পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারীদের মুখ বন্ধ করতে হলে মার্শাল ল’ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম ন‚রুল হুদা। তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশে নির্বাচন কমিশন নিয়ে সমালোচনা থাকবেই। এটা বন্ধ করা যাবে না। সমালোচনা বন্ধ করতে হলে মার্শাল ল’ দিতে হবে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মানুষের বাকস্বাধীনতা ছিল না। মানুষের মাথায় লাঠি ধরে, বন্দুকের নল উঁচিয়ে জরুরি অবস্থার মধ্যে নির্বাচন হয়েছে।
গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘আরএইডি টক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, রাজনৈতিক পরিমÐলে অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। বন্দুক মাথায় রেখে একটা নির্বাচন করা যেতে পারে। চিরদিন সেটা হতে পারে না।
সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা বর্তমান কমিশন নিয়ে সমালোচনা করেন, অথচ তিনি আইন লঙ্ঘন করে ৯০ দিনের নির্বাচন করেছিলেন ৬৯০ দিনে। তিনি নিয়মবহির্ভ‚তভাবে অনেক কাজ করেছেন দায়িত্বে থাকা অবস্থায়। ড. বদিউল আলম মজুমদারের (সুজন সম্পাদক) মতো একজন লোককে তিনি কিভাবে নির্বাচন কমিশনে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। শামসুল হুদা কমিশন ক্যান্টনমেন্টের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ইসি মাহবুব তালুকদারের বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, মাহবুব তালুকদারের কথা আমি বরাবরই বলেছি। ইসিতে তিনি ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। তিনি রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। মাহবুব কখনও আইসিইউতে কখনও সিসিইউতে ছিলেন। এছাড়া তিনি সিঙ্গাপুর, ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব চিকিৎসার ব্যয় কমিশন থেকে করা হয়। এ অর্থের পরিমাণ বছরে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা।
সিইসি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে’ হওয়ার যে অভিযোগ, সেটির কোনো সত্যতা নেই। আদালতের নির্দেশে এ অভিযোগ তদন্ত করা যেত। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে নির্বাচন বন্ধ করা যেত। এটা তো অভিযোগ আকারে থেকে গেছে। আদালতের ইন্সট্রাকশন ছাড়া হয় না। অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। আমি তো দেখিনি, আপনিও দেখেননি, আপনারা দেখেছেন? এটা একটা অভিযোগ। এখন তদন্ত হলে আদালতের নির্দেশে হয়তো সেটা বেরিয়ে আসত। সেটা হলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেত। হয়তো সারাদেশের নির্বাচন বন্ধ হতো। দিনের ভোট রাতে হয়েছে এ বিষয়ে কোনো প্রার্থীসহ কেউ নির্বাচন কমিশনে সরাসরি কোনো অভিযোগ করেননি। এমনকি এ অভিযোগ নিয়ে কেউ আদালতেও যাননি। ফলে আমরা ধরে নিচ্ছি, দিনের ভোট রাতে হওয়ার বিষয়টি নেহাত একটি অভিযোগ।
সিইসি নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশনের কেউ কোথাও রাতে ভোট হওয়ার বিষয়টি দেখেননি, এমনকি কোনো সাংবাদিকও রাতে ভোট হয়েছে তা দেখেছেন কিংবা লিখেছেন বলে আমাদের জানা নেই। নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ হয়ে গেলে আমাদের কিছু করার থাকে না। কারণ, এটা আইন। প্রকৃতপক্ষে আমাদের আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগও ছিল না।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েকশ’ কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে, এটা কিভাবে সম্ভব হয়েছিল- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ন‚রুল হুদা বলেন, গেজেট হওয়ার পর বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। এর আগে পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেনি। তাই এ বিষয়ে আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি, ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগও ছিল না।
কোনো কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়া অস্বাভাবিক কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, শতভাগ ভোট অস্বাভাবিক। এটা আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি। আমার সীমাবদ্ধতা হলো এটার গেজেট প্রকাশ করা হলে ইসির হাতে কিছুই থাকে না। এটা আইন, এ আইন তো আমি পরিবর্তন করতে পারব না।
সিইসি বলেন, ড. বদিউল আলম মজুমদারকে (সুজন সম্পাদক) ব্যক্তিগত সুবিধা না দেয়ায় তিনি কমিশনের সমালোচনা করছেন। আমি কমিশনের দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি আমার কাছে কয়েকবার এসেছিলেন আমাদের সঙ্গে কাজ করতে। আমি তাকে কাজ করার সুযোগ না দেয়ায় তিনি কমিশনের সমালোচনা করেন। অথচ তার বিরুদ্ধে কমিশনে এক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
সাবেক সিইসি ড. শামসুল হুদা হঠাৎ করেই ছবক শিখাচ্ছেন উল্লেখ করে ন‚রুল হুদা বলেন, তিনি এতদিন পরে এসে আমাদের ছবক দিচ্ছেন। শামসুল হুদা ৯০ দিনের পরিবর্তে ৬৯০ দিন পর নির্বাচন করেছেন, এটা কিভাবে সম্ভব? দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা আর সামরিক শাসনের অধীনে নির্বাচন করা এক কথা নয়, এটা তাকে বুঝতে হবে।
তার অধীনে কমিশনের কাজের নানা দিক তুলে ধরে সিইসি বলেন, সাত কোটি ছয় লাখের বেশি স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করা হয়ছে। পাঁচ কোটির বেশি বিতরণ করা হয়েছ। ইসির অনেকগুলো আইনি বিধি বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের ভোটার তালিকা সংশোধন হয়েছে। সমালোচনা গঠনমূলক হলে গ্রহণ করা হয়েছে।
নূরুল হুদা বলেন, রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল না, আমরা আমাদের মতো করে কাজ করতে পেরেছি। নির্বাচনে সংঘর্ষ, সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়, যদি না প্রার্থীরা সহনশীল হয়। তবে রাজনৈতিক দলের অধীনে নির্বাচন করা কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়, এটা সামরিক সরকারের অধীনের চেয়ে অনেক ভালো। অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শতভাগ ইভিএমে করা সম্ভব হবে না, তবে ৫০ ভাগ করা যেতে পারে।
গত পাঁচ বছরে কমিশন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজেকে ‘শতভাগ সফল নয়’ দাবি করলেও আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না বলে জানান নূরুল হুদা। ইসির বিরুদ্ধে ৪২ নাগরিকের করা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ ছিল মন্তব্য করেন তিনি। নির্বাচন কমিশন আইন হলে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফিরে আসবে কি না, এমন প্রশ্নে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, সার্চ কমিটি ব্যবস্থা ভালো, তবে আইন হওয়া সবচেয়ে বেশি ভালো।
আরএফইডি সভাপতি সোমা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কাজী জেবেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।