Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য আমির হামজার বিষয়ে খতিয়ে দেখবে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০২২, ১২:০৭ এএম

দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য আমির হামজার নাম ঘোষণার পর বিতর্ক ওঠায় তা পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র আহŸায়ক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, তারা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবেন। পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগও রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত ১৫ মার্চ সরকার এবারের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করে। তাতে সাহিত্যে মরহুম আমির হামজার নাম আসে। নাগরিক মহলে অচেনা আমির হামজার নাম দেখে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

বাঘের থাবা, পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি ও একুশের পাঁচালি নামে তার তিনটি বইয়ের তথ্য পাওয়া যায়। জন্মস্থান মাগুরায় তাকে চারণ কবি হিসেবে চিনতেন অনেকে। কেননা তিনি গানের আসরে বসে গান লিখতেন, সুর করতেন। নির্বাচনে আমির হামজা আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচার চালিয়েছিলেন বলে স্থানীয়দের কথায় উঠে আসে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে, ১৯৭৮ সালে একটি খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আমির হামজা। বিচারিক আদালতের রায়ে ওই মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা হলেও পরবর্তীতে রাজনৈতিক বিবেচনায় সাধারণ ক্ষমা পান তিনি। আমির হামজার ছেলে আসাদুজ্জামান সরকারি কর্মকর্তা। খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন তিনি। ২০১৯ সালে মারা যাওয়া আমির হামজাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ছেলের তৎপরতার কথাও আসে সংবাদ মাধ্যমে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী মোজাম্মেল বলেন, আমরা পত্রপত্রিকায় দেখেছি, লক্ষ্য করেছি বিভিন্ন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের মতামত। খতিয়ে দেখি সেগুলো সঠিক অভিযোগ কি না। যেমন- মার্ডার, এগুলোরর সাথে সম্পৃক্ত কি না? তার সাহিত্যকর্ম কী আছে, সেগুলো ভালো করে খতিয়ে দেখব।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার দেয়ার জন্য রয়েছে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত নির্দেশাবলী’, যা সর্বশেষ ২০১৯ সালে সংশোধন করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়, স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বিধায় এই পুরস্কারের জন্য চ‚ড়ান্তভাবে প্রার্থী নির্বাচনকালে দেশ ও মানুষের কল্যাণে অসাধারণ অবদান রাখিয়াছেন, এমন সীমিত সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেই বিবেচনা করা হইবে। পুরস্কারের সংখ্যা সাধারণভাবে কোনো বছর ১০টির বেশি হবে না। তবে প্রধানমন্ত্রী চাইলে সংখ্যা বাড়ানো কিংবা কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
পুরস্কারের পদ্ধতি বর্ণনা করে নির্দেশাবলিতে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে পরবর্তী বছরের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব আহŸান করে সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগে এবং এর আগে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার বা স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের কাছে চিঠি পাঠাবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগসমূহ নিজ নিজ কার্যসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পুরস্কারের জন্য এবং ইতঃপূর্বে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার বা স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তগণ নির্ধারিত যে যে কোনো ক্ষেত্রে পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করিতে পারিবে/পারিবেন।

এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে পাওয়া নামের প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করবে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি। যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রস্তাব জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য উপস্থাপন করা হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের থেকে প্রস্তাবের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব প্রস্তাবে স্বাক্ষর করবেন।

এ বছর আমির হামজার নাম সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, যা তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বীকার করেছেন। বাণিজ্য সচিব প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সদস্য এবং জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে সহায়তাদানকারী কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ