Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে টাকা দিয়েও ঘর পাননি কয়েকজন হতদরিদ্র মানুষ। এমন অভিযোগ উঠেছে সাবেক মেম্বার আযাদ মাঝির বিরুদ্ধে। যারা ঘর পেয়েছেন তারাও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের এসব ঘর পান বলে জানান কয়েকজন ঘর পাওয়া ভুক্তভোগী। উপজেলার চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নোমানাবাদ নতুন আশ্রয়ন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয় ২০২০-২১ অর্থ বছরে। এখানে মোট ৩২টি ঘর নির্মাণ করা হয়।
চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের কোডেক বাজার এলাকায় বসবাস করেন নদীভাঙা ইউনুছের ছেলে আব্দুল মালেক ও মোস্তফার ছেলে মো. নুরনবী। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাস করেন অন্যের জায়গায়। একটি জুবড়ি ঘরে তাদের বসবাস। ঘরের অবস্থা দেখে মনে হয় এখানে কোনো মানুষ থাকতে পারেননা। তাও অন্যের জায়গায় কোনো মতে দিনজাপন করছেন তারা। কাজ করলে পেট চলে, না করলে উপবাস থাকতে হয় তাদের। এমন করুণ পরিস্থিতিতে ধারদেনা করে সাবেক মেম্বার আযাদ মাঝিকে ৩০ হাজার করে দু›জনেই ৬০ হাজার টাকা দেন ঘর পাওয়ার জন্য।
কিন্তু ঘরগুলো বরাদ্দ দিয়ে করা হয় উদ্বোধন। নুরনবী ও আবদুল মালেকের ভাগ্যে জুটেনি এই কলোনির ঘর। স্থানীয় কোডেক বাজারে গিয়ে দেখা মিললো এমন দুইজন ভুক্তভোগীর। স্থানীয়রা জানান, ঘর পেতে তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক (ইউপি) সদস্যকে টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ঘর মেলেনি তাদের ভাগ্যে। অথছ ঐ মেম্বারের দুই ছেলের নোমান ও মামুনের নামে ২ এবং ৪ নম্বর দুইটি ঘর বরাদ্দ নেন তিনি। এমন অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নিয়ে চলছে নয়ছয়। আবার বাড়ি থাকা সত্তে¡ও অনেক প্রভাবশালীরা এই কলোনিতে বাড়ি পেয়েছেন। উপজেলা ভূমি অফিস, পিআইও অফিস, স্থানীয় ভ‚মি অফিস ও ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে এমন অনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
ভুক্তভোগী নুরনবী ও আবদুল মালেক বলেন, তাদেরকে সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে ঘর দিবেন বলে প্রথমে জন প্রতি ৫০ হাজার দাবি করেন মেম্বার আযাদ। পরে তারা অপারগতা প্রকাশ করলে সাবেক মেম্বার আযাদ মাঝি ৩০ হাজার টকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা নেন দু’জন থেকে। কিন্তু ঘর বরাদ্দ দেওয়ার পর তালিকায় তাদের নাম নেই। এখন তাদের টাকাও পেরত পাননি। টাকা চাইলে নানা তালবাহানা করে সময় পার করছেন এই মেম্বার।
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য আযাদ মাঝি বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওই জায়গাটি অনেক গভীর ছিল। মাটি ভরাটের জন্য কয়েকজনের কাছ থেকে কিছু টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু ঘর দিতে না পেরে কয়েক জনের টাকা ফেরত দিয়েছেন তিনি। বাকীদের টাকাও পেরত দেওয়া হবে। বাড়ি থাকা সত্তে¡ও সরকারি ঘর কিভাবে পেলেন এবিষয়ে সাবেক এই মেম্বার বলেন, বাবার বাড়ি আছে, ছেলের বাড়ি নেই, এমন কয়েকজন বাড়ি পেয়েছেন। যেমন তার দুই ছেলে।
বর্তমান ইউপি সদস্য মো. নাজিম উদ্দীন এসব অভিযোগ শতভাগ সঠিক বলে মন্তব্য করেন। চরপোড়াগাছা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন হাওলাদার ঘর বরাদ্দে অনিয়মের বিষয়ে মুঠোফোনে বলেন, সংশ্লিষ্ট সাবেক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তিনি লোকমুখে শুনেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তনু চৌধুরী বলেন, উপকারভোগীদের তালিকা অনেক আগেই নির্বাচন করা হয়েছে। তিনি এ উপজেলায় নতুন এসেছেন। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ