পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অসহযোগ আন্দোলনের সপ্তদশ দিন ১৮ মার্চ সরকারি-বেসরকারি ভবনের শীর্ষে কালোপতাকা উড়ানো, অফিস আদালতে অনুপস্থিতি ঘোষিত সংগ্রামের কর্মসূচি সফল হয়ে উঠে। সামরিক আইন প্রশাসক যে তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন তা প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ।
এছাড়া মুজিব-ইয়াহিয়া পরবর্তী বৈঠকের কোনো সময় নির্ধারণ না হওয়ায় জনগণ ‘আলোচনা নাটক’ ইয়াহিয়ার আন্দোলন স্তিমিতকরণের কৌশল হিসেবেই ধরে নেয়। এদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত উৎসুক জনতা তাদের আশা আকাঙ্খার প্রতীক বঙ্গবন্ধু বাসভবনে অবস্থান করতে থাকে এবং শ্লোগান তোলে, গোলটেবিল না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘পিÐি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা। বিপুল সংখ্যক দেশী- বিদেশী সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে এসে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে মিলিত হন। বিদেশী এক সাংবাদিক পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আরো সৈন্য আনা হচ্ছে জানিয়ে এ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু কিছু জানেন কি না জানতে চান। জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমার দেশের মাটিতে যা কিছু ঘটছে তার সব খবরই আমি রাখি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ন্যাপ (ওয়ালী) প্রধান ওয়ালী খান এক ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন। তাদের সঙ্গে বৈঠকে পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি গাউস বক্স বেজেঞ্জোও উপস্থিত ছিলেন। রাতে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়, পরদিন সকাল ১১টায় প্রেসিডেন্ট ভবনে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান ও আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের মধ্যে বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট সম্পর্কে তৃতীয় দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তেজগাঁয়ে ও মহাখালীতে শ্রমিকদের ট্রাকে হামলা চালায়। সৈন্যরা এই দুই স্থানে নিরস্ত্র আরোহীদের নির্মমভাবে প্রহার করে এবং তাদের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এসব ঘটনায় নগরীতে জনসাধারণের মধ্যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
শ্রমিকদের উপরে সেনাবাহিনীর হামলায় রাতে প্রতিবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টির উপ-নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম সংবাদপত্রে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, আমরা পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, নিরস্ত্র মানুষের ওপর উস্কানিমূলক আচারণ, তা যে কোন মহলেরই হোক না কেন, আমরা আর সহ্য করবো না। এর ফলাফলের দায়িত্ব উস্কানিদাতাদেরই সম্পূর্ণ বহন করতে হবে।
এদিন আরো বেশ কিছু ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে বাংলাদেশের জন্য খাদ্যশস্যবাহী ‘ইরনা এলিজাবেথ’ নামের একটি জাহাজের গতিপথ বদল করে চট্টগ্রাম থেকে করাচী নিয়ে যাওয়া হয়। চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক গুলিবর্ষণ ও অন্যান্য ঘটনা সম্পর্কে সরেজমিন তদন্তের জন্য বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যান।
ঢাকায় বিমানবাহিনীর সাবেক বাঙালী সৈনিকরা স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শপথ নেন সর্বশক্তি ও সম্পদ নিয়োগ করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যেকোন ত্যাগ স্বীকারের।
করাচীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া শাসনতান্ত্রিক প্রশ্নে আলোচনার জন্য ঢাকায় আসার যে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি তা প্রত্যাখান করেছেন। এ প্রসঙ্গে ভুট্টো বলেন, ঢাকা যাওয়ার ব্যাপারে তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে কয়েকটি বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তার কোন জবাব না পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।