পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে চলতি মাসের শেষের দিকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় খুলে দেয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এখন একটু খারাপ সময় গেলেও আমরা আশা করি এ মাসের শেষে দিকে অবস্থার একটু পরিবর্তন হবে এবং সেই সময় আমরা স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবার খুলে দিতে পারবো।
গতকাল ২০২১ সালের এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হয়ে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন। এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংশ্লিষ্ট ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানগণের কাছ থেকে পরীক্ষার ফলাফলের পরিসংখ্যান ও প্রতিবেদন গ্রহন করেন। সরকার সর্বস্তরের মানুষকে সুরক্ষার জন্য টিকা দেওয়ার যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার আওতায় এসে সকলকে টিকা গ্রহণের আহ্বান অনুষ্ঠানে পুণর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
টিকা গ্রহণে অনেকের অনীহার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে আমরা খুলতে পারি সেজন্য টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কাজেই যারা এ পর্যন্ত টিকা নেননি তাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে-আপনারা টিকা নিয়ে নেবেন। এই ভ্যাকসিন নিলে পরে করোনা ধরলেও সেটা ওরকম খারাপ পর্যায়ে যাবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছিল বলেই করোনাকালেও অনলাইনে এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়েছে। তথাপি এই করোনাকালে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে পরিবারগুলো ছোট হয়ে আসার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীকে একাকীত্বে ভূগতে হয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, অনলাইন বা টেলিভিশনে তার সরকার শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে সেটা ঠিক কিন্তু স্কুল কলেজ বা বিশ^বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার যে নির্মল আনন্দ প্রাপ্তি তা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ছিল। তিনি বলেন, যাহোক যখনই আমরা করেনাকে একটু নিয়ন্ত্রনে আনতে পেরেছি তখনই স্কুলগুলো চালু করেছিলাম কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে- আবার নতুন সংক্রমণ দেখা দিল। সরকার ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সরাসরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু ২০২২ সালে এসে এই ফেব্রুয়ারি মাসের আগ থেকে আবার অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, আমরা খুব দ্রুত সমাধান করতে পারবো। ইতোমধ্যে আমরা টিকাও দিচ্ছি। যে সমস্ত ছেলে-মেয়ের বয়স ১২ বছরের ওপরে তাদেরকেও টিকা দেয়া হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী স্বাগত ভাষণ দেন। মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এছাড়াও, আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে প্রথমবার সরকার গঠনের পর দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি অনীহা প্রত্যক্ষ করে তাঁর সরকার বিজ্ঞান শিক্ষায় ওপর গুরুত্ব দেয় এবং দেশে ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। পাশাপাশি, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর শিক্ষার বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে জেলায় জেলায় সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ^বিদ্যালয়, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয়সহ টেক্সটাইল, আরবি, মেরিটাইম, এভিয়েশন এন্ড এরোস্পেস বিশ^বিদ্যালয় এবং বিভাগীয় পর্যায়ে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে তাদের যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাই এর লক্ষ্য। প্রত্যেকটি উপজেলায় যেখানে কোন সরকারি স্কুল-কলেজ ছিল না, সেখানে একটি করে সরকারি স্কুল এবং কলেজ করা হয়েছে।
তিনি এ সময় বিজ্ঞান ও চিকিৎসা শাস্ত্রে গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আমরা বিজয়ী জাতি এবং মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি। এই বিজয়ের ইতিহাস সরকার আমাদের শিক্ষা কারিকুলামে অর্ন্তভূক্ত করেছে। আমরা যদি বিজয়ের ইতিহাস না জানি তাহলের আমাদের মাঝে আন্তবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাবোধ জন্মাবে না। তিনি যুব সমাজকে শুধু চাকরিমুখী না হয়ে সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে নিজেরা উদ্যোক্তা হবার মাধ্যমে অন্যের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
ভাষা আন্দোলন বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলন শুরু করেছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শেখ মুজিব শুরু করেছিলেন এই আন্দোলন। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাভাষা, মায়ের ভাষা, মাতৃভাষায় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
গতকাল বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমির ৫৬তম ব্যাচ ক্যাডেটদের ‘মুজিববর্ষ গ্র্যাজুয়েশন প্যারেডে’ প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের মেরিন অ্যাকাডেমি অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দুজন শ্রেষ্ঠ ক্যাডেটকে ‘প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক’ এবং ‘বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন পদক’ প্রদান করেন।
ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামের পথ বেয়ে আমরা বাঙালি, আমাদের আলাদা জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ পরিবহন সমুদ্রপথেই হয়ে থাকে। আমাদের বঙ্গোপসাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। তাই বিশ্ব অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে মেরিন ক্যাডেটদের ভূমিকা অপরিসীম। জীবন ধারণের জন্য খাদ্য, জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ, শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পরিবহন বিঘ্নিত হলে গোটা বিশ্বটাই স্থবির হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।