Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশ্যই নিকৃষ্ট কথা-কাজ বর্জন করতে হবে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

নিয়্যাত করে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, স্ত্রী-সংসর্গ ও সওম ভঙ্গকারী বিষয় থেকে বেঁচে থাকাকে সওম বলা হয়। এর উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জন করা। যে কেউ কোনো নিয়্যাত ছাড়া দিনভর খানাপিনা ত্যাগ করে থাকলেও তাকে সওম বা উপমহাদেশে প্রচলিত রোযা পালন করা হবে না। অনুরূপ আল্লাহর নবী (স.) বলেছেন, সওম পালনরত অবস্থায় যে নিকৃষ্ট কথা ও কর্ম পরিত্যাগ করল না তার পানাহার ত্যাগে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।

সিয়াম দুই প্রকার : ওয়াজিব এবং নফল। ওয়াজিব সিয়াম তিন প্রকারÑ (১) রামাযান মাসের সিয়াম (২) কাফ্ফারার সিয়াম (৩) মানতের সিয়াম। সিয়াম ফরয হওয়ার শর্তাবলী : (১) ইসলাম গ্রহণ করা (২) বালেগ হওয়া (৩) পাগল না হওয়া (৪) সুস্থ থাকা (৫) বাড়ীতে অবস্থান করা তথা মুকীম হওয়া। (৬) নারীদের হায়েয নেফাস থেকে পবিত্র হওয়া।

যা দ্বারা রামাযান মাস শুরু সাব্যস্ত হয় : (১) নিজ চোখে রামাযান মাসের চাঁদ দেখতে পারা। (২) অন্য সৎ মুসলিমের রামাযান মাসের চাঁদ অবলোকন করা (৩) যে অঞ্চলে বসবাস করে সে অঞ্চলের কোন মুসলিম ব্যক্তির রামাযানের চাঁদ দেখার সংবাদ প্রদান করা।
কেননা নাবী (সা) বলেছেন : যখন তোমরা চাঁদ দেখতে পাবে তখন থেকে সিয়াম পালন শুরু করবে। (বুখারী হা: ১৯০০, সহীহ মুসলিম হা: ১০৮০)

ইবনু উমার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি নাবী (সা)-কে রামাযান মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ দিলে নাবী (সা) সিয়াম পালন শুরু করলেন এবং লোকদেরকে সিয়াম পালনের আদেশ দিলেন। (আবূ দাউদ হা: ২৩৪২)
যদি নিজে চাঁদ দেখতে না পায় এবং কোনো সৎ মুসলিম চাঁদ দেখার সংবাদ না দেয় তাহলে শাবান মাস ৩০ দিন পূর্ণ করতে হবে। নাবী (সা) বলেন: ‘তোমরা চাঁদ দেখে সিয়াম শুরু করবে এবং চাঁদ দেখেই সিয়াম পালন শেষ করবে। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় চাঁদ দেখা না যায় তবে শাবান মাস ৩০ দিন পূর্ণ করবে। (সহীহ বুখারী হা: ১৯০৯)

ওয়াজিব সিয়াম যেমন রামাযানের সিয়াম, কাফফারার সিয়াম ও মানতের সিয়ামের জন্য ফজরের পূর্বেই নিয়্যাত করতে হবে কেননা নাবী (সা) বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি রাত থাকতেই সিয়ামের নিয়্যাত করলো না তার সিয়াম নেই। (তিরমিযী হা: ৭৩৩, ইবনু মাজাহ হা: ১৭০০)

যেসব ওযরে রামাযানের সিয়াম ভঙ্গ করা যায় : (১) অসুস্থতা (২) অতি বৃদ্ধ হওয়া (৩) সফরে থাকা (৪) হায়েজ ও নেফাস হওয়া (৫) গর্ববতী হওয়া (৬) ছোট শিশুকে দুগ্ধ প্রদান করা।
যেসব কারণে সিয়াম ভঙ্গ হয় : (১) ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া ও পান করা। ভুলবশতঃ খেলে বা পান করলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না। নাবী (সা) বলেন: সিয়াম পালন রত অবস্থায় কেউ ভুলবশতঃ খেলে অথবা পান করলে সে যেন তার সিয়াম পূর্ণ করে। কেননা আল্লাহ তাকে খাওয়াইছেন অথবা পান করিয়েছেন। (সহীহ বুখারী হা: ১৯৩৩)
(২) ফজরের পর হতে সূর্য অস্তমিত হওয়ার সময়ের মধ্যে স্ত্রী সহবাস করা। (৩) ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা। তবে অনিচ্ছেকৃতভাবে বমি হলে তার সিয়াম ভঙ্গ হয় না।

যার অনিচ্ছাকৃত বমি হল তার ওপর কাযা নেই, আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলো সে যেন তা কাযা করে। (আবূ দাউদ হা: ২৩৮০ তিরমিযী হা: ৭২০, ইবনু মাজাহ হা: ১৬৭৬)
(৪) হায়েয ও নেফাস শুরু হলে, (৫) ইফতারের নিয়্যাত করলে। ইফতারের সময় হওয়ার পূর্বে ইফতারের নিয়্যাত করলে সাওম ভেঙে যাবে যদিও কিছু পানাহার না করে। (৬) মুরতাদ হয়ে গেলে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন : যদি তুমি শিরক কর তাহলে তোমার আমল বাতিল হয়ে যাবে। (সূরা যুমার আয়াত: ৬৫) (চলবে-)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ