পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যোগদান করেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল পেয়েছেন অত্যাধুনিক বিএমডবিøউ গাড়ি। যাতায়াত সুবিধার জন্য সরকারি যানবাহন অধিদফতর পুল থেকে তার জন্য এই গাড়িটি বরাদ্দ হয়েছে।
নতুন সিইসি গতকাল প্রথম দিনের কার্যদিবসে বিএমডবিøউ গাড়িতে (ঢাকা-মেট্রো-ভ-১১-১৯৬৬) চড়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে দায়িত্ব বুঝে নেন। নতুন সিইসি হিসেবে হাবিবুল আউয়াল ২৭ ফেব্রæয়ারি শপথ নেওয়ার পরই পরিবহণ পুল থেকে তার নামে বিএমডবিøউ গাড়িটি বরাদ্দ হয়। এই গাড়িটি হাবিবুল আউয়ালের আগের সিইসি কেএম ন‚রুল হুদাও ব্যবহার করতেন। গাড়িটি ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবরে সিইসির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইসি সচিবালয় থেকে একটি ভালো মানের গাড়ির জন্য চাহিদাপত্র দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সিইসির নামে বিএমডবিøউ গাড়িটি বরাদ্দ হয়।
সাবেক সিইসি কেএম ন‚রুল হুদা গত ১৪ ফেব্রæয়ারি বিদায় নেওয়ার পরই গাড়িটি পরিবহণ পুলে জমা দেওয়া হয়। ২৭ ফেব্রæয়ারি নতুন সিইসি শপথ নেওয়ার পর তার বাসায় গাড়িটি পাঠানো হয়। গতকাল এ গাড়িতে চড়েই তিনি নির্বাচন ভবনে এসে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনের শক্তি অসীম নয়। রাজনৈতিক দলগুলো যদি নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করতে না পারে তাহলে কমিশনের একার পক্ষে ভাল নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আমরা সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে জাতিকে গুড গভর্ন্যান্স এবং ভালো সংসদ গড়ে তোলার চেষ্টা করবো। এদিক থেকে আমাদের কোনও অবহেলা থাকবে না।
সব দলকে মাঠে থাকার আহবান জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, লেভেল প্লেইং ফিল্ড ইসি এককভাবে করতে পারে না। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নিজেদের মধ্যেও একটা সমঝোতা সৃষ্টির চেষ্টা করতে হবে। আমার অভিজ্ঞতা, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা কমে আসে। না হলে কিন্তু দূরত্ব বাড়তে থাকে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাউকে না কাউকে অহংকার ত্যাগ করে আলোচনা করতে হবে। নির্বাচন করতে গেলে আমাদের ভ‚মিকা কী হবে? আমরা কতটা সংযত থাকবো? পারস্পরিক ঐক্যে সহযোগিতামূলক আচরণ করবো?
তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের যে দায়িত্বটা রয়েছে সেটা যদি শেয়ার না করেন, তাহলে নির্বাচন কমিশন এককভাবে যে কাজ করবে সেখানে সীমাবদ্ধতা দেখা দেবে। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আমরা সহযোগিতা করবো। রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সহায়তা না করে, পলিটিক্যাল লিডারশিপের যদি ন্য‚নতম সমঝোতা না থাকে, আমি তো তাদের মুরুব্বি হতে পারবো না। উনারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি জ্ঞানী, অনেক বেশি অভিজ্ঞ। আমাদের দায়িত্ব আছে, আমরা অনুনয়-বিনয় করবো, আপনারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি করেন। একটা চুক্তিবদ্ধ হন যে নির্বাচনটা সুন্দরভাবে পরিচালনা করবেন, ওখানে সহিংসতা থাকবে না, কেউ কাউকে বাধা দেবে না।
নতুন সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন অর্থবহ করার জন্য স্ব-স্ব অবস্থান থেকে করণীয় না করলে, উনারা নিজেদের প্রশ্ন করবেন নাকি আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করবেন? তাহলে আমি সবিনয়ে বলবো, আমাদের ক্ষমা করবেন। আপনাদের কিছু যদি ব্যর্থতা থাকে তবে সেটাও স্বীকার করুন। সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রিস্টোর করুন। একটা ভালো সংসদ উপহার দেওয়ার চেষ্টার ত্রæটি থাকবে না।
আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় থাকে, সেই নির্বাচনে বিএনপি না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, বিএনপি যদি এমন ঘোষণা দিয়েও থাকে, আমরা কী তাদের চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানাবো না? কোনও কথাই শেষ কথা নয়। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই।
তিনি বলেন, আজকে আমরা যে সভা করেছি সেটা নিজেদের মধ্যে পরিচিতি পর্ব ছিল। কমিশনের কর্মপরিধি সম্পর্কে সচিব আমাদের অবহিত করেছেন। সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমরা খুব অভিজ্ঞ নই। তবে কিছুটা অস্বচ্ছ হলেও ধারণা আছে। এখানে আমাদের অভিজ্ঞতা ও দায়িত্ব ভিন্ন হতে হবে। নির্বাচন পরিচালনার টপ লেভেল দায়িত্ব ইসিকে নিতে হবে।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা আন্তরিকতা, সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবো। আমরা কতটা সৎ ছিলাম বা অসৎ ছিলাম, কতটা দায়িত্বপূর্ণ ছিলাম বা দায়িত্বহীনভাবে কর্তব্য পালন করেছি, সেটি পরে মূল্যায়ন করতে পারবেন। কিন্তু আমরা অন্তরের অন্তস্তল থেকে আশা ও প্রত্যাশা করি, সকলে নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণতন্ত্রকে সুসংহত করার চেষ্টা করবেন।
সিইসি বলেন, যারা নির্বাচন করবেন তাদের জন্য অনুক‚ল পরিবেশ তৈরি করার দায়িত্ব কমিশনের রয়েছে। কর্মপদ্ধতি কী হবে সেটি ঠিক করিনি। তবে জানতে কিছু জ্ঞান আহরণ করেছি। সাংবিধানিক শপথ অনুযায়ী, দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যর্থতা, সফলতা মূল্যায়নের প্রশ্ন আসবে। গণমাধ্যম থেকে আমরা জ্ঞান আহরণের চেষ্টা করি। এই মুহ‚র্তে আগের কমিশনের দোষ ত্রæটি নিয়ে বলতে চাচ্ছি না। কোনও শিক্ষনীয় থাকলে আমরা সেটি করবো।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, যদি গ্রাউন্ড লেভেলে নির্বাচন ব্যবস্থা দুর্বল হয় তাহলে সমস্যা তৈরি হয়। আমরা সবাইকে নির্বাচনমুখী করতে চাই। তাতে আমাদের কোনও ত্রæটি থাকবে না। আপনার কি মনে হয় আমি রাতে গিয়ে সিল মারবো? আমি সরকারি কর্মকর্তা ছিলাম, অনেকেই তো ছিলেন। এটা আপেক্ষিক বিষয়। অনুক‚ল পরিবেশের কথা বলেছি। নির্বাচন কমিশন এককভাবে সে লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বসবো, অবজারভ করবো। আমি গুরুত্ব দেই ভোটকেন্দ্রকে। প্রতিটি দলের স্ব-স্ব এজেন্ট আছে, তাদের তাড়িয়ে দিলে জানাতে হবে। তাদের সেখানে অবস্থান করতে হবে। আমরা আশাবাদী, আমাদের ওপর আস্থা রাখেন। আমরা দিনের ভোট রাতে হতে দেব না, দিনের ভোট দিনেই হবে।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে কি সিদ্ধান্ত হবে সেটি এখনই বলতে পারবো না। আমরা আলোচনা করবো। ইভিএমের ভালো-মন্দ আলোচনা করবো। আমি নিজেও ইভিএম ভালো করে বুঝি না। ব্যালটের ভালো মন্দটাও বসে দেখবো। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। আমরা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইনগুলোও পর্যাপ্ত কিনা সেটি দেখবো। নির্বাচন পরিচালনায় আমরা গুরুত্ব দেবো। আমরা সেনসেটাইজ করবো। পর্যবেক্ষণও করবো।
এ সময় নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।