Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে

সুপ্রিম কোর্টের নব-নির্মিত ১২ তলা ভবন ‘বিজয় একাত্তর’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:১৩ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার গণতন্ত্রকে নিরাপদ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্রক সুরক্ষা এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, যাতে জনগণ ন্যায়বিচার পায়।

গতকাল গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নব-নির্মিত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১২ তলা ভবন ‘বিজয় একাত্তর’ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিচার বিভাগের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্যাতিত নারী, শিশু এবং এসিড হামলার শিকারসহ সকলে যাতে সুবিচার পায় আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বিচার বিভাগের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ করেছে এবং বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার জন্য প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়ন করেছে। সরকার প্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগকে আরো শক্তিশালী করতে এবং সংবিধানের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়ার জন্য বিচারপতিদের সাধুবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, এই রায়ে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে।

এর আগে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নব-নির্মিত ১২ তলা ভবনের একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং এটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দীন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি, সুিপ্রম কোর্টের বিচারপতি এবং বিশিষ্ট আইনজীবীগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জনগণকে দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে মুক্তি দিয়েছে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আমরা দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের সরকার দায়মুক্তির সংস্কৃতি চালু করে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দায়মুুক্তি দিয়ে পুরস্কার হিসেবে তাদের বিদেশী মিশনসমূহে নিয়োগ দেন এবং একইসঙ্গে জেল থেকে মুক্ত করে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। সরকার প্রধান বলেন, জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়াও স্বামীর পথ অনুসরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের রায় দেয়ায় নি¤œ ও উচ্চ আদালতের বিচারকদের ধন্যবাদ জানান। বিচারকদের সাহসী ভূমিকার কারনে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি এবং রায় বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি।
শেখ হাসিনা তার ছয় বছরের জোরপূর্বক নির্বাসিত জীবনের পর দেশে ফেরার কথা তুলে ধরে বলেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের কারণে তখন এমনকি তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের হত্যাকান্ডের জন্যে একটি মামলা দায়ের করতেও পারেননি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পথ ধরে জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসেন। আর জিয়াউর রহমানের পথ ধরে ক্ষমতায় আসেন এরশাদ। জিয়ার শাসনকালে প্রায় ১৯ থেকে ২০ বার অভ্যুত্থান ঘটে এবং এর শিকার হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জনগণ।

তিনি প্রয়োজনীয় আইন চালুসহ অবকাঠামো নির্মাণ, বিচারকদের বেতন বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাক এবং জনগণ ন্যায় বিচার পাক।

সরকার প্রধান বলেন, সরকার বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশন সম্পূর্ণ করতে তার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত¡াবধানে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, দেশজুড়ে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারের উদ্যোগের অংশ হিসেবে তারা একটি ‘ল ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ইউনিভার্সিটির জন্যে একটি যথাযথ শিক্ষানীতি প্রণয়নে বিচারক ও আইনজীবীদের সহায়তা প্রয়োজন হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রীকে আদালত সংক্রান্ত নথি নিরাপদে রাখতে একটি রেকর্ড রুম তৈরিতে অর্থ বরাদ্দ দিতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী হার্ড কপি ও সফট কপি নথি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে তাদের একটি আধুনিক মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সারাদেশের আইনজীবীদের জন্যে আরো ভালো ব্যবস্থা করার কথা ভাবছে, যেরকম ৬৪টি জেলা আদালতের সবকটির আধুনিকায়ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার আইনজীবীদের জন্যে বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণ করছে। শেখ হাসিনা বলেন, যারা বিচার চাইতে অপারগ তাদের আইনী সেবা দিতে সরকার ‘দ্যা লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অ্যাক্ট- ২০০০’ প্রণয়ন করেছে। তিনি বলেন, অনেক বাধাবিপত্তি মোকাবেলা করে সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে। প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার স্বপ্নের মতো ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত- সমৃদ্ধ দেশগঠনে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।

 



 

Show all comments
  • MD Arif Sarker ১ এপ্রিল, ২০২২, ৭:০২ এএম says : 0
    সাধারণ মানুষ এ দেশে সঠিক বিচার পাই নাই...কবে পাবে আল্লাহ ভালো জানে
    Total Reply(0) Reply
  • Masum Khan ১ এপ্রিল, ২০২২, ৭:০২ এএম says : 0
    আমরা চাই দেশ দূর্নীতি থেকে মুক্তি পাক। দেশকে দূর্নীতি মুক্ত করে দেখান তবেই আপনি সফল
    Total Reply(0) Reply
  • S M Year Ali ১ এপ্রিল, ২০২২, ৭:০৩ এএম says : 0
    স্বাধীনতার দীপ্ত শপথে, স্বাধীনতা থেকে সমৃদ্ধির পথে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা সবসময় গণমানুষের পাশে আওয়ামী লীগই বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা জয়তু গনতন্ত্রের ফিনিক্স পাখি মাননীয় মানবিক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘাতক হায়েনাবাদের দল জামাতি বিএনপি মৌলবাদী গোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে, সমৃদ্ধির অদম্য অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আজ বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেল ইনশাআল্লাহ জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু জয় শেখ হাসিনা এমপি জয় বাংলা
    Total Reply(0) Reply
  • Harunur rashid ১ এপ্রিল, ২০২২, ৭:৫৬ এএম says : 0
    Judiciary must be independent and must be life time appoinment to the supreme court. I hope this happen very soon or curse of Allah will be on the leadership.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ