পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘ওটিটি প্ল্যাটফর্ম’ নীতিমালা সংবিধান পরিপন্থী। এটি মানুষের বাকস্বাধীনতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করবেÑ মর্মে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল রোববার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে পর্যবেক্ষণগুলো তুলে ধরা হয়। বিটিআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খসড়া নীতিমালা নিয়ে টিআইবি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়,‘দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন রেগুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্ল্যাটফর্মস ২০২১’ নীতিমালার খসড়ার কয়েকটি ধারা সংবিধান পরিপন্থী। খসড়ার বেশ কয়েকটি ধারা বাকস্বাধীনতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করবে। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সেল্ফ সেন্সরশিপের চর্চা করতে বাধ্য হবে। পাশাপাশি কয়েকটি ধারাতে আইনের ইচ্ছামতো ব্যাখ্যা ও অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, যা মানুষের কণ্ঠরোধে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়, খসড়াটিতে সংশ্লিষ্ট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অযৌক্তিক নীতি কাঠামোর আওতায় এনে বার্তার উৎস সনাক্তকরণের (ট্রেসেবিলিটি) শর্ত প্রতিপালনে অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড এনক্রিপশনের শর্ত ভাঙার যে অন্যায় সুবিধা তৈরি করা হচ্ছে তা ব্যক্তিগত যোগাযোগের গোপনীয়তার সংবিধান স্বীকৃত অধিকারকে খর্ব করবে। এর ফলে সাংবাদিক, ভিন্নমতাবলম্বী ও অধিকারকর্মীরা অতিরিক্ত ঝুঁকিতে পড়বেন।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের বক্তব্য দেন। খসড়া নীতিমালা নিয়ে টিআইবির অবস্থান উপস্থাপন করেন সংস্থাটির ‘আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন’ বিভাগের পরিচালক শেখ মন্জুর-ই-আলম। পর্যবেক্ষণে টিআইবি বলেন, ধারা ৩-এ নীতিমালাটির উদ্দেশ্য যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, তা যতখানি না ইন্টারনেট বা অনলাইন সম্পর্কিত তার চেয়ে অধিকমাত্রায় টেলিকমিউনিকেশন ও সম্প্রচার সম্পর্কিত। নীতিমালার ৪ ও ৫ ধারায় নীতিমালার উদ্দেশ্যসমূহ ও ‘অনলাইন সেবা প্রদানকারী’ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন সনদ বা অনুমতি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে সকল শর্তাবলি আরোপ করা হয়েছে, তা মূলত প্রচলিত টেলিকমিউনিকেশন সেবা প্রদানকারী (ইন্টারনেট সেবাপ্রদানকারী ও মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর) প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে আরো দূরদর্শী ও সাবধানতার সঙ্গে অগ্রসর হওয়া জরুরি। কেননা, নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে প্রচলিত ধারার টেলিকমিউনিকেশন ও সম্প্রচার মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ধারণার বশবর্তী হয়ে ‘অনলাইন সেবা’র মূল ভাবনার বিপরীত নীতি গ্রহণে উৎসাহিত করতে পারে।
নীতিমালায় নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী ধরেই নেয়া হচ্ছে যে, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানার মধ্যে অবস্থান এবং প্রচলিত ধারার নিয়ম-নীতি ও পদ্ধতি অনুসরণ করেই আবেদন করবেন। কিন্তু দেশের বাইরে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি বা নীতি অনুসৃত হবে, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এর ফলে, সংশ্লিষ্ট আগ্রহী প্রতিষ্ঠানসমূহকে উল্লেখিত নিয়ম মেনে আবেদন করার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার ঝুঁকি রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রচলিত ধারার টেলিকমিউনিকেশন সেবা প্রদান করার ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত জনবলেরও সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কিন্তু এই দু’টি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান ছাড়াই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ দেশের ভৌগলিক সীমানার বাইরে অবস্থান করে এবং তৃতীয় কোনো পক্ষের সহযোগিতা ছাড়াই কেবলমাত্র বিদ্যমান টেলিকমিউনিকেশন কাঠামো ব্যবহার করেই কাক্সিক্ষত সেবা প্রদানে সক্ষম। সুতরাং, খসড়া নীতিমালার উল্লিখিত শর্তাবলিতে ‘ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা প্রদান’র ধারণাকে যেভাবে নির্দিষ্ট ভৌগলিক সীমানা দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, তা ভ্রান্তিমূলক, অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অযৌক্তিক। তাছাড়া, ‘ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী’ প্রষ্ঠিানসমূহ যেভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে, সে ধারণারও পরিপন্থী। এর ফলে স্থানীয় পর্যায়ের ভোক্তাকে দেশের ভৌগলিক সীমানার বাইরের প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, যা নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবাপ্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবসার খরচ বাড়াবে
টিআইবি মনে করে, ব্যবহারকারী কর্তৃক তৈরিকৃত আধেয় শুধুমাত্র প্রচার ও প্রকাশে সহায়তা করার কারণে মধ্যস্থতাকারীদের জন্য শাস্তির যে বিধান নির্ধারণ করা হয়েছে এবং তা থেকে নিষ্কৃতি পেতে সুরক্ষাবলয়ের অনুপস্থিতি সংবিধান পরিপন্থী। মধ্যবর্তী সেবাদানকারী মাধ্যমের জন্য সুরক্ষা বিধান না করা হলে, জরিমানা এড়াতে তারা ‘আত্ম-নিয়ন্ত্রণ’র জায়গা থেকে আধেয় পরিবেশনে অতিরিক্ত মাত্রায় সাবধানতা অবলম্বন করবে। এর ফলে স্বাধীন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে অযাচিত প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হবে। যা সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।