পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি দলের নেতাদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে সভা-সমাবেশে সরকারের উন্নয়ন প্রচার করা এবং ভোটের কথা মাথায় রেখে সব স্তরে নতুন কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার গণভবনে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে সূচনা বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন, চলমান রাজনৈতিক ঘটনাবলি, র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার-ইসি ও অন্যান্য কমিশন গঠনের লক্ষ্যে গঠিত সার্চ কমিটিতে দলটিতে নাম পাঠাতে প্রত্যেক প্রেসিডিয়াম সদস্যদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১০টি করে নাম নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। বৈঠকে উপস্থিত সভাপতিমন্ডলীর সদস্যরা পৃথক পৃথক কাগজে নামের তালিকা দলীয় সভানেত্রীর কাছে জমা দেন। এসব নামের মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ ‘কমন এবং গ্রহণযোগ্য’ নামগুলো সার্চ কমিটিতে পাঠাবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। বৈঠকের উপস্থিত একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, পৃথক পৃথক নাম দেওয়া হলেও সর্বোচ্চ ৪০-৪৫ জনের নামের তালিকা দলীয় সভানেত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই নাম থেকে ১০ জনের শর্টলিস্ট পাঠানো হবে সার্চ কমিটিতে। এ জন্য দলীয় সভানেত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ইসিতে বসাতে আওয়ামী লীগের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি, বিচারপতি, সাবেক সচিব, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যানসহ বিশিষ্টজনেরা।
ইসি গঠনে অনুসন্ধান কমিটিতে দলের পক্ষ থেকে নাম দেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয় বলে একাধিক নেতা জানান। তাঁরা বলেন, দলীয় প্রধান বলেছেন, ইসি গঠনে সংসদে গণতান্ত্রিকভাবে আইন পাস হয়েছে। আইন পাসের আগে বিভিন্ন দলের সংশোধনী গ্রহণ করা হয়েছে। এখন ইসি গঠনের সময় এসেছে। অনুসন্ধান কমিটিকে সহযোগিতা করতে চায় আওয়ামী লীগ।
বৈঠক সূত্র জানায়, আলোচনার একপর্যায়ে দলের নেতাদের কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য কমিশনার পদে তাঁদের পছন্দের নাম দেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সবকিছু গণতান্ত্রিকভাবে হওয়া উচিত। আপনারা নাম দেন। এ সময় নেতারা কাগজে নিজেদের পছন্দের নাম লিখে দেন। তবে নামের তালিকা চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দলীয় প্রধানকেই দেন নেতারা। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের দেওয়া নামগুলো একটা খামে ভরে রাখা হয়। পরে তিনি বলেন, যতগুলো নাম এসেছে, তা পরে সময় নিয়ে দেখবেন, এরপর চূড়ান্ত তালিকা করবেন।
বৈঠকের আরেকটি সূত্র জানায়, নামের তালিকায় উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেন, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, সাবেক ধর্ম সচিব নুরুল হক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভুইয়া, সাবেক অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ, সাবেক পিএসসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, সাবেক স্বাস্থ্য ও নিবাচন কমিশন সচিব মো সিরাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, সাবেক সেনা প্রধান ইকবাল করিম ভুইয়া, সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক গোলাম রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সালদার হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন তুলি, সাবেক ইসি যুগ্ম সচিব আবুল কাশেম।
এছাড়া দলের কার্যক্রম গতিশীল করতে ২০২০ সালের অক্টোবরে দেশের আট বিভাগের জন্য জ্যেষ্ঠ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে আটটি সাংগঠনিক কমিটি করা হয়েছিল। বৈঠক সূত্র বলছে, এই কমিটিগুলোকে গতকালের বৈঠকে আরও তৎপর হওয়ার তাগিদ দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। যেসব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির মেয়াদ পেরিয়ে গেছে, সেগুলোতে দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দেন তিনি। এ সময় নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংগঠনকে গড়ে তুলতে হবে। ভালো নেতৃত্বকে এগিয়ে আনতে হবে।
বৈঠক সূত্র জানায়, দলীয় প্রধান বলেছেন সরকারের অর্জন সম্পর্কে জানাতে হবে। কারণ, মানুষ সবকিছু ভুলে যায়। তাদের বারবার স্মরণ করিয়ে দিতে হয়। সভা-সমাবেশ করে মানুষকে জানাতে হবে কেন তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন আর কেন বিএনপি বা অন্যদের ভোট দেওয়া ঠিক হবে না।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর জয়ী হওয়া নিয়েও বৈঠকে কথা উঠে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন নারায়ণগঞ্জের ভোট দলের নেতা-কর্মী, বিরোধী দল ও বিদেশিদের জন্য একটা দৃষ্টান্ত। দলের জন্য দৃষ্টান্ত হচ্ছে, আওয়ামী লীগ এক হয়ে মাঠে থাকলে কেউ হারাতে পারে না। নারায়ণগঞ্জে দলে বিভেদ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে ভোটের সময় সেলিনা হায়াৎ আইভী ও সাংসদ শামীম ওসমানকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। তাদের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য লোক ছিল। এ জন্য দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছে। বিরোধী দল ও বিদেশিদের জন্য দৃষ্টান্ত হচ্ছে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। বিরোধী দল কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বীরা নির্বাচন নষ্ট না করার চেষ্টা করলে ভোট ভালো হয়।
র্যাব এবং এই বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও অহরহ ঘুম-খুন হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি নানা পরিসংখ্যান এবং বিভিন্ন প্রকাশনার তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেছেন, সেখানে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। ক্যাপিটল হিলের মতো জায়গায় দাঙ্গা হয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ যুবক, এমনকি শিশু পর্যন্ত বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো মানায় না। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, পশ্চিমারাই র্যাবকে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলেছে। এখন নানা অভিযোগ তুলছে। র্যাবের সব কাজকে তো সরকার বৈধতা দিচ্ছে না। অনেক ঘটনার বিচার করছে। র্যাবের মাধ্যমে কোনো অন্যায় হচ্ছে কি না, সেটিও নজরে রাখা হয়।
বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে আগামী নির্বাচনেও জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আশা করি জনগণ আমাদের ভোট দেবে। কারণ, একটা দেশকে আমরা বদলে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। জনগণের ওপর আমাদের আস্থা আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সংকটে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে আমরা স্থিতিশীল রেখেছি। বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৯৪ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় ২৫৯১ মার্কিন ডলার।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আজকে আমরা ক্ষমতায় বলে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক, আমার বাড়ি আমার খামার ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সব সুযোগ-সুবিধা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি। দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে।
জনগণ ভুল করে না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বিশ^াস করি, গণতন্ত্রে এবং জনগণের ভোটের অধিকারে। জনগণই ভোট দিয়ে তাদের পছন্দমতো প্রার্থী নির্বাচন করবে, যারা তাদের জন্য কাজ করবে। কারণ, জনগণ কখনো ভুল করে না, এটা হলো বাস্তবতা। কাজেই জনগণের ওপর আস্থা রেখেই আমরা সব রকম কাজ করি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারায় এটিই প্রতীয়মান হয়েছে, জনগণ কখনো ভুল করে না। গতকাল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে নবনির্বাচিত মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
শেখ হাসিনা বলেন, নারায়ণগঞ্জে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচিত করেছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিজের ভোগ-বিলাসের কথা না ভেবে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে কাজ করারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। আর বিএনপি আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখে না বলেই সবসময় অপপ্রচার চালায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়া- বিএনপির সময়ের বিভিন্ন নির্বাচন নামের প্রহসনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনের অর্থ বোঝে না। জনগণের ভোটের অধিকার স্বীকার না করলেও তারা ভোট চুরি করতে জানে। বিএনপির প্রশ্নবিদ্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে জনগণের কাছে তারা কিভাবে ভোট চাইতে যাবে- সে প্রশ্ন উত্থাপন করে তিনি বিএনপি’র নানা অপপ্রচারের কঠোর সমালোচনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারির হাতেই বিএনপির সৃষ্টি। জনগণের কাছে ভোট চাইতে যাওয়ার কোন অভ্যাসই তাদের ছিলনা বরং কেড়ে নেওয়া, চুরি করে নেওয়াই তাদের অভ্যাস ছিল। তারা গণতন্ত্রের অর্থও বোঝেনা, সে শিক্ষাই তাদের নেই। তিনি বলেন, বিএনপি বোঝে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ আর বাংলা ভাই সৃষ্টি, মানুষ হত্যা আর নির্যাতন, মানুষের ঘর-বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল। আর সে সুযোগ পাচ্ছেনা বলেই তাদের খুব আক্ষেপ।
‘বিএনপির নেতৃত্ব বলে কিছু নেই’ উল্লেখ করে সরকার প্রধান খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমান প্রসঙ্গে বলেন, একজন এতিমের অর্থ আত্মসাত করে জেলে বন্দি। যদিও তাকে দয়া করে ঘরে থাকতে দেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। অন্যজন ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারী, ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলা এবং দুর্নীতির মামলার সাজাপ্রাপ্ত ‘ফিউজিটিভ’। আমেরিকার এফবিআইর তদন্তে যার দুর্নীতি প্রমাণিত এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে আর রাজনীতি না করার মুচলেখা দিয়ে যে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে একজন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী যে দলের চেয়ারপার্সন হয় জনগণ কেন তাকে ভোট দিবে। আর তারা জনগণের ভোটাধিকারে বিশ^াসও করেনা, এটা হলো বাস্তবতা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দেশের মানুষের ভোটাধিকার ক্ষমতা ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের ৭৭ সালের হ্যাঁ/না ভোট, ৭৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, ৭৯ সালের সংসদ নির্বাচন এবং ৮১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন- সবই ছিল প্রহসন।
একই ধারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অব্যাহত রেখে ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন আয়োজন করে তৃতীয় বারের মত প্রধানমন্ত্রী হলেও ৩০ মার্চ গণ-আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন।
শেখ হাসিনা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণ তাদের ওপর যে আস্থা ও বিশ^াস নিয়ে ভোট দিয়েছে, তার মূল্যায়ন করতে হবে। আর উন্নয়নের গতিধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে। ভোগ বিলাসে কোন তৃপ্তি নেই। আর রাজনৈতিক নেতা হতে হলে জনকল্যাণে নিবেদিত প্রাণ হয়েই আপনাদের কাজ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের ওপর জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে জানিয়ে টানা তিনবারের সরকার প্রধান বলেন, সেই নির্বাচনে (২০০৮ জাতীয় নির্বাচন) বিপুল ভোটে, আওয়ামী লীগ আমরা মহাজোট করেছিলাম, তাদেরকে নিয়ে আমরা জয় লাভ করি। তারপর থেকে আল্লাহর রহমতে আমরা এ পর্যন্ত সরকারে আছি। জনগণের আস্থা-বিশ্বাস নিয়েই আমরা সরকারে আছি। বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যাালোচনা করলে দেখা যাবে একটানা এই ১৩ বছর এ দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে।
আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকায় দেশে অগ্রগতি হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এর ফলে আজকে দেশের উন্নতি হচ্ছে। আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। ক্ষমতা হলো জনগণের সেবার করার সুযোগ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ আমরা সরকারে ছিলাম। বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণযুগ সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করি, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াই, রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন কাজ করে দেশের জনগণের কাছে এই বার্তাই পৌঁছে দিয়েছিলাম, সেটা হলো জনগণের সেবক হলো সরকার, ক্ষমতা ভোগ করার বস্তু নয়, ক্ষমতা জনগণের সেবা করার। বাংলাদেশের মানুষ সেটা উপলব্ধি করে।
পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সার্বিকভাবে শুধু আজকেই না, আগামীতে বাংলাদেশ কেমন উন্নত হবে সেই পরিকল্পনাটাও আমি দিয়ে গেলাম। আমাকে এটা চিন্তা করতে হয়, আমারও তো বয়স হয়েছে। কতদিন আর বাঁচবো। কাজেই এমনভাবে দেশের কাঠামো তৈরি করে যেতে চাই, এমনভাবে পরিকল্পনা করে যেতে চাই- প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এই বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা যেন অব্যহত রাখতে পারে। উন্নত জীবন পায়, সুন্দর জীবন পায়, আর যেন কখনো কারও দ্বারা নিষ্পেশিত হতে না হয়, নির্যানতিত হতে না হয়, সুন্দরভাবে যেন মানুষ বাঁচতে পারে, সেই ব্যবস্থাটাই আমি করে দিয়ে যেতে চাই। শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি আমাদের দেশের মানুষের যে অধিকার সেই অধিকার সুরক্ষিত রেখে আমরা দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।