পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বুথে টাকা লোড-আনলোডসহ মেইনটেন্যান্সের দায়িত্ব পালন করছে গার্ডা শিল্ড। আব্দুর রহমান নামে একজন সেখানে চাকরি নেয়ার পর তার নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল আর্থিক প্রতারণায় অংশ নেন। প্রতিদিন বিভিন্ন এটিএম বুথে কৃত্রিম জ্যাম সৃষ্টির মাধ্যমে ৬০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিতো তারা। এক বছরে তিন কোটি টাকা একই কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে আব্দুর রহমানের নেতৃত্বাধীন চক্রটি। সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণের পর শনিবার চক্রটির মূলহোতা আব্দুর রহমানসহ আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গতকাল রোববার কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংক এটিএম বুথের ব্যবস্থাপনা থার্ড পার্টি বা আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের অডিটে এটিএম বুথের টাকার বেশকিছু গরমিল দেখা যায়। ফলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থার্ড পার্টি আগের একটি সিকিউরিটি এজেন্সির (জি-৪ সিকিউরিটি গার্ড এজেন্সি) সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। নতুন করে গার্ডা শিল্ডের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে। কিন্তু অনিয়ম ও অর্থের গরমিল বন্ধ হয়নি। ব্যাংক অডিটে বিষয়টি আসার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও থার্ড পার্টি সিকিউরিটি এজেন্সি গার্ডা শিল্ড র্যাবের শরণাপন্ন হয়। র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি ও ছায়া তদন্তে উদঘাটন করে থার্ড পার্টি পরিবর্তিত হলেও টাকা লোডার ও অন্যান্য কারিগরি দলে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার রাতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৪ এর একটি দল রাজধানীর মিরপুর, হাজারীবাগ, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহমান বিশ্বাস (৩২), তারেক আজিজ (২৫), তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ওরফে সোহান (২৮), রবিউল হাসান (২৭), হাবিবুর রহমান ওরফে ইলিয়াস (৩৬), কামরুল হাসান (৪৩), সুজন মিয়া (৩১) এবং আব্দুল কাদেরকে (৪৩) গ্রেপ্তার করে। অভিযানে উদ্ধার করা হয় দুটি চেকবই, একটি এটিএম কার্ড, চারটি আইডিকার্ড, একটি স্বর্ণের নেকলেস, এক জোড়া বালা, এক জোড়া কানের দুল, একটি আংটি এবং নগদ ৯ লাখ ৪১ হাজার ৫৫৫ টাকা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা পরস্পর যোগসাজশে বেশ কয়েকটি এটিএম বুথ থেকে টাকা আত্মসাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা গত ২/৩ বছর এক সঙ্গে চাকরি করার সুবাদে পরিচিত হন। একপর্যায়ে তারা সমমনাদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। আব্দুর রহমান চক্রটির মূলহোতা। তিনি তার এক সাবেক সহকর্মীর কাছ থেকে বিষয়টি রপ্ত করেন বলে জানান। অন্য সহযোগীরা কন্ট্রোল রুম, লোডিং, কলিং এবং মেইনটেন্যান্সের দায়িত্ব পালন করেণ তারা ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা স্থাপন ও মনিটরিং কাজে নিযুক্ত ছিলেন। তারা ঢাকা শহরের ২৩১টি এটিএম বুথ মেশিনে টাকা লোড করেন। এই ২৩১টি এটিএম বুথ মেশিনে টাকা স্থাপনের জন্য ১৯ জন লোডার নিযুক্ত রয়েছে; যারা প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে অর্থ পৌঁছে দেয়। এছাড়া টেকনিক্যাল এক্সপার্ট, কারিগরি সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কয়েকজন নিয়োজিত থাকত।
তিনি বলেন, চক্রটি লোডিং ট্রে-তে টাকা রাখার সময় ১৯টি ১০০০ টাকার নোটের পরপর অথবা অন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ইচ্ছাকৃতভাবে জ্যাম করে রাখত। কোনো ক্লায়েন্ট এটিএম বুথে টাকা উত্তোলনের জন্য এটিএম কার্ড প্রবেশ করিয়ে গোপন পিন নম্বর দিয়ে কমান্ড করলে ওই পরিমাণ টাকা ডেলিভারি না হয়ে পার্সবিনে জমা হতো। পরে সেই টাকা সরিয়ে নিতো চক্রের সদস্যরা। এক্ষেত্রে মেশিনের একটি কৌশল অবলম্বন করে তারা টাকাগুলো আত্মসাৎ করত। চক্রটি প্রতিদিন ৬০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত কৃত্রিম জ্যাম তৈরির পর আটকে রেখে আত্মসাৎ করত।
এভাবে ৯ মাসে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে দাবি করেছে।
কমান্ডার মঈন বলেন, থার্ড পার্টি হিসেবে গার্ডা শিল্ডের দায় ছিল আর সংশ্লিষ্ট ব্যাংক টাকা লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে নজরদারি করেনি। ব্যাংকের ও সিকিউরিটি এজেন্সির কারও সংশ্লিষ্টতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চক্রে জড়িত পলাতক অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।