Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জটিল পদ্ধতি ও সমন্বয়হীনতায় বঞ্চিত সিএমএসএমই খাত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:১৪ পিএম

জটিল ঋণ বিতরণ পদ্ধতি এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার অভাবেই বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও সরকার ঘোষিত ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে কাক্সিক্ষত মাত্রায় ঋণ সহায়তা পাচ্ছে না কুটির, অতিক্ষুদ্র,ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (সিএমএসএমই)। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ব্যাংক হতে সিএমএসএমই ঋণ ও প্রণোদনা প্যাকেজ প্রাপ্তির পদ্ধতি এবং প্রস্তুতি শীর্ষক ভার্চুয়াল কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে। কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (এসএমইএসপিডি) মো. জাকের হোসেন অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, শিল্পখাতে ৮০ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ৪৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে সিএমএসএমই খাত। তবে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও নীতিগত সহায়তার অভাবে সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সম্ভাবনা ও কর্মদক্ষতার পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছে না। তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমইদের ব্যবসা-বাণিজ্যের পুনরুজ্জীবন, সম্প্রসারণ ও সর্বোপরি আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রণোদনা প্যাকেজের দুই ধাপে মোট ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সিএমএসএমই সংজ্ঞায়নের জটিলতা, সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় নথিপত্রের অভাব, জটিল ঋণ বিতরণ পদ্ধতি, উদ্যোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকা, ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল সম্পর্ক, জামানত সংক্রান্ত সমস্যা ও এসএমই ডাটাবেইজের অনুপস্থিতির কারণে ঘোষিত প্যাকেজের আওতায় সহায়তা প্রাপ্তিতে ব্যর্থ হয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।

সে কারণেই প্রণোদনা প্যাকেজের অর্ধেকের বেশি ঋণ এখনো বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের পুনরুজ্জীবিত করতে এই প্রণোদনা প্যাকেজের যথাযথ বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই বলে মত প্রকাশ করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (এসএমইএসপিডি) মো. জাকের হোসেন বলেন, দেশের অর্থনীতিতে সিএমএসএমই খাতের অবদানের বিষয়টি মাথায় নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংক করোনা মহামারি মোকাবিলায় এ খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ইতোমধ্যে দুদফায় ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে স্থানীয় পর্যায়ে এ ঋণ বিতরণের হার সন্তোষজনক নয়।

 

তিনি বলেন, প্রথম ধাপের ২০ হাজার কোটি টাকা থেকে ইতোমধ্যে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ধাপের ২০ হাজার কোটি টাকা থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ৯ তারিখ পর্যন্ত মাত্র ৬ হাজার ২১৭ কোটি টাকা সিএমএসএমই খাতে বিতরণ করা হয়েছে। যা প্রদত্ত প্রণোদনা প্যাকেজের মাত্র ৩১ শতাংশ। যা আসলেই কাম্য নয়।

তিনি মনে করেন, মাঠ পর্যায়ে উদ্যোক্তা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভ্রান্ত ধারণার কারণেই ঋণ বিতরণের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এসএমই খাতকে এগিয়ে নিতে হলে তাদের অবশ্যই ব্যাংকমুখী করে হবে ও সত্যিকারের উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রধান, বিনিয়োগ প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিএমএসএমইদের সঠিক সংজ্ঞায়ন ও প্রকৃত ডাটাবেইজের অভাবেই ঋণ বিতরণে বেশ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। শিল্পের কোন খাতে নিজেদের ব্যবসায়িক কর্মকা-ে বিবেচিত হয়, সে বিষয়ে উদ্যোক্তাদের সঠিক ধারণা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আরমান হকের সঞ্চালনায় পরিচালিত কর্মশালার মুক্ত আলোচনায় ঢাকা চেম্বারের প্রায় ১০০ সদস্য ভার্চুয়ালি যোগদান করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ