পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা চালু করার মাধ্যমে সবুজ নীতি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক কারখানা এবং টেক্সটাইল শিল্পখাত। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে পানির ব্যবস্থাপনায় তাদের টেকসই পদ্ধতি পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে আজ রাজধানীতে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে উল্লেখ করেন বক্তারা।
বক্তারা বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতার ওপর কারণে শিল্পখাতে অধিক পরিমাণ পানির ব্যবহার পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক বিষয় এবং ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে যেনো টেকসই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায় সে অনুযায়ী এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
‘শিল্পখাতে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ - পানি ব্যবস্থাপনায় টেকসই পদক্ষেপ’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠক যৌথভাবে আয়োজন করে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। রাজধানীর ওয়েস্টিন ঢাকায় এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থার ওপর আলোকপাত করে শিল্পখাতে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আলোচনার সূচনা করতেই এই গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করা হয়। টেকসই সাপ্লাই চেইন ও পরিবেশগত প্রভাবের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সুযোগ ও এর চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন বক্তারা। পাশাপাশি, আলোচনায় পোশাক কারখানায় বৃষ্টির পানি সংগ্রহের সর্বোত্তম অনুশীলনীগুলো উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান এবং গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ওয়াটারএইডের পলিসি ও অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর পার্থ হেফাজ শেখ। অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইয়ুথ লিডারস অ্যাসোসিয়েশনের (বায়লা) সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম।
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “একটি প্রগতিশীল সংগঠন হিসেবে বিজিএমইএ টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যাপারে কারখানাগুলোকে সক্রিয়ভাবে উৎসাহিত করছে। ব্যবসায়িকভাবে শিল্পখাতগুলোর বৃষ্টির পানির ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন এবং ভূগর্ভস্থ পানি নিষ্কাশন ও এর ওপর নির্ভরতা কমাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা উচিত।”
ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, “ভূগর্ভস্থ পানি কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে পানি নিয়ে আসন্ন সঙ্কট সমাধানে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিয়ে সবার কাজ করা উচিত। শিল্পখাতের ক্ষেত্রে কারখানাগুলোর ছাদের ওপরে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে, যা সহজেই বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজে ব্যবহার করা যায়। এবং এর মাধ্যমে ব্যবসার জন্য ক্রমবর্ধমান পানির প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সমস্যা মেটাতে এ খাত টেকসই সমাধান নিয়ে আসতে পারে। কারখানার মালিকদের বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণে উৎসাহিত করার মাধ্যমে আমাদের পানি সম্পদ রক্ষায় সহায়তায় অনন্য নজির স্থাপনের জন্য বিজিএমইএ -কে ধন্যবাদ। পানি ও পরিবেশ সুরক্ষায় বিভিন্ন প্রচেষ্টা জোরদারে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতের সাথে কাজ করার ব্যাপারে ওয়াটারএইড প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইয়ুথ লিডারস অ্যাসোসিয়েশনের (বায়লা) সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম বলেন, “টেকসই ব্যবস্থাপনা ও পানি সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় অনেক স্মার্ট শিল্পখাত কাজ করা শুরু করেছে। ভবিষ্যৎ বিপর্যয় প্রতিহতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা হ্রাসে শিল্পখাতগুলো বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সরক্ষণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গ্রহণ করছে। দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে সম্ভাব্য চালিকাশক্তি হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। তাই, তরুণদের মাঝে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সরক্ষণ নিয়ে প্রচারণা চালানো অত্যন্ত জরুরি, যাতে করে তারা যেনো এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেসি করতে পারে এবং ভবিষ্যতে পানি সঙ্কট হ্রাসে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।”
অতিথি, উন্নয়ন সহযোগী, জাতীয় পর্যায়ের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং সাপ্লাই চেইন সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা ছাড়াও অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম ও শিক্ষাক্ষেত্রের প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন।
হাসিন জাহানের কাছে বিজিএমইএ’র সাসটেইনেবিলিটি প্রতিবেদন হস্তান্তর এবং ওয়াটারএইড ও আইটিএন-বুয়েটের অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ সংশ্লিষ্ট পেশাদারদের মধ্যে সনদ বিতরণের মাধ্যমে গোলটেবিল আলোচনা শেষ হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।