Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক বছরে পাটকলে লোকসান ৩১৬৮ কোটি টাকা -সংসদে পাটমন্ত্রী

পৌরসভা আইনের সংশোধনী পাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৭ এএম

 বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, গত অর্থবছর বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন মিলগুলো তিন হাজার ১৬৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। এ সময়ে মিলগুলো আয় করেছে ৪৮৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে তিন হাজার ৬৫২ কোটি ৯৪ কোটি টাকা। গতকাল সংসদে জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে পাটমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

পাটমন্ত্রী জানান, বিজেএমসির ২৫টি পাটকলের মধ্যে ২৪টি বন্ধ রয়েছে এবং একটি ভাড়ায় চলছে। বন্ধ ২৪টির মধ্যে দুটিতে টেক্সটাইল পল্লী স্থাপন এবং দুটি পিপিপিতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য হাবীব হাসানের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে (২০১৮ সালের শুমারি) ৫৮৯টি তাঁত কারখানা ও এক লাখ ১৬ হাজার ১১৭টি ইউনিট রয়েছে। পাওয়ার লুম ব্যতীত তাঁতশিল্পে বছরে প্রায় ৪৭ কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার মিটার তাঁতবস্ত্র উৎপাদিত হয়। যা দেশের বস্ত্রচাহিদার ২৮ ভাগ (পাওয়ার লুম ব্যতীত) পূরণ হয়ে থাকে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশের তাঁত সংখ্যা দুই লাখ ৯০ হাজার ২৮২টি।

বেগম লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে পাটমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে ৫ দশমিক শ‚ন্য তিন লাখ টন কাঁচাপাট রপ্তানি করা হয়েছে। এছাড়া গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮৬ লাখ টন কাঁচাপাট ও ৭ দশমিক ৮২ লাখ টন পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা শহরে যানজট নিরসনে সাবওয়ে নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চলছে। ফেব্রæয়ারির পর্যন্ত এর ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এটি সম্পন্ন হয়ে অর্থায়ন নিশ্চিত সাপেক্ষে সাবওয়ে নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শিগগির শুরু হবে।

সংসদে আইনমন্ত্রী : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সরকারের আঙ্গুলি হেলনে চলে না। সমিতির নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমিতির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক নেতারা মিলে নিষ্পত্তি করবেন। গত বুধবার আইনজীবী সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদে বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদের দেওয়ার এক বক্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এর আগে আইন পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হয়েছে, দুই সপ্তাহেও ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। ৫০ বছরের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন ঘটনা। এটা হতে পারে না। এটা বিরাট লজ্জার।

আইন পাস হওয়ার পর হারুনের বক্তব্যের জবাব দিতে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগণনা নিয়ে সদস্য ও প্রার্থীদের আপত্তি আছে। এ বিষয়ে কী হবে তা সমিতি ঠিক করবে। গতকাল তারা সভা করেছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, সমিতির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক সভাপতি- সম্পাদকরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। সেটা কীভাবে নিষ্পত্তি করবেন এটা সরকারের ঘাড়ে চাপানো ঠিক হয়নি।

পৌরসভা আইনের সংশোধনী পাস : পৌরসভার নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে প্রশাসক নিয়োগের বিধান যুক্ত করে পৌরসভা আইনের সংশোধনী পাস হয়েছে। সংশোধনীতে পল্লী এলাকাকে শহর ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্বের শর্ত বাড়ানোর বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এর আগের বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম গতকাল স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) বিল-২০২২ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটি পাসের প্রতিবাদে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ওয়াকআউট করেন। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি সংসদ কক্ষে আবার ফিরে আসেন।
এদিন এমপি হারুন বিলটির সংশোধনীর কয়েকটি বিষয়ে ব্যাখ্যা দাবি করেন, প্রত্যাশিত জবাব না পাওয়ায় তিনি ওয়াক আউট করেন।

বিদ্যমান আইনে বলা আছে, পৌরসভা ঘোষণা করতে হলে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে গড়ে দেড় হাজার হতে হবে। এর কম হলে হবে না। সংশোধনে তা বাড়িয়ে দুই হাজার করা হয়েছে। বিলে পৌরসভার সচিবের পদের নাম বদলে ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’ করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনের ৪২(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো শহর এলাকাকে পৌর এলাকা ঘোষণার পর পৌরসভার কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করিবে এবং পৌরসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত উক্ত প্রশাসক প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন।

কৃষিজমি সংরক্ষণে বেসরকারি বিল : দেশের কৃষিজমির যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণ করতে জাতীয় সংসদে বেসরকারি বিল পাসের প্রস্তাব উঠেছে। বিলে বলা হয়েছে, আইন কার্যকর হওয়ার পর দেশের সব কৃষিজমি কৃষিকাজ ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না বা অন্য কোনো কাজের জন্য ভাড়া বা ইজারা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করা যাবে না। তবে ব্যক্তিগত বসবাসের জন্য ঘরনির্মাণ, কবরস্থান, শ্মশান, অন্যান্য ধর্মীয় সৎকারের স্থান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য এ বিধান প্রযোজ্য হবে না। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান ‘কৃষি জমি (যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণ) বিল-২০২২’ শীর্ষক বেসরকারি বিল সংসদে উত্থাপন করেন। বিলটি সংসদে তোলা হলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বেসরকারি সদস্যদের বিল ও সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠান।
প্রস্তাবিত আইনে কৃষিজমির যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণের জন্য তদারক কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান হবেন- সংশ্লিষ্ট এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এছাড়া উপজেলার কৃষি, ভ‚মি, মৎস্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, সমবায়, যুবউন্নয়ন, সমাজসেবা, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা এবং সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর সদস্য হবেন।

বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি এ আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে তিন বছরের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা অর্থদÐে দÐিত হবেন। কেউ কৃষিজমিতে শিল্পকারখানা, রাস্তা, আবাসন বা অন্য স্থাপনা নির্মাণ করলে তদারক কমিটি নোটিশ দিয়ে নির্মাণকাজ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেবে। অন্য আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, নির্মাণকাজ ভেঙে ফেলার জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না বলে প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে। এ আইনের অধীন অপরাধের আমলযোগ্য হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ