পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে একটি কোম্পানির
আইটি ও সার্ভারের উপর নির্ভর
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে উপচেপড়া ভিড়। টিকিট কিনতে আসা যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগে। বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে হঠাৎ করে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয়ায় এই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। ভুক্তভোগীরা বলছেন, রেলের টিকিট বিক্রিতে একটি বেসরকারি কোম্পানির উপর রেলপথ মন্ত্রণালয় নির্ভরশীল হওয়ায় এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একাধিক কোম্পানিকে এ কাজ দেয়া হলে যাত্রীদের এমন দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রেনের টিকিট কিনতে কাউন্টারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে যাত্রীদের। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পাচ্ছেন না নির্দিষ্ট গন্তব্যের টিকিট। এতে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক যাত্রী। আবার পর্যাপ্ত টিকিট দিতে না পেরে হিমশিম খেতে হচ্ছে রেলওয়ে কর্মীদের।
বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে শুধুমাত্র কোন একটি কোম্পানিকে কাজ দিয়ে সারা দেশের সকল রুটের ট্রেনের টিকিট বিক্রির দায়িত্ব দেয়ায়ও জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। একটি কোম্পানির আইটি ও সার্ভারের উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে রেলওয়ের পুরো ব্যবস্থাকে। সরকারি এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থাকে টিকিটিং সার্ভিসের জন্য চেয়ে থাকতে হবে বেসরকারি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি সহজ লিমিটেডের দিকে। এছাড়াও অনেকে বলছেন, রেলওয়ের মতো এতো বড় একটি মন্ত্রণালয়ের অধিনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করবে অন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ট্রেনের টিকিটিং ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য নেই কোন নিজস্ব আইটি সিস্টেম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০০৭ সাল থেকে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করেছে সিএনএস। তাদের সঙ্গে রেলওয়ের ১৫ বছরের চুক্তি ছিল। গত ২০ মার্চ তা শেষ হয়। এরপর টিকিট বিক্রির জন্য নতুনভাবে করা হয় টেন্ডার। এই টেন্ডারে কাজ পায় রাইড শেয়ারিং কোম্পানি সহজ লিমিটেড। ২৬ মার্চ থেকে তারা টিকিট বিক্রি শুরু করবে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, ২১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত এই অসুবিধা থাকবে। ২৬ মার্চ থেকে আবারো প্রিন্টেড টিকিট দেয়া হবে। সহজ ডটকম তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি শুরু করবে বলে জানান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সহজ, সিনেসিস এবং ভিনসেন জেভি যৌথভাবে তৈরি করেছে টিকিটিং সিস্টেম। এখন চলছে শেষ মুহ‚র্তের প্রস্তুতি। চলতি বছর ১৫ ফেব্রæয়ারি টিকিটিং সিস্টেম পরিচালনার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় সহজর সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের।
সরেজমিন দেখা গেছে, এখন যাত্রীদের হাতে লেখা কাগজের টিকিট দেয়া হচ্ছে। ফলে সকাল থেকে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড় দেখা যায়। টিকিট কাউন্টারগুলোতে টিকিট দিতে হিমশিম খাচ্ছেন রেলওয়ের বুকিং মাস্টাররা। কমলাপুর রেল স্টেশনে ভোর থেকে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। টিকিট কাউন্টার থেকে সড়ক পর্যন্ত তীব্র গরমের মধ্যে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে মানুষ। টিকিট দিতে হিমশিম খাচ্ছেন রেলওয়ের বুকিং সহকারীরা। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে পেতে হচ্ছে টিকিট। অনলাইনে টিকিট বন্ধ থাকায় সবাই স্টেশনে ভিড় করেছেন এতে করে বেড়েছে কমলাপুর স্টেশনে যাত্রীদের চাপ। হঠাৎ করে অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে। এখন টিকিট কাটতে কাউন্টারে যেতে হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পাওয়া যাচ্ছে না টিকিট। রেল কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতায় চরম ভোগান্তি হচ্ছে যাত্রীদের। দ্রæত এর সমাধানে চান যাত্রীরা।
জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের সার্ভিস প্রোভাইডার পরিবর্তনের কারণে গত ২১ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে ট্রেনের অনলাইন টিকিট বিক্রি। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধের চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবারও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। টিকিটের জন্য ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। সশরীরে স্টেশনে সব টিকিট বিক্রি হওয়ায় চাপ বেড়েছে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও। শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত কাউন্টার থেকে হাতে লিখে পুরনো পদ্ধতিতে চলবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি। এরপর শুক্রবার রাত ১২টা থেকে পুনরায় অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। তবে শুরুতে শুধু ওয়েবসাইট থেকেই টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। থাকবে না কোনো মোবাইল অ্যাপ।
নতুন ওয়েবসাইট (িি.িবঃরপশবঃ.ৎধরষধিু.মড়া.নফ) থেকে টিকিট সংগ্রহের জন্য প্রথমেই প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে করতে হবে নতুন অ্যাকাউন্ট। পুরোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপের অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়ে লগ-ইন যাবে না নতুন ওয়েবসাইটে। বাস-লঞ্চের টিকিট বিক্রির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ১৫ বছর ধরে ব্যবহৃত রেল টিকিটিং সিস্টেমের আদলে একটি সমমানের পদ্ধতি মাত্র ২১ কর্মদিবসে তৈরি করেছে সহজ। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছে সহজ। টিকিটের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সিস্টেম পরিচালনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও প্রদান করেছে সহজ। চুক্তি অনুযায়ী সহজ, সিনেসিস এবং ভিনসেন জেভি প্রাথমিকভাবে চলমান সিসিএসআরটিএস সিস্টেমটি সচল রাখবে। তবে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে সিসিএসআরটিএস সিস্টেমটি বিআরআইটিএস দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।
আবুল হাশেম নামের এক যাত্রী বলেন, অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় জটিল সমস্যায় পড়তে হয়েছে। হাজার হাজার যাত্রী লাইনে দাঁড়িয়ে চরম ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। হঠাৎ বিকল্প ব্যবস্থা না করে অনলাইনে টিকিট বন্ধ করে দেয়ার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ধানমন্ডি থেকে কষ্ট করে এসেছি টিকিট কাটতে। কাউন্টারের কাছে এসে দেখি দীর্ঘ লাইন এখন বুঝতে পারছি না টিকিট কাটতে পাব কিনা। সামনের অনেকেই দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও যেখানে যেতে চান সেখানকার টিকিট পাচ্ছেন না।
আরেক যাত্রী কবির হোসেন বলেন, ভোর থেকে ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। না খেয়ে তীব্র গরমে অপেক্ষা করে চট্টগ্রামের দুটি টিকিট পেয়েছি। কিন্তু এভাবে এতো কষ্ট করে টিকিট কাটতে হলে ট্রেনে যাতায়াত করা সম্ভব হবে না। দ্রæত অনলাইনে টিকিটিং সিস্টেম চালুর দাবি জানান তিনি।
গত ১৪ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে ২১-২৫ মার্চ পর্যন্ত অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ওইদিন রেলমন্ত্রী বলেন, টিকিট বিক্রিতে অভ্যন্তরীণ সেটআপের জন্য পাঁচদিন সময় নিয়েছে সহজ। ২৬ মার্চ থেকে তারা ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু করবে। আগে পাঁচদিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হতো। এই সময়ে সেটা দেয়া হবে না। কাউন্টার থেকে টিকিট দেয়ায় এখানে কোনো কোটা বা আসন সংরক্ষণ থাকবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।