের সে সময়কার পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৮ বছর ও পুলিশের বরখাস্তকৃত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন। এর মধ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ও বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫(এ) ধারায় ৩ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। অন্যদিকে মানি লন্ডারিং আইনের ৪ ধারায় এনামুল বাছিরকে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। হাইকোর্টে আপিলের প্রেক্ষিতে পরে আদালত তার অর্থদণ্ড স্থগিত করেন।
৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক শেখ মো: ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে অব্যাহতি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।
এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার তখনকার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন। ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই ডিআইজি মিজান ও পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিওে বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ২২ জুলাই গ্রেফতার করা হয় এনামুল বাছিরকে। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ