পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পটুয়াখালীতে দেশের বৃহৎ পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আগামীকাল সোমবার। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন তিনি দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণাও দেবেন। এটি ঘিরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি ‘হাব’ গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানায় যৌথভাবে রয়েছে বাংলাদেশ ও চায়না পাওয়ার কম্পানি (বিসিপিসিএল)। বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি (এনডাব্লিউপিজিসিএল) ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সমান অংশীদারে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।
পায়রায় বিসিপিসিএল এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি করে ইউনিট রয়েছে। ২০২০ সালের জুন নাগাদ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসে। একই বছরের আগস্টে উৎপাদনে আসে দ্বিতীয় ইউনিট। তবে সঞ্চালন লাইন তৈরি না হওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পুরো সক্ষমতাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে বিসিপিসিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্রকৌশলী এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, ‘পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল সকাল ১১টায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরই প্রধানমন্ত্রী দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন। ’
সঞ্চালন লাইনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পায়রা-গোপালগঞ্জ-আমিনবাজার লাইনটির পদ্মা রিভার ক্রসিং কাজ এখনো শেষ হয়নি। চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ এই কাজ শেষ হবে। এর পরই রাজধানীতে সরাসরি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জ- রামপাল গ্রিড লাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। রামপালে নির্মিত সাবস্টেশনের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খুলনা অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের দু-তিন দিন পর থেকে ওই লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে। ’
তিনি জানান, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ করতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। নির্মাণ ব্যয়ের বেশির ভাগ অর্থায়ন করেছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। নির্ধারিত সময়ের আগেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শেষ করায় প্রায় ৯০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এক হাজার একর জমির ওপর নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য কয়লা আমদানি করা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া থেকে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার আরো একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে বিসিপিসিএল। এই কেন্দ্রের নির্মাণকাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশের সর্ববৃহৎ ও দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিশ্বের ১০তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এটি নির্মাণ করেছে। করোনাকালে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী সশরীরে উপস্থিত হয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উদ্বোধন করবেন। ’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ছিল দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এ ধরনের একটি অবকাঠামো নির্মাণ করা গেলে ওই অঞ্চলের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। এর আগে দক্ষিণাঞ্চল অবহেলিত ছিল। কেন্দ্রটি নির্মাণ করায় ওই অঞ্চলের পুরো চিত্র পাল্টে গেছে। শহরের সুবিধাগুলো পৌঁছে গেছে গ্রামে। ’
সঞ্চালন লাইন নির্মাণ অগ্রগতির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সঞ্চালন লাইন নির্মাণ একটু দুরূহ হয়ে পড়েছে। লাইন নির্মাণে জমির অভাব, নদী ক্রসিং, মামলা-মোকদ্দমা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তার পরও করোনার মধ্যে আমাদের কাজ এগিয়ে গেছে। আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হলে পায়রা পূর্ণ ক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে পারবে। ’
দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে সরকার এক দশক আগে বেশ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় ২০১৪ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি সই হয়। পরে গঠিত হয় বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড। যৌথ উদ্যোগের এই কম্পানির ব্যবস্থাপনায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ পায় চীনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এনইপিসি ও সিইসিসি কনসোর্টিয়াম। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালাতে প্রতিদিন ১২ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হবে। ১০ বছরের চুক্তির আওতায় ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।