Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রিয় মানুষকে একা ফেলে অন্যভুবনে সেই ফাহমিদা

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২২, ১২:০৩ এএম

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাসপাতালের কেবিনে লাল বেনারসি পড়েছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত ফাহমিদা কামাল (২৬)। নাকে অক্সিজেনের নল লাগানো অবস্থায় বিয়ে করেছিলেন দীর্ঘদিনের এক প্রেমিককে। তবে ১২ দিনের মাথায় সেই প্রিয় মানুষটিকে ছেড়ে পাড়ি জমালেন অন্যভুবনে। গতকাল সোমবার সকাল ৭টায় নগরীর ও আর নিজাম রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন ফাহমিদা। তিনি ওই হাসপাতালের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ঘটনায় তার নিজ বাড়ি ও শ্বশুর বাড়িতে নেমে আসে শোকের ছায়া।

চিকিৎসকেরা জানান, শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত রোববার ফাহমিদাকে হাসপাতালের কেবিন থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করা ফাহমিদার স্বপ্ন ছিল প্রেমিক মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে ঘর বাঁধার। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে সম্মতিও মেলে দুই পরিবার থেকে। বিয়ের কথাবার্তাও এগোয় ২০২০ সালের শেষ দিকে হয়। কিন্তু গত বছরের জানুয়ারি মাসে ফাহমিদার রেকটাম ক্যান্সার ধরা পড়ে। বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশে চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সারের সাথে লড়াই চলে তার।

শরীরে ক্যান্সার বাসা বানানোর পরও তার সেই স্বপ্ন ফিকে হতে দেননি নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করা মাহমুদুল। ফাহমিদার ইচ্ছা এবং স্বপ্নকে সম্মান জানাতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ফাহমিদার পরিবার থেকে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরোধ জানানো হলেও মাহমুদুল সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। গত ৯ মার্চ হাসপাতালের কেবিনেই বিয়ে হয় ফাহমিদা-মাহমুদুলের। বধূবেশে লাল শাড়িতে ফাহমিদা ও পাঞ্জাবি পরা বর মাহমুদুলের বিয়ের সেই ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেই লাল শাড়ির মায়া ছেড়ে ফাহমিদা বাড়ি ফিরলেন সাদা কাফন পরে। নামাজে জানাজা শেষে নগরীর দক্ষিণ বাকলিয়া চারচাক্তাইয়ে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

বিয়ের পর ১৪ মার্চ ফাহমিদা মনের জোরে হাসপাতাল থেকে বাকলিয়ায় বাসায় ফিরে গিয়েছিল। কিন্তু পরদিনই অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি নেয়া হয়। সেখানে কেবিনে রেখে তার চিকিৎসা চলছিল। এস এম কামাল উদ্দিনের তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে ফাহমিদা ছিলেন দ্বিতীয়। তার বড় বোন চীনে থাকেন। ছোটভাই এখনও পড়ালেখা করছেন। ফাহমিদা চট্টগ্রামের বেসরকারি চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ