পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘সম্মানিত মুসল্লি ভাইয়েরা, মেহেরবানি করে বাসা থেকে ওযু করে আসবেন।’ রাজধানী কাফরুলের তারা মসজিদে মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে পাঁচ ওয়াক্ত আযানের পরপরই ভেসে আসে এই বিশেষ ঘোষণা। এই ঘোষণার নেপথ্যে লুকিয়ে আছে হাহাকার, নীরব আকুতি ও দিব্যি কষ্ট গোপন করে তাল মেলানোর চেষ্টা। খাবার পানি দূরে থাক, শৌচাগারে ব্যবহারের পানিও আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই ধরেই এ অবস্থা। এতে স্থানীয়দের রান্না, খাওয়া ও গোসলসহ নিত্য-প্রয়োজনীয় কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। দৈনন্দিন কাজগুলো করতে তাদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। কিন্তু সমাধানের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই ওয়াসার। উল্টো পানি নিয়েই ব্যবসায়ে ব্যস্ত প্রতিষ্ঠানটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রোববার থেকে কাফরুল এলাকার কর্ণার ভিউ ও সংলগ্ন এলাকার পানি সরবরাহ নেই। এতে করে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই এলাকার বাসিন্দা তানজীর মাহমুদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ২০ বছর ধরে তিনি এই এলাকাতেই থাকেন। তাকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দু’হাতে দু’টি পাঁচ লিটার পানির বোতল নিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে এ এলাকায় পানির তীব্র সংকট চলছে। পানির অভাবে গোসল, রান্না কঠিন হয়ে পড়েছে। মানুষ পানির অভাবে অজু-গোসল করতে পারছে না। অন্তত খাওয়ার জন্য তাই পানি কিনে খেতে হচ্ছে। এছাড়া প্রতিবছরই রোজার মাসে এবং গরমের সময় এই সমস্যা আরও বেড়ে যায় বলে জানান তিনি।
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা নাজিম খান গোসলের জন্য আধঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে তার বোনের বাসায় যাচ্ছেন। তিনি বলেন, একেতো রোজার মাস, গরমটাও বেশি-মড়ার উপর খাঁড়ার ঘাঁ হয়ে আছে রাস্তার যানজট। তার উপর যোগ হয়েছে পানির সমস্যা। এ সমস্যার সমাধান কবে হবে তা নিয়েও কোন ঘোষণা নেই। এখন বেঁচে থাকাই দায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. সিদ্দিকুর রহমান, আরেফিন হিমেল, ইমরান ফাহিমসহ অত্র এলাকার সবার মুখেই শুধু পানি আর পানি। এছাড়া বাসাবাড়িতে অবস্থান করা নারীদের অবস্থা আরও অসহনীয়। এই এলাকার বেশ কয়েকজন গৃহিনীর সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, প্রতিদিন খাওয়া, গোসল ও কাপড়চোপড় কাঁচাসহ নিত্যকাজে অন্তত ২০ থেকে ২৫ কলসি পানি লাগে। এত পানি নিয়ে পাঁচ-ছয় তলা ওঠা যে কী কষ্টের, তা ভুক্তভোগী না হলে বোঝানো সম্ভব না। আরও কতদিন যে এ কষ্ট ভোগ করতে, হবে কে জানে! কারও কারও অভিমান মেশানো স্বর-এখানে দিন কাটে তো রাত কাটে না, রাত কাটে তো দিন কাটে না।
পানির জন্য যখন এই হাহাকার ঠিক তার কিছুদিন আগেই (২২ মার্চ) বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ঘটা করে পালিত হয়েছে ‘বিশ্ব পানি দিবস ২০২২’। এ দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ভূগর্ভস্থ পানি: অদৃশ্য সম্পদ, দৃশ্যমান প্রভাব’। অথচ এই অদৃশ্য সম্পদকে ঘিওে ওয়াসা সাজিয়েছে রমরমা ব্যবসা। ভুক্তভোগীরা জানান, আগে ওয়াসার এক গাড়ি পানি ৪০০ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন এখন হাজার টাকায়ও মিলছে না। অথচ এই গাড়ি বাবদ কিছু টাকা বকশিশ দিলেই সেবা মিলছে দ্রুতগতিতে। ২০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে এই বকশিশের পরিমান ক্ষেত্রবিশেষে ৫০০ টাকায়ও পৌঁছে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাদের এই সমস্যার কথা বারবার বলা হয়েছে ওয়াসা কর্মকর্তাদের। কিন্তু কোন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে ইনকিলাবের পক্ষ থেকে ১০ নম্বর জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহম্মদ আশরাফুল হাবিব চৌধুরির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।