পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাহিদা অনুযায়ী ভোজ্যতেলের প্রয়োজনীয় আমদানি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি দেশে তৈল বীজ উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা বাংলাদেশ কীভাবে কমাতে পারে, সে বিষয়ে গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ কে ছেন। গবেষণার জন্য অর্থের অভাব হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে জাতীয় সংসদ সদস্যদের (এমপি) সুপারিশের ভিত্তিতে তাদের এলাকায় গুরুত্বপুর্ণ সেতু নির্মাণ করবে সরকার। এজন্য ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। একই সঙ্গে আরও ১১টিসহ মেট ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৭৪৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১১ হাজার ৬৭৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এছাড়া বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৪ হাজার ৬৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বীজ বর্ধন খামার স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার সময় আলোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তৈল বীজ উৎপাদন বাড়ানোর এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এ সময় পরিকল্পনা সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদ, কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য শরিফা বেগমসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেনÑ আমাদের এখন তৈল বীজ ও বাদাম উৎপাদন বাড়ানো উচিত। ভোজ্যতেলে আমদানিনির্ভরতা বেশি। এ নির্ভরতা কিছুটা হলেও কমানো উচিত। বর্তমানে যে পরিমাণ আমদানি চাহিদা রয়েছে প্রয়োজনীয় আমদানি অব্যাহত রাখতে হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ জন্য গবেষণা করার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, গবেষণার জন্য অর্থের অভাব হবে না।
বৈঠকে রেল বিভাগের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী রেল বিভাগের নিয়োগের ক্ষেত্রে রেলের বর্তমান কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কোটা অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রেলের নীচু পর্যায়ে যারা কাজ করেন তাদের সন্তানরা সেই কাজ প্রতিনিয়ত পাবিারিক আবহ থেকেই দেখে আসছেন। যেমন- রেলে কয়লা কিভাবে দেয়, রেলের কোথায় কী পরিষ্কার করতে হয়- এগুলো তাদের বাচ্চারা পারিবারিকভাবেই শিখে নেয়। তাই তাদের জন্য কোটা অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
রেল বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সন্তানদের রেলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে চাকরির জন্য ৪০-৫০ শতাংশ কোটা রয়েছে। তবে প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণিতে এ সুযোগ বা কোটার প্রচলিত নেই বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, যেকোনও সেতুর নিচ দিয়ে স্বাভাবিক নৌ-চলাচল করার মতো উঁচু করে সেতু তৈরির নির্দেশনাও বৈঠকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এরকম একটি সেতুও যদি পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে হয়েছে ৪ হাজার ৫০ কোটি টাকা। চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এট বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যদের সুপারিশ অনুযায়ী এসব সেতু নির্মাণ করা হবে। আমার এলাকায়ও আমি একটি সেতু পেয়েছি। সাধারণ মানুষ অনুরোধ নিয়ে আসেন। তাদের প্রয়েজনের কথা চিন্তা করে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। তবে কোন সংসদ সদস্যের এ্যাকাউন্টেই টাকা যাবে না। এসব বাস্তবায়ন করবে এলজিইডি।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশকে আলোকিত করায় প্রধানমন্ত্রীকে একনেকের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবেলা এবং বাজারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে এক কোটি মানুষকে সহায়তা করার জন্যও তাকে অভিনন্দন জানানো হয়। মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কমে এসেছে। রেমিট্যান্সের অবস্থা কয়েকদিন আগে কিছুটা খারাপ থাকলেও এখন ভাল হয়েছে। অর্থনীতির অন্যান্য সূচক ভাল অবস্থানে আছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সঠিক সময়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত এবং সঠিক ব্যবস্থা নেয়ার কারনেই।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো-বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০০টি ব্রডগেজ (বিজি) প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্প, এটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭০৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপন্স এন্ড রিকভারি প্রকল্প, ব্যয় হবে ২ হাজার ৫৫৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। উপকূলীয় জেলাগুলো বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ, ব্যয় হবে ৯৬১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। বিএএফ ঘাঁটি জহুরুল হক, চট্টগ্রামে বিমানসেনা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন, ব্যয় ১৪০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। দি প্রজেক্ট ফর ইমপ্রুভমেন্ট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ফ্যাসিলিটিস, ব্যয় হবে ২২৮ কোটি ৮ লাখ টাকা। নওগাঁ সড়ক বিভাগাধীন ৩টি আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩টি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, ১ হাজার ১৮২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এক্সটারনাল টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন, ব্যয় ৩৭৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বীজ বর্ধন খামার স্থাপন, ব্যয় ৪৩৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ভূ-গর্ভস্থ সেচনালা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সেচ এলাকা ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পরীক্ষামূলকভাবে ড্রিপ সেচ পদ্ধতির প্রচলন, ব্যয় ৩২৯ কোটি টাকা। সার্বজনীন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-২, ব্যয় ১ হাজার ৮২ কোটি টাকা। বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।