পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেশ কিছুদিন থেকেই তুঙ্গে রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইউক্রেন সীমান্তে ‘পূর্ণমাত্রায়’ আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সেনাদের অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই যুদ্ধের পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা ও বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যেই এ পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষও এই সংঘাত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে এই যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে মন্তব্য তুরে ধরেছেন। আবার অনেকে ইউক্রেনের সমর্থনে নিজের মতামত পোস্ট করেন। সব মিলিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে উত্তপ্ত সোশ্যাল মিডিয়া।
রাশিয়া-ইউক্রেন জটিলতা নিয়ে শুরু থেকেই সরব আমেরিকা। ইউক্রেনের দিকে রাশিয়া নজর দেওয়ার সময় থেকেই মস্কোর কড়া সমালোচনা করছে ওয়াশিংটন। রুশপন্থী ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ায় আমেরিকা একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দেয় রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এনিয়ে আমেরিকা ও তার পশ্চিমা মিত্রদের সাথে টানটান উত্তেজনা চলছে। আবার রাশিয়ার পক্ষে নীরব সমর্থন জানিয়েছেন সুপার পাওয়ার চীনসহ মিত্র দেশগুলো।
ভয়াবহ এই সংকট নিয়ে জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ ফেসবুকে এক প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘‘ইউক্রেনের উপর রাশিয়ান হামলার দায় কোনভাবেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার এলাই নেটো দেশগুলো এড়াতে পারে না। কেননা পুতিন মিজাইল হামলার আগে ইউক্রেনের দুইটি অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করে প্রথমে নেটোর প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করেছে। সে সময় যদি নেটো কার্যকর ভূমিকা রাখত তাহলে আজকে পুটিন ইউক্রেনে মিসাইল হামলা চালাতে দুইবার ভাবতো। কিন্তু ইউক্রেনের দুইটা অঞ্চল স্বাধীন ঘোষণা করার দেয়ার পরে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো দেশগুলোর ভূমিকা ছিল ফাঁকা কলসির মত। আর এটা বুঝতে পেরেই পুটিন তার উচ্চাভিলাষ পূরণে কালক্ষেপণ করে নি। কারণ তিনি বুঝে গেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো যতই বাগাড়ম্বর করুক বস্তুত: তারা রাশিয়ার মতো সুপার পাওয়ারের সরাসরি মুখোমুখি কখনো হতে চাইবে না।’’
সাংবাদিক মুনির হোসাইন বিশ্লেষণ তুলে ধরে লিখেছেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনে হামলা শুরু করলেন স্বৈরাচারের নাতিন, আমেরিকার দীর্ঘদিনের সতীন, এই ব্লাদিমির পুতিন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আশঙ্কাই ঠিক হলো। পৃথিবীতে সব সময়ই সংঘাতকালীন সময়ে এক নায়কদের জনপ্রিয়তা বাড়ে। দীর্ঘমেয়াদে এর সুবিধা নেয় অন্য একটি পক্ষ। ইরাকে যুদ্ধকালীন সময়ে সাদ্দাম হোসেনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা পরিলক্ষিত হয়েছে। ওই সময়ে সাদ্দামের নামে বিভিন্ন স্থাপনা এবং বীরত্ব বুঝাতে বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর মানুষ সন্তানের নাম সাদ্দাম রাখতে শুরু করে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে বাহবা পাচ্ছেন পুতিন। এর অন্যতম কারণ ইউক্রেনে আগ্রাসন নয়, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এক মেরু কেন্দ্রীক বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মতো ঝুঁকি নেয়া। কিন্তু এই যুদ্ধের অনেক বেশি সুফল পাবে চীন। কারণ পশ্চিমাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে অনেকাংশেই চীনের উপর নির্ভরশীল হতে হবে। যা চীনের অবস্থানকে আরও সুসংহত করবে। আজকের পৃথিবীতে ভৌগলিক সাম্রাজ্যবাদের চেয়ে অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ খুবই কার্যকর। এজন্য পশ্চিমা দেশগুলোও দেশ দখলের চেয়ে বাজার দখলে বেশি তৎপর। কিন্তু এক নায়করা এতকিছু ভাবেন না। চারিদিকের হাত তালি এবং চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে হয়তো পারমানবিক হামলা করতেও পিছপা হবে না পুতিন। আর শেষ পর্যন্ত বিশ্ববাসীকে এই যুদ্ধের কী মূল্য দিতে হয়, তার অপেক্ষায়।’’
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে হতাশা প্রকাশ করে মো রিয়াদ জমাদার লিখেছেন, ‘‘বিশ্ব মোড়লদের মধ্যকার এই কুস্তিখেলা ভালোই উপভোগ করা যাবে! দিন শেষে এরাই আমাদেরকে- মানবাধিকার, আইনের শাসন, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও জঙ্গিবাদ নিয়ে নানান ধরনের নীতিবাক্য শুনাবে! এদের এতসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে কখনোই জঙ্গিবাদ হিসেবে দেখা হয় না! এরা অন্যকে বর্বর ভাবে! অথচ, এরাই তার মগঢালে বাস করছে!’’
সুজন হাওলাদার লিখেছেন, ‘‘রাশিয়া ভালো করে জানে পশ্চিমা হালারা রাশিয়াকে গিলে খাবে। যদি না এই ইউক্রেন তাদের দখলে না নেয়। তাই পুতিন এই যুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। যাইহোক আমি রাশিয়ার পক্ষে, কেন না পশ্চিমারা অনেক দেশ নিয়ে খেলেছে, তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য। এটা আর হতে দিয়ে চাই না।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।