Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কর ফাঁকি এড়াতে দরকার এনবিআরের কঠোর মনিটরিং

প্রাক-বাজেট আলোচনায় ইআরএফ নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

কোনো ব্যবসায়ী যেন কর ফাঁকি দিতে না পারেন সেজন্য এনবিআরের অটোমেশন ও কঠোর মনিটরিং দরকার বলে মনে করে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। এছাড়া করের আওতা বৃদ্ধি করতে দেশে করযোগ্য প্রকৃত নাগরিকের সংখ্যা নিরূপণে ব্যাপকভিত্তিক জরিপ ও গবেষণার প্রস্তাব জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির সভাপতি শারমীন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী বলেন, দেশের অর্থনীতির পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দশ বছরে বিপুল সংখ্যক মানুষ কর প্রদানে সামর্থ্যবান হয়েছেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হচ্ছে, এই মুহ‚র্তে দেশে করযোগ্য মানুষ অন্তত দুই কোটি। আবার কেউ বলছেন এই সংখ্যা দুই কোটিরও বেশি। করযোগ্য নাগরিকদের সংখ্যা নিয়ে এই বিভ্রান্তি দূর করতে কিংবা দেশে করযোগ্য প্রকৃত নাগরিকের সংখ্যা নিরূপণে এনবিআরের একটি ব্যাপকভিত্তিক জরিপ ও গবেষণা জরুরি।

তিনি বলেন, এনবিআরের তথ্যানুযায়ী দেশে ইটিআইএনধারীর সংখ্যা ৭০ লাখের মতো। এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন মাত্র ২৪ থেকে ২৫ লাখ। অথচ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব টিআইএনধারীর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। তাই রিটার্ন দাখিল না করা এই টিআইএনধারীকে কর নেটের আওতায় আনা দরকার। শুধু তাই নয়, নির্ভরযোগ্য তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে ৮৫ হাজার ৪৮৬ জন বিদেশি নাগরিক কাজ করেন। কিন্তু এনবিআরে আয়কর জমা দেন মাত্র ১৪ থেকে ১৫ হাজার বিদেশি নাগরিক। দেশে কর্মরত বিদেশিরা বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যান। বিদেশি নাগরিকদের করের আওতায় আনতে এনবিআরের উদ্যোগ আরও জোরালো করার প্রয়োজন।

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক রাশেদ বলেন, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল পদ্ধতিকে আরও জনপ্রিয় করতে ব্যাপকভিত্তিক প্রচারণা চালানো দরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটটি আপগ্রেড করা দরকার। একইসঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের গবেষণা সেলটি আরও কার্যকর ও যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। আমাদের প্রস্তাব হলো একজন সদস্যের নেতৃত্বে গবেষণা ও পরিসংখ্যান বিভাগকে শক্তিশালী করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বন্ডেড ওয়্যারহাউজ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে এনবিআর আইনি কাঠামোয় পরিবর্তনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এ খাতে অনিয়ম রোধ এবং আরও রপ্তানিবান্ধব বন্ড ব্যবস্থাপনা তৈরির জন্য এনবিআরের নেওয়া বন্ডেড ওয়্যারহাউজ অটোমেশন প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে পুরো প্রক্রিয়াকে অটোমেশনের আওতায় আনা দরকার।

ইআরএফের অন্যান্য প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-সিটি করপোরেশন এলাকার নাগরিকদের সর্বনিম্ন কর ৫ হাজার টাকা। করের এ পরিমাণ কমিয়ে সব টিআইএনধারীকে কর প্রদানে উৎসাহী করা। একইসঙ্গে করের আওতায় আনতে সারাদেশের উপজেলা পর্যায়ে এনবিআরের কার্যক্রম বাড়ানো। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল পদ্ধতিকে আরও জনপ্রিয় করতে ব্যাপকভিত্তিক প্রচারণা চালানো। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটটি আপগ্রেড করা, কারণ এতে অনেক হালনাগাদ তথ্য ও পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কর কাঠামো প্রণয়ন করলে উদ্যোক্তারা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারবেন বলে মনে করে সংগঠনটি।

আয়কর নিয়ে একটি আইন হচ্ছে। তবে আইনটির খসড়া হওয়ার পরপরই দ্রæত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার। তাই আইনটি বাস্তবায়নের আগে সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে চুড়ান্ত করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ