Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পোশাক তৈরিতে অপচয়ের হার পুনর্নির্ধারণ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

দেশের রফতানিমুখী পোশাক কারখানাগুলোয় নব্বইয়ের দশকে সাধারণ নকশার মৌলিক টি-শার্ট তৈরি করা হতো। ফলে উৎপাদন অপচয়ের ক্ষেত্র ছিল বেশ সীমিত। এখন কেবল সাধারণ নকশার টি-শার্টেই থেমে নেই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত। বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের, নানা নকশার পোশাক এখানে তৈরি হচ্ছে। নকশা পরিবর্তনের কারণে সময়ের সঙ্গে বেড়েছে উৎপাদন অপচয়ের ক্ষেত্র, বেড়েছে উৎপাদন অপচয়। এ প্রেক্ষাপটে শিল্প মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে গত ডিসেম্বরেই অপচয়ের সর্বোচ্চ হার পুনর্নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সম্প্রতি সেই হারেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। অপচয়ের নতুন হার ঠিক করে দিয়ে আগের আদেশের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে নতুন আদেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি-৯ শাখা।
এর আগে ১৯৯৮ সালে পোশাক পণ্যের উৎপাদন অপচয়ের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সর্বোচ্চ হারের আদেশ জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত হারে সন্তুষ্ট হতে পারেননি পোশাক শিল্প মালিক প্রতিনিধিরা। পোশাক পণ্যের নকশার বৈচিত্র্য ও মূল্যসংযোজন মাত্রা বৃদ্ধির যৌক্তিকতা উত্থাপন করে পুনর্নির্ধারিত হারের পাশাপাশি পণ্যভিত্তিক সর্বোচ্চ হার কাঠামোতেও পরিবর্তনের দাবি তোলেন তারা। সেসব দাবি আমলে নিয়ে পুনর্নির্ধারিত হারও পরিবর্তন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পুনর্নির্ধারিত হারকে স্থলাভিষিক্ত করা আদেশটি গত রোববার হাতে পেয়েছেন শিল্প মালিকরা।
১৯ ডিসেম্বর জারি হওয়া আদেশে টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ট্রাউজার, শর্টস, স্কার্ট, পাজামা ধরনের পণ্যগুলোকে বেসিক নিট হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। এ ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে অপচয়ের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ করা হয় ২৭ শতাংশ। আদেশটিতে এসব পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়াগুলোতেও অপচয়ের হার সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। নিটিংয়ে ১ শতাংশ, ডায়িং ও ফিনিশিংয়ে ৯, কাটিংয়ে ১৩ ও ভ্যালু অ্যাডিশনে ১ শতাংশ। সুইং, ওয়াশিং, ফিনিশিং এবং ইন্সপেকশনের ক্ষেত্রে অপচয় হার নির্ধারণ হয় সর্বোচ্চ ১ শতাংশ।
ওই আদেশকে স্থলাভিষিক্ত করা গতকালের আদেশে টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ট্রাউজার, শর্টস, স্কার্ট, পাজামা ধরনের বেসিক নিট পণ্যে অপচয়ের সর্বোচ্চ হার ২৭ থেকে বৃদ্ধি করে ২৯ শতাংশ করা হয়েছে। প্রক্রিয়াভিত্তিক অপচয়ের আলাদা কোনো হার উল্লেখ না করে বলা হয়েছে বেসিক নিট পণ্যের সুতা থেকে কাপড় তৈরিতে অপচয়ের হার ১২ শতাংশ এবং কাপড় থেকে পোশাক তৈরিতে ১৭ শতাংশ হবে অপচয়ের হার।
আগের আদেশে রমপার্স, ট্যাংক টপ, ড্রেস, গাউন, হুডি বা লঞ্জারির মতো বিশেষ ধরনের পোশাকের ক্ষেত্রে অপচয়ের সর্বোচ্চ হার ছিল সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ। এসব পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়াগুলোয় নিটিংয়ে ২ শতাংশ, ডায়িং অ্যান্ড ফিনিশিংয়ে ৯, কাটিংয়ে ১৫, ভ্যালু অ্যাডিশনে ১ শতাংশ অপচয়ের হার নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। এছাড়া সুইং, ওয়াশিং, ফিনিশিং এবং ইন্সপেকশনের ক্ষেত্রে অপচয় হার নির্ধারণ হয় সর্বোচ্চ ১ শতাংশ।
স্থলাভিষিক্ত আদেশে এ ধরনের বিশেষ পোশাকের ক্ষেত্রে অপচয়ের সর্বোচ্চ হার ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রক্রিয়াভিত্তিক অপচয়ের আলাদা হার উল্লেখ না করে বলা হয়েছে, সুতা থেকে কাপড় তৈরিতে ১২ শতাংশ এবং কাপড় থেকে পোশাক তৈরিতে অপচয়ের হার হবে ২০ শতাংশ।
এছাড়া ডিসেম্বরের আদেশে সোয়েটার্স, জাম্পার্স, পুলওভার্স, কারডিগানস, ভেস্টস, সকস, গ্লাভসের মতো পণ্যকে সোয়েটার ও সকস হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ ধরনের পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে অপচয়ের সর্বোচ্চ হার ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। স্থলাভিষিক্ত আদেশে এ ধরনের পণ্যগুলোর সর্বোচ্চ অপচয় হার ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। পুরোনো আদেশে প্রক্রিয়াভিত্তিক অপচয়ের ক্ষেত্রে নিটিংয়ে ২ শতাংশ, লিংকিং, ওয়াশিং ও ফিনিশিংয়ে ১ শতাংশ করে অপচয়ের হার নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবার এ পণ্যগুলো ইন্সপেকশনের অপচয়ের হারও নির্ধারণ হয় সর্বোচ্চ ১ শতাংশ। তবে প্রক্রিয়াভিত্তিক কোনো অপচয়ের হার স্থলাভিষিক্ত আদেশে উল্লেখ নেই।
আদেশে বলা হয়েছে, অপচয়ের পুনর্নির্ধারিত হার চলতি অর্থবছর ২০২১-২২ এর জুলাই মাস থেকে কার্যকর হবে, যা বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বা পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ