Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১২টি সংস্থার হয়রানি বন্ধের দাবি রেস্তোঁরা মালিকদের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২২, ৮:৪৯ পিএম

নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সরকারের ১২টি অধিদফতরের পরিবর্তে একটির মাধ্যমে দেশের সকল রেস্তোরাঁ মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি। একইসঙ্গে অভিযানের নামে ১২টি সংস্থার হয়রানি বন্ধেরও দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

বৃহস্পতিবার ( ৩১ মার্চ) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহসচিব ইমরান হাসান। এ সময় সংগঠনের সভাপতি ওসমান গণি, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আন্দালিব উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা জানান, নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন অধিদফতরের অসহযোগিতা। সরকারের ১২টি অধিদফতর নিরাপদ খাদ্য মনিটরিং করার নামে হোটেল রেস্তোরাগুলোকে প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে। একেক সময় একেক অধিদফতর এসে অভিযান পরিচালনা করে মোটা অংকের জরিমানা করছে। অভিযান পরিচালনাকারী সংস্থাগুলো একটির সঙ্গে অন্য সংস্থার কোনো সমন্বয় নেই। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নিরাপদ খাদ্য তদারকির জন্য ১২টির পরিবর্তে ১টি অধিদফতরের মাধ্যমে হোটেল রেস্তোরাঁগুলো মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে হবে। পাপাপাশি রেস্তোঁরাগুলোতে মাঠ পর‌্যায়ের প্রশাসনের অযাচিত হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

এ বিষয়ে ইমরান হাসান বলেন, আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। ১টি অধিদফতরের অধীনে কাজ করতে চাই। কিন্তু এর কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বরং উল্টো দিন যত যাচ্ছে প্রত্যেকটা অধিদফতর বিক্ষিপ্তভাবে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ করছে এবং ক্ষোভ ঝাড়ছে রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর। পান থেকে চুন খসলেই বিশাল শাস্তি, কোনো বিশেষজ্ঞ ছাড়াই, কোনো অভিজ্ঞ লোক ছাড়াই যে যেভাবে পারছে জরিমানার নামে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসা নষ্ট করছে। এভাবে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সেক্টরের অদক্ষ ও স্বল্পশিক্ষিত মিলিয়ে ৯৫ শতাংশ লোক কাজ করে। তাদের আগে ট্রেনিং এর আওতায় নিয়ে আসেন এবং আন্তঃমন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে আমাদেরকে একটি মন্ত্রণালয়, অধিদফতর বা সংস্থার অধীনে নিয়ে আসেন। আমাদেরকে একটি গ্রহণযোগ্য এসওপি প্রদান করেন, যে গাইডলাইনে আমরা চলতে পারব। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো সংস্থাই আমাদেরকে সু-নির্দিষ্ট কোনো এসওপি প্রদান করেনি। এছাড়াও ঢাকা মহানগরের দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র তাদের টিম দ্বারা আমাদেরকে মনিটরিং করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও আইসিডিডিআরবিকে যুক্ত করেছেন। কিন্তু প্রধান স্টেক হোল্ডার হওয়া স্বত্ত্বেও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটিকে যুক্ত করা হয়নি। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোনোদিনই সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।

ইমরান হাসান বলেন, বর্তমানে আমাদের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, করোনা পরবর্তী সময়ে না সরকারের কোনো প্রণোদনা পেয়েছি, না সরকার থেকে কোনো সাহায্য পেয়েছি। অথচ করোনাকালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রতিগ্রস্থ হয়েছে রেস্তোরাঁ সেক্টর। আমরা সরকারি কোনো প্রণোদনা চাই না, আমরা সরকারের কাছে এসএমই খাত থেকে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ চাই। যাতে আমরা ব্যবসাটা রক্ষা করতে পারি। তাই সরকারের কাছে আহ্বান করব- অবিলম্বে একটা টাস্কফোর্স বা কমিশন গঠন করে একটি সংস্থা বা অধিদফতরের অধীনে আমাদের এই খাতকে নিয়ে আসা হোক।
তিনি বলেন, রেস্তোরাঁ খাতের লাইসেন্স নিতে হয় পর্যটন করপোরেশন থেকে, সেটা ন্যাস্ত আছে ডিসি অফিসে। ডিসি অফিস থেকে ৮টি দলিলসহ ডকুমেন্টস চাওয়া হয় লাইসেন্সের জন্য, যা রেস্তোরাঁ মালিকদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সমস্ত কিছু মিলে যে অরাজকতা চলছে বছরের পর বছর সে বিষয়ে কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও ভ্যাট- ট্যাক্সের জুলুম এ মাঠপর্যায়ে যে অত্যাচার-অনাচার আমাদের ওপর নামছে তার সমস্ত কিছু মিলে এখন আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ