Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশে দুর্নীতির একটা মহোৎসব চলছে : মির্জা ফখরুল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২২, ৫:০৮ পিএম

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং সরকারের দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে আজ সোমবার দুপুরে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ‘উপদেষ্টা ও মন্ত্রীর টেলিফোন কনভারসেশনের বিষয়বস্তু’ এবং ‘ফরিদপুরে ২ হাজার কোটি টাকার পাচারের বিষয়ে’ তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি যাওয়ার কথা।

সোমবার (১১ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে দুর্নীতির একটা মহোৎসব চলছে। আপনারা এখন সাহস করে অনেক কিছু লিখছেন, যার মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি। আমরা দুর্নীতির বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছি। সরকারের এক উপদেষ্টা (সালমান এফ রহমান) ও আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) টেলিফোন কনভারসেশন যেটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, সেই কনভারসেশনে যে বিষয়গুলো ছিল সেটা আমরা জানতে চেয়েছিলাম, এর তদন্ত হয়েছে কি না তাও জানতে চেয়েছিলাম। ফরিদপুরের অত্যন্ত সেনসিটিভ একটি পরিবার, সেই পরিবারের এক সদস্যের বিরুদ্ধে ২ হাজার কোটি টাকা অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়গুলো ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। আর কোনো কথাই হচ্ছে না এগুলো নিয়ে। আমরা দলের সর্বোচ্চ ফোরামে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা দুর্নীতির এই বিষয়গুলো নিয়ে আপাতত দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দেবো। সেই চিঠিতে তাদের আমরা তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করব। এরপর ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেকটা ইস্যু যেটা আসছে সেটা আমরা জাতির কাছে তুলে ধরব এবং একই সঙ্গে দুদকে পাঠাব। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা আশা করব দুদকের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং আমরা দুর্নীতির যে বিষয়গুলো দিচ্ছি সেগুলোর ওপরে সুষ্ঠু তদন্ত করে তা জাতির সামনে তুলে ধরবে তারা এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

দুদক অত্যন্ত সেনসিটিভ ইস্যুগুলো নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটু যারা কাজ করতে চান, তাদের স্টাফ অর্থাৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের বিরুদ্ধে দুদকই ব্যবস্থা নেয়। কিছুদিন আগে দেখেছেন যে, একজন কর্মকর্তা শরীফকে বদলি ও পদাবনতি করা হয়েছে একটি বিশেষ দুর্নীতির মামলার তদন্ত করার কারণে। আজকের পত্রিকায় আছে, দুর্নীতি দমন কমিশন নিজেরা তদন্ত করে যে রিপোর্ট পাচ্ছে সেগুলো তারা আমলে নিচ্ছে না। সেগুলোকে তারা ধামাচাপা দিয়ে রাখার ব্যবস্থা করছে। দুদকে বেশির ভাগ সরকারি আমলাকে নিয়োগ দেওয়া হয় উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সাবেক আমলাদের নিয়োগ দেওয়া হয় তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করেন যে, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যারা আছেন তারা অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা যারা আছেন, তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত যাতে না হয় এবং দুর্নীতির তদন্তের মধ্যে তারা যেন না আসেন।

বাংলাদেশের যে সম্ভাবনাটা তৈরি হয়েছে সেটাকে ধ্বংস করে ফেলার জন্য দুর্নীতি সবচেয়ে বড় ব্যাধি মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা এখন ক্যান্সার আকারে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও পাবেন না যে ঘুষ দেওয়া ছাড়া কোনো কাজ হচ্ছে। আইন-আদালতে বিচার পাবেন না। সবচেয়ে খারাপ অবস্থাটা হচ্ছে আদালতে, সেখানে সব হুকুমে কাজ হয়, সেখানেও কোনো কাজ হয় না দুর্নীতি ছাড়া। এর কারণটা হচ্ছে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এ মুহূর্তে আমাদের শ্বেতপত্র প্রকাশের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা এখন দরকার নেই। তবে সেটা সক্রিয় আলোচনা ও বিবেচনার মধ্যে আছে। সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ