Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ঘণ্টার ব্যবধানে ২ বন্দির মৃত্যু

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৩ এএম

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে গতকাল সোমবার এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বন্দির মৃত্যু হয়েছে। তাদের একজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ নির্যাতন করেছে অভিযোগ করে স্বজনেরা জানিয়েছেন, ওই নির্যাতনেই অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৫ বছর বয়সী রফিক উদ্দিনের বাড়ি চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়নে। আর ৩৯ বছর বয়সী বাবুল মিয়া ছিলেন হাছনদণ্ডীর বাসিন্দা। রফিক মারামারি এবং বাবুল মাদক মামলায় কারাগারে ছিলেন।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মো. তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রফিক ও বাবুল দুজনই চন্দনাইশ থানার আলাদা দুটি মামলায় কারাগারে ছিলেন। তাদের মধ্যে রফিক গত ২৭ মার্চ এবং বাবুল গত বছরের ১৮ নভেম্বর কারাগারে আসেন। ভোরে ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তারা মারা যান। বাবুল রোজা রাখার জন্য সেহেরি খেয়েছিলেন। বিছানায় যাওয়ার পর বুকে ব্যথা অনুভব করার কথা জানান। আর রফিক অসুস্থতা অনুভব করায় তাকে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে রফিকের পরিবারের দাবি, গত ২৬ মার্চ তার ওপর হামলা করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তার মামলা না নিয়ে উল্টো তাকে আসামি করে কারাগারে পাঠায়। রফিকের বড় ভাই জামাল উদ্দিন বলেন, পুলিশ রফিকের মামলা না নিয়ে তাকে প্রতিপক্ষের মামলায় গ্রেফতার করে। থানার ওসির অনুপস্থিতিতে একদল পুলিশ রফিককে আবারও বেধড়ক পেটায়। তার হাতে-পায়ে, শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। আহত অবস্থায় তাকে পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চিড়িংঘাটা এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন রফিক। গত ২৬ মার্চ সকালে তাদের চাচীর জানাজা শেষে ফেরার পথে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে রফিকের ওপর হামলা হয়। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিকালে রফিক থানায় মামলা করতে যায়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চন্দনাইশ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, রফিকের মামলাও নেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছিল। অপর পক্ষের মামলায় তিনি আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কারাগারের জেলার বলেন, রফিক হামলায় আহত হয়েছিলেন কিনা সেটা আমাদের জানা নেই। দুজনেরই ময়নাতদন্ত হবে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
রফিকের ভাই জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে বিদেশ থেকে ফেরেন জামাল। স্থানীয়ভাবে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিদেশ থেকে ফিরে তিনি ৫০ কানি জমি কেনেন। ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীমের সঙ্গে তার বিরোধ আছে। এর জের ধরে তার বসতঘরে কয়েকবার হামলা হয়েছে। এদিকে কারাগার থেকে আরেক হাজতি বাবুল মিয়াকে ভোর ৬টার দিকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভোর ৬টা ১৩ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি মাদক আইনে দায়ের হওয়া মামলার আসামি ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ