পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের বিনা পয়সায় ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার চলমান প্রক্রিয়ায় শিগগিরই দেশের সব ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের আবাসন নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আমরা ২০২১ সালেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আজকে আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। সকল ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের জন্য বিনা পয়সায় ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। সেদিন বেশি দূরে নয়, বাংলাদেশের একটি মানুষও ঠিকানাবিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না। অন্তত তাদের বেঁচে থাকার একটু সুযোগ আমরা করে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটাই লক্ষ্য, বাংলাদেশটাকে আবার আমরা স্বাধীনতার চেতনায় ফিরিয়ে আনবো। আমরা স্বাধীনতার আদর্শে বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, অসা¤প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে।
বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এটাই আমাদের আকাক্সক্ষা।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময় ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করার যে সুযোগটা পেয়েছি এবং এর পূর্বে আমরা স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীও উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছিলাম, এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। যারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তাদের সেবা করার সুযোগ আমাকে দিয়েছে বলেই আজকে এই সৌভাগ্য হয়েছিল যে, আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে পেরেছি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে অনুষ্ঠিত এ সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তাবায়ন কমিটিতে থাকা মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সমাজের বিশিষ্ট জন, সরকারের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে (পিএমও) থাকা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) কার্যালয়ে স্থাপিত ‘মুজিব কর্ণার’ উদ্বোধনকালে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের মাঝে আরো ছড়িয়ে দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, এতে করে তারা যেমন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে তেমনি দেশও সামনে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ইতিহাস জানার মধ্যদিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্ম এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মের ভেতর একটা চেতনা জাগ্রত হবে, দেশপ্রেমে তারা উদ্বুদ্ধ হবে এবং মানুষের কল্যাণে তারা আরো কাজ করতে অনুপ্রেরণা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই মানসিকতা যত বেশি ফিরে আসবে তত আমার দেশ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সংস্কৃতিক দিক থেকে এগিয়ে যাবে। আজকে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কেননা ২১ বছর আমাদের বিজয়গাঁথা মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল, নতুন প্রজন্মের অনেকে সে ইতিহাস জানতেই পারেনি। আজকে তা আবার ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন সরকারে থাকার ফলে বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং সমগ্র বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে মর্যাদার চোখে দেখে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বিশ্বেও অনেক দেশ এখন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যদ্যের ভূমিকার প্রশংসা করে। বিদেশি অতিথিরা দেশে এলে তাদের নিরাপত্তায় থাকা এসএসএফ সদস্যদেরও ভূয়সি প্রশংসা করে থাকেন বলে তিনি জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, এই যে কর্নারটা করা হয়েছে সেখানে ইতিহাসের অনেক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কাজেই যারা দায়িত্ব পালন করতে আসবে তারা একদিকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, আর বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলার প্রেরণা পাবে। কারণ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমাদের জ্ঞান বিজ্ঞানে যেমন সমৃদ্ধশালী হতে হবে, তেমনি ইতিহাসের শিক্ষা থেকেই আমরা আগামী দিনের ভবিষ্যতটা আরো উজ্জ্বল করবো, উন্নত করবো।
তিনি এসএসএফ সদস্যদের জন্য তার দোয়া ও আশির্বাদ জানিয়ে বলেন, তিনি যখন দোয়া করেন শুধু নিজ পরিবারের জন্যই নয়, সহকর্মী এবং দেশবাসীর জন্যও দোয়া করেন। বিশেষ করে যারা তার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন তাদেরও মঙ্গল কামনা করেন তিনি। আমাদের দেশ অনেক রক্তপাত ও ত্যাগের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে তা যেন বৃথা না যায় সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী আহবান জানান।
উন্নয়ন না দেখলে চোখের চিকিৎসা করুন :
যারা সরকারের উন্নয়ন দেখে না তাদের চোখের চিকিৎসা করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাদের চোখে কোনো উন্নয়নই নাকি দেশে হয় নাই। এখন বলতে হয় যে, আমরা তো একটা আই ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। যারা বক্তৃতা দেয় উন্নয়ন হয় নাই, চোখে দেখে না, আমার মনে হয় তাদের চোখ পরীক্ষা করা দরকার। তাহলে হয়তো দেখতে পাবে যে, উন্নয়ন হয়েছে কিনা। শেখ হাসিনা বলেন, তাদের চোখে পড়ে না যে শতভাগ বিদ্যুৎ, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ তো বিদ্যুৎ ছাড়া চলতে পারে না। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ তারা ব্যবহার করছে। এটা উন্নতি না? আজকে পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র—এগুলি চোখে পড়ে না। এগুলো উন্নয়নের লক্ষণ না। আজকে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে, এটা উন্নয়ন, তাদের চোখে পড়ে না। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি, এটা তাদের চোখে উন্নয়ন না।
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি অনেকে আছে দেশে কোনো উন্নতিই দেখে না। তাদের যদি চোখ খারাপ থাকে তাহলে আমার কিছু বলার নাই। তারা দেখে না, কেন দেখে না সেটা হচ্ছে দেখার ইচ্ছে নাই তাই দেখে না। কিন্তু আমাদের উন্নয়নের যে কর্মসূচি সুপরিকল্পিতভাবে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছি, আমাদের ঘোষণাপত্রে আমরা ঘোষণা দিয়েছি। নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়ে যে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা আমরা বলেছি, আমরা একে একে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।