পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের পুলিশি হয়রানির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে গতকাল তারা এ প্রতিবাদ জানান।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, জাতিসংঘ, দাতা দেশ এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে উত্থাপিত সকল অভিযোগ অস্বীকারে সরকার আত্মতৃপ্তির অপকৌশল গ্রহণ করেছে। সরকারেরর এমন কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানাই।
আ স ম রব বলেছেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের নিদারুণ হাহাকারে সরকার মানবিক সহায়তা না দিয়ে নতুন করে তথ্য জানতে চাওয়ার মাধ্যমে তাদের হয়রানি করছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, যা বিপর্যস্ত পরিবারগুলোকে আরো ভয়ঙ্কর বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং জোরপূর্বক গুমের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন মোকাবিলা করার কোনো অভিপ্রায়ই সরকারের নেই তা প্রমাণিত হয়েছে। বরং সরকার অন্যায়কে ধামাচাপা দেয়ার নতুন কূটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে।
আ স ম রব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ থাকা এসব ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা ও অন্যায়ে জড়িতদের চিহ্নিত করার পরিবর্তে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের অপতৎপরতার মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের সংবিধানকে উপেক্ষা করা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। গুমের শিকার এসব পরিবার দিনের পর দিন স্বজনদের ফেরার প্রতীক্ষায় রয়েছেন, প্রতিটি মুহূর্ত তারা নানা নিরাপত্তাহীনতা আর ভীতির মধ্যে রয়েছেন, এই অবস্থায় মানবিক সহায়তার বদলে তথ্য সংগ্রহের নামে তাদের বাস্তবতাকে আরো ভয়ঙ্করতার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। নাগরিকদের মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার ও মানবাধিকার অব্যাহতভাবে খর্ব করার তৎপরতা রাষ্ট্রকে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার বা খারিজ না করে সেগুলো আমলে নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা গ্রহণ সরকারের জরুরি কর্তব্য। সুতরাং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও নাগরিকের জীবন সুরক্ষার স্বার্থে সরকারের উচিত অবিলম্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমগ্র প্রক্রিয়া বন্ধ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের সংবিধানের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ডাকসুর সাবেক এ নেতা বলেন, যেখানে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার বছরের পর বছর ধরে হারানো স্বজনদের ফিরে পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানাচ্ছে, সেখানে এসব নিরীহ মানুষকে হয়রানি সরকারের নিষ্ঠুরতা এবং হৃদয়হীনতার নগ্ন বর্হিপ্রকাশ। আমি অনতিবিলম্বে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি এ ধরনের অমানবিক আচরণ বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। সারা পৃথিবীতে আজ এ সরকার স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী হিসেবে প্রমাণিত। এ অমানবিকতা, নিষ্ঠুরতা বন্ধ করা না হলে সরকারকে চরম মূল্য দিতে হবে।
মান্না বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসেপিয়ারেন্সেস কর্তৃক বাংলাদেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ এবং তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের পর সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থা গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে গিয়ে কিংবা তাদের থানায় নিয়ে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর করানোসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর সবুজবাগ থানায়। এ ব্যাপারে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তির ভাই মোহাম্মদ জাহিদ খান গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, তার ভাইকে গত ২০১৩ সালের ৭ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এভাবে সারা দেশে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের কাছ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে আত্মগোপন কিংবা হারিয়ে যাওয়া বা নিখোঁজ হওয়া শব্দগুলো ব্যবহার করে কাগজে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর আদায় করা চেষ্টা করা হচ্ছে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন অবৈধ ভোট ডাকাত সরকার ২০০৯ সাল থেকে ব্যাপকভাবে গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করে। ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচন কেন্দ্র করে এই গুম খুনের ঘটনা আরও বেড়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।