Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব ঢাকা চেম্বারের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২২, ১২:৩০ এএম

আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সহজ ও ব্যবসাবান্ধব আয়কর ব্যবস্থা, আয়কর ও মূল্যসংযোজন করের আওতা বাড়ানো, আয়কর সংগ্রহে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, কর ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অটোমেশন, রফতানি বহুমুখীকরণ ও স্থানীয় শিল্পায়ন উৎসাহিতকরণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণের উপর জোরারোপ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে আগামী অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য ঢাকা চেম্বারের প্রস্তাবনাগুলো এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের কাছে পেশ করেন ডিসিসিআই’র সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।

ঢাকা চেম্বার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য এনবিআরের কাছে আয়কর, মূসক ও শুল্ক সংক্রান্ত মোট ৪০টি প্রস্তাব পেশ করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যক্তিখাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিবছর প্রায় ২৭ লাখ মানুষ আয়কর দাখিল করে, যা আমাদের মতো অর্থনীতির জন্য খুবই অপ্রতুল, এমন বাস্তবতায় আগামী ১০ বছরে করদাতার সংখ্যা কমপক্ষে ৮০ লক্ষে উন্নীত করতে এনবিআরকে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি দেশের কর ও শুল্ক ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার উপর জোরারোপ করেন। ব্যবসা পরিচালনায় আঞ্চলিক সক্ষমতা অর্জনের পাশাপাশি দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে করপোরেট করের হার লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির ক্ষেত্রে ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেন, যেটি বর্তমানে রয়েছে যথাক্রমে ২২, দশমিক ৫ শতাংশ এবং ৩০ শতাংশ। এছাড়াও করপোরেট ডিভিডেন্ডের আয়ের উপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ করের পরিবর্তে ১০ শতাংশ কর নির্ধারণের আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি, যা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পুনর্বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে এবং পুঁজিবাজারকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান ভ্যাটের আওতা বর্হিভূত ব্যবসায়ের বার্ষিক টার্নওভারে ঊর্ধ্বসীমা ৩ কোটি টাকা হতে বাড়িয়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন, সেই সঙ্গে পণ্যের মূল্য সংযোজন অথবা মুনাফা অনুপাতে টার্নওভারের উপর ট্যাক্স আরোপের দাবি জানান। এছাড়াও চামড়াজাত পণ্য এবং পাদুকা শিল্পখাতের বন্ড লাইসেন্স প্রাপ্তির দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস করা ও তৈরি পোশাক শিল্পখাতের মতো বন্ড লাইসেন্স প্রতি ৩ বছরের জন্য নবায়ন সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি ইলেকট্রিকাল ভেহিকেল চার্জিং স্টেশন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ দেশীয়ভাবে উৎপাদনের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি প্রদানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে করে দেশে একটি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব অটোমোবাইল শিল্প গড়ে ওঠবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, কর এবং শুল্ক বিষয়ক এনবিআর গৃহীত নীতিমালা এবং কার্যক্রম সম্পর্কে বিশেষ করে দেশের এসএমই খাতের অনেক উদ্যোক্তাই অবগত নন, এমতাবস্থায় এখাতের উদ্যোক্তাদের রাজস্ব নীতিমালা বিষয়ে অবহিতকরণে বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।
তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অনেক ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রাপ্ত সুবিধা হতে বঞ্চিত হবে, তাই সরকার প্রদত্ত বাণিজ্য বিষয়ক সুবিধাদি কাজে লাগিয়ে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশের করদাতারা যেন সহজেই কর দিতে পারে, সেজন্য কর প্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও করজাল সম্প্রসারণে এনবিআর কাজ করছে, সেই সঙ্গে দেশে একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বদ্ধ পরিকর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ