Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক বছরে ১১১৭ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০২২, ১২:৩৩ এএম

দেশে ২০২১ সালে ১ হাজার ১১৭ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৭২৩ জন একক ধর্ষণ, ১৫৫ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার। এছাড়া ১০০ জন প্রতিবন্ধী এবং অন্যান্য ১৩৯ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। দেশের গত বছরে ধর্ষণের এই তথ্য দিয়ে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম বলেছে, ২০২০ সালে ধর্ষণের মোট সংখ্যা ছিল ৬২৬ জন। ওই বছরের তুলনায় ২০২১ সালে কন্যাশিশু ধর্ষণের হার শতকরা ৭৪.৪৩ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি। রবিবার সকালে আবদুস সালাম হলে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়।

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে মোট ১১৬ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ শিশু রয়েছে। আগের বছর ২০২০ সালে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিল ১০৪ জন। ২০২১ সালে যৌন হয়রানি বৃদ্ধির হার প্রায় ১২ শতাংশ।

এ অবস্থায় যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন রোধে সর্বস্তরের জন্য ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’ নামে একটি আইন জরুরি ভিত্তিতে প্রণয়নের সুপারিশ করেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।

সংগঠনটির পরিসংখ্যান বলছে, যৌন হয়রানির অধিকাংশই সংঘটিত হয়েছে রাস্তায়, নিজের বাসায়, নিকটতম আত্মীয় পরিজন গৃহকর্তার দ্বারা। যৌন নির্যাতনে অপেক্ষাকৃত নতুন ধরন পর্নোগ্রাফি। ২০২১ পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছে ৫২ কন্যাশিশু।

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের বলা হয়েছে, ২০২১ সালে এসিড আক্রমণের শিকার হয়েছে ১০ কন্যাশিশু। পারিবারিক বিবাদ, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়া, সম্পত্তি সংক্রান্ত আক্রোশ, ইত্যাদি কারণে এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে ২০৬ কন্যাশিশু।এর মধ্যে অপহরণের শিকার ১৯৭ জন।

২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ নভেম্বর পর্যন্ত মোট বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে ২ হাজার ৮৬৮ কন্যাশিশু। গড়ে প্রতিটি ইউনিয়নে ২১ কন্যাশিশু বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ১৪.৫৮ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে ২০১৯ সালে বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছিল ২ হাজার ৫০৩ কন্যাশিশু। ২০২১ সালে যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয় ১৭ কন্যাশিশু। এরমধ্যে যৌতুক দিতে না পারায় হত্যার শিকার ৯ জন।

এছাড়া ২০২১ সালে গৃহশ্রমিক নির্যাতনের ৩৫টি খবর জানা গেছে। এর মধ্যে ১৮ জনকে শারীরিক নির্যাতন, ৫ জনকে নির্যাতনের পর হত্যা এবং ১২ জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ২৪২ জন কন্যাশিশু আত্মহত্যা করেছে। ২৭২ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ৩৫ কন্যাশিশুকে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম যৌন নির্যাতন বন্ধে সরকারের কাছে ১০ দফা সুপারিশ জানিয়েছে। সেগুলি হলো- শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার সকল ঘটনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রæততম সময়ের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা; উত্যক্তকরণ, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন রোধে সর্বস্তরের জন্য যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন নামে জরুরি ভিত্তিতে একটি আইন প্রণয়ন; ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, মামলা ও ধর্ষণ সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার অভিযোগের ক্ষেত্রে, ঘটনার শিকার কন্যাশিশু ও নারীর পরিবর্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও আইনের আওতায় আনা ইত্যাদি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ