Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শক্তিশালী বিরোধী দল পাচ্ছি না : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৩ এএম

দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল না পাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শক্তিশালী বিরোধী দল আমরা পাচ্ছি না। অপজিশন বলতে দুটি পার্টি আছে। দুটিই মিলিটারি ডিকটেটরদের হাতে গড়া। জনগণের কাছে তাদের অবস্থান নেই।

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অপজিশন বলতে যারা আছে, তার মধ্যে দুটি পার্টিই এখন যারা (বিএনপি ও জাতীয় পার্টি), দুটিই হচ্ছে মিলিটারি ডিকটেটর- একেবারে সংবিধান লঙ্ঘন করে, আর্মি রুলস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তাদের হাতে গড়া। কাজেই ঠিক ওই মাটি ও মানুষের সঙ্গে যে সম্পর্ক সেই সম্পর্কটা তাদের মধ্যে নেই। তাদের কাছে ক্ষমতাটা ছিল একটা ভোগের জায়গা। সেই ক্ষেত্রে আসলে অপজিশন তাহলে কোথায়? এখানে একটা পলিটিক্যাল সমস্যা কিন্তু আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই আমরা আমাদের শক্তিশালী বিরোধী দল আমরা পাচ্ছি না। তাদের অবস্থানটা মানুষের কাছে নেই। কারণ তারা তো এসেছেই একটা ভাসমান অবস্থায়। কাজেই তাদের ওই শিকড় তারা গড়তে পারেনি। সেই ক্ষেত্রে আমাদের ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড থেকে যখন শোনায় যে এখানে ডেমোক্রেসি, পার্টিসিপেটরি ডেমোক্রেসি, ইলেকশন, হেনতেন; কিন্তু আসলে এখানে করবেটা কী। সেটাও তারা চিন্তা করে না।

শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলতে গেলে অনেক দল দরকার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, উন্নত বিশ্বে দেখলে আপনারা দেখবেন সেখানে কিন্তু মাত্র দুই দল হয়ে গেছে এখন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুই দলের বেশি শক্তিশালী দল নেই। আবার নির্বাচনে আমি তো জানি আমেরিকার প্রায় ২৫ শতাংশ সংগঠন ইলেকশনই করে না। ইলেকশন করার বিষয়ে একটা অনিহা চলে আসে মানুষের। এটাও কিন্তু অনেক দেশে দেখা যাচ্ছে। আমাদের দেশটা ধীরে ধীরে ওরকম হয়ে যাচ্ছে।

বিগত বিএনপি-জামায়াত আমলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেছনে থেকে তাদের উৎসাহ দিয়ে একবার ক্ষমতায় আনতে পারে, যেটা ২০০১ সালে এনেছিল। কিন্তু তার পরিণতি কী ছিল? বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, বাংলা ভাই সৃষ্টি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, ৫০০ জায়গায় একদিনে বোমা হামলা, আমি অপজিশনে আমাদের ওপর গ্রেনেড হামলা, অপজিশনের অনেক নেতাকর্মীদের ওপর হামলা। তিনি বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ওপর গ্রেনেড হামলা, কামরান মারা গেছে তার ওপর দুইবার গ্রেনেড হামলা হলো, হেলালের মিটিংয়ের ওপর হামলা, সেখানে নয়জন মারা গেল। এ রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সেই সময় সারা দেশজুড়ে। যার জন্য ইমার্জেন্সি, তারপরে, এটা হলো বাস্তবতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনাটা যদি মানুষকে ঘিরে হয়, মানুষের কল্যাণমুখী হয়, সেই রাজনীতি কিন্তু টিকে থাকে, সেটাই চলে। আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের দল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ একটা দল, যে দলটা সেই ১৯৪৯ সালে তৈরি। বিরোধী দল থেকে একেবারে সাধারণ মানুষকে নিয়ে এ দলটা গড়ে তোলা। এ সংগঠনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে এদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারে আসলে এদেশের মানুষের আর্ত-সামাজিক উন্নতি হয়। কেন হয়? এজন্য হয়, আমরা তো মাটি ও মানুষের মধ্য থেকে উঠে এসে মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই এ সংগঠনটা তৈরি। কাজেই আমাদের চিন্তা চেতনাটা ওখানেই থাকে।

প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে এ মতবিনিময় সভা। এতে অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, রাষ্ট্রদূত-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমম্বয়ক জুয়েনা আজিজ ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিগত তিন বছরের কাজের ওপর একটি উপস্থাপনা উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকার জন্য যতটুকু সম্ভব খাদ্য উৎপাদনে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশবাসীর প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। কোভিড -১৯ মহামারীর দুটি ঢেউয়ের পরে, এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব আরেকটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। তাই, আমাদের নিজেদের ব্যবস্থা তৈরি রাখতে হবে এবং সেজন্য এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখা উচিত নয় বরং আমরা যে যা করতে পারি তা উৎপাদন করতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকের উচিত তার জমি থেকে কিছু না কিছু উৎপাদন করা যা শুধু তাদের চাহিদাই মেটাবে না, দেশকে খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভর হতেও সাহায্য করবে। বিশ্ব সংকটের কারণে দেশ যাতে কোনো সংকটের সম্মুখীন না হয় সেজন্য আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখা যাবে না।



 

Show all comments
  • পলাশ ১২ এপ্রিল, ২০২২, ৫:০২ এএম says : 0
    আসলেেই বিষয়টি দুঃখের !!!!!!!!!!!!
    Total Reply(0) Reply
  • মাজহারুল ইসলাম ১২ এপ্রিল, ২০২২, ৫:০২ এএম says : 0
    এর জন্য দায়ি কারা?
    Total Reply(0) Reply
  • Harunur rashid ১২ এপ্রিল, ২০২২, ৭:২৫ এএম says : 0
    You are 100% right.
    Total Reply(0) Reply
  • Syed ১২ এপ্রিল, ২০২২, ৭:৫৮ এএম says : 0
    আর কিছু বল্লামনা !!
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৯ পিএম says : 0
    আপনি এতটাই শক্তিশালী যে বাংলাদেশের কোন দল আপনার সামনে টিকতে পারেনা
    Total Reply(0) Reply
  • সফিক আহমেদ ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:১৮ পিএম says : 0
    দুর্নীতি বন্ধ না হলে আপনার কোন উন্নয়নই কাজে আসবে না
    Total Reply(0) Reply
  • গিয়াস উদ্দিন ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:২১ পিএম says : 0
    আওয়ামীলীগ আর বিএনপি; কে কি কিংবা কে দেশ ও দেশের জনগণের জন্য কি করেছে তার এদেশের মানুষ ভালো করেই জানে।
    Total Reply(0) Reply
  • জব্বার ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:১৬ পিএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্রব্যমূল্যের দিকে নজর দিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ