Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নদী রক্ষায় আইন বাস্তবায়নের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৬ এএম

নদী রক্ষায় আদালতের অনেক যুগান্তকারী রায় আছে। গুরুত্বপূর্ণ আইন ও নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে প্রয়োগ নেই। তাই অধিকাংশ নদী দখল ও দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে। নদী রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, আইনকে কার্যকর করতে হবে। গতকাল শনিবার ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের আয়োজনে নদী রক্ষায় আইন বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে আলোচকেরা এসব কথা বলেন।

বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী ওয়াশপুরে অনুষ্ঠিত এই নদীকথনে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, একটা দেশের সম্পদ হলো নদী। এই নদীর সঙ্গে অনেক জীবসত্তার সম্পর্ক রয়েছে। নদীকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে নদীর ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। নদীর গুণগত মান ঠিক করা উচিত। বিশ্বনেতারা যখন কপ বা জলবায়ু-সংক্রান্ত অন্যান্য সম্মেলনে বসবে, তখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আইনি নীতিমালা তৈরি করতে হবে। অন্যথায় বিশ্বের মানুষ এক বিশাল পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। আমাদের নদী রক্ষা না করতে পারলে নদীমাতৃক বাংলাদেশের মাকেই মেরে ফেলা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মাদ গোলাম সারোয়ার বলেন, যেখানে কারখানা আছে সেখানে পরিবেশদূষণ ঘটবেই। আইনের মাধ্যমে সেটাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। সেই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার যতগুলো উপাদান তা আমাদের আইনে রয়েছে। ২০১৯ সালে নদীকে “জীবন্ত সত্তা” ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে তা আমাদের জন্য একটি যুগান্তকারী রায়। এই রায় সারা বিশ্বে মডেল হয়ে আছে।
বাহাত্তরের সংবিধান উল্লেখ করে গোলাম সারোয়ার বলেন, এটি রাষ্ট্রকে আরেকবার স্মরণ করিয়ে দেয় যে, নদী একটি প্রাকৃতিক সম্পদ এবং সাধারণ মানুষের সম্পদ। ফলে কেউ এটাকে ধ্বংস করতে পারবে না। এটার সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, দেশের নদী রক্ষার জন্য একটি কমিশন করা হয়েছে। সেই কমিশন সুপারিশ করতে পারে। কিন্তু কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারে না। এটি এখন দন্তহীন বাঘে পরিণত হয়েছে।
নদী রক্ষায় আদালতের ভূমিকা প্রসঙ্গে ড. সৈয়দা নাসরিন বলেন, নদী রক্ষায় আদালতের ভূমিকা সব সময় ইতিবাচক। কোর্ট এরই মধ্যে নদী রক্ষায় অনেকগুলো যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন।
বর্তমানে বিভিন্ন নদী অবৈধভাবে দখল-দূষণ যেটুকু কমেছে, সেখানেও আদালতের ভূমিকা রয়েছে।
স্থানীয় কমিউনিটির প্রতিনিধি সারমিন রহমান বলেন, তিনি ছোটবেলায় নদীকে যেমন জীবন্ত দেখেছেন এখন তা পলিথিন, শিল্পকারখানার বর্জ্য দ্বারা ভর্তি হয়ে ভয়াবহ রকম দূষিত হচ্ছে। নদীদূষণ নিয়ে যত রকম গবেষণা হয়, সেখানে স্থানীয় মানুষজনদের সম্পৃক্ত করা হয় না। যে কারণে আইনপ্রণেতা ও নীতিনির্ধারকদের কাছে স্থানীয় মানুষজনদের সমস্যা ও মতামত পৌঁছায় না।
স্থানীয় কমিউনিটির প্রতিনিধি মানিক হোসেন বলেন, সীমানাপিলার দেওয়ার ফলে জমির দাম অনেক গুণ বেড়ে গেছে। যার ফলে নদী দখলকারীরা তা ভরাট করে লাভবান হচ্ছে। নদী ভরাট বন্ধ করতে সরকারকে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ