পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার তৃতীয় ঢেউ ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। গতকাল সর্বক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ কার্যকর শুরু হলেও আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হবে গণপরিবহনের বিধিনিষেধ কার্যকর। বিধিনিষেধের ৬ নম্বরে বলা হয়েছে- ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার (সিট) অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। ট্রেনের অর্ধেক সিটে যাত্রী নেয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। তবে গণপরিবহনের মালিকদের কাছে নতিস্বীকার করে সরকার অর্ধেক সিটে যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। গণপরিবহনের ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদের নেয়া সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এখন ‘যত আসন তত যাত্রী’ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আবার রেস্তোরাঁয় টিকা সনদ সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা নেই।
করোনাভাইরাসে নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার শতকরা এক শতাংশে নেমেছিল। অথচ গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশে উঠেছে। প্রতিদিন শনাক্তের হার জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। করোনাভাইরাসের ওমিক্রনের এই তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে ১১ দফা বিধিনিষেধ কার্যকর শুরু হয়েছে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে গতকাল সকাল থেকে মাঠে কাজ করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। বাস থামিয়ে ড্রাইভার ও যাত্রীদের মাস্ক দেখা হয়। কিন্তু কোথাও স্বাস্থ্যবিধি নেই। মানুষ নির্বিঘেœ স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে নিজেদের মতো করে চলছেন। ভাবখানা যেন করোনাভাইরাস বলে কিছু নেই।
গতকাল রাজধানীর শাহবাগে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডা. সঞ্জীব দাস। পৌনে ২ ঘণ্টার অভিযানে ৫০ থেকে ৬০ জনকে নিজের টেবিলে ডেকে পাঠান তিনি। তাদের প্রত্যেকেরই মাস্ক পড়ায় ত্রæটি দেখা যায়। কেউ থুতনিতে মাস্ক পড়েছেন, কেউ ম্যাজিস্ট্রেট দেখে পকেট থেকে মাস্ক বের করেছেন। এছাড়া অধিকাংশের কাছেই ছিল না মাস্ক। তারা দিয়েছেন নানা অজুহাত। অভিযানে ১১ জনের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে অর্থদন্ড দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট।
অভিযানের বিষয়ে ডা. সঞ্জীব দাস বলেন, অভিযানে পথচারী ও গণপরিবহনের যাত্রীরা মাস্ক পড়ছেন কি না তা দেখছি। সার্বিকভাবে আমরা দেখেছি অনেকে মাস্ক ছাড়া বের হয়েছেন; কেউ কেউ আবার মাস্ক পকেটে রাখছেন। কয়েকজনকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ‘পরবর্তীতে মাস্ক পড়বে’ এ মর্মে মুচলেকাও নেওয়া হয়েছে। অপরাধ বিবেচনায় অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের মূল উদ্দেশ সবাইকে সতর্ক করা।
যত আসন তত যাত্রী : করোনা মহামারি প্রতিরোধে দেশের গণপরিবহন অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সরকারের প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা ১১ দফা বিধিনিষেধে সেটা স্পষ্ট করে উল্লেখ ছিল। কিন্তু গণপরিবহন মালিকদের চাপের মুখে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণপরিবহনে যত আসন রয়েছে তত যাত্রী পরিবহনের কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। তিনি বলেন, বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার আমাদের জানিয়েছেন শনিবার থেকে গণপরিবহনের যত আসন রয়েছে তত যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। কারণ অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করলে পরিবহন সংকট দেখা দেয়। এক্ষেত্রে যাত্রী এবং পরিবহন চালক ও হেলপারদের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে হবে।
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ আরো বলেন, আমরা সকল পরিবহন মালিকদের বিআরটিএর এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছি। এক্ষেত্রে যারা সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মানবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়কে পুলিশ প্রশাসনকে আমরা অনুরোধ করেছি তারা যাতে বিষয়টি দেখেন। এজন্য আমাদের হেলপার ও চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জানুয়ারি করোনা মহামারি প্রতিরোধে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। ১১ দফা বিধিনিষেধের ছয় নম্বর দফায় বলা হয়েছে, ট্রেন, বাস এবং লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী নিতে হবে। সব যানের চালক ও সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কোভিড-১৯ টিকা সনদধারী হতে হবে। এতে আরও বলা হয়, জনসাধারণকে অবশ্যই বাইরে গেলে মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতে সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
‘রেস্তোরাঁয় টিকা সনদ’ শুধুই নির্দেশনা : এদিকে সরকার রেস্তারাঁয় খেতে হলে টিকা সনদ দেখাতে হবে, এমন সিদ্ধান্ত নিলেও তার কার্যকর দেখা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত অবাস্তব। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কোনো হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে আসা ভোক্তারা কেউই করোনা টিকার সনদ বহন করেননি।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান বলেন, সরকারের এ নির্দেশনা আসলে বাস্তবসম্মত নয়। তবে যেহেতু সরকার একটি নির্দেশনা দিয়েছে তা মানতে আমরা বাধ্য। একইসঙ্গে সরকারের কাছে আমরা আবেদন জানাই এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে। রেস্তোরাঁগুলোতে শ্রমজীবী মানুষ বসে খাওয়া-দাওয়া করে। তাদের টিকার সনদ যাচাই করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, রেস্তোরাঁয় করোনা টিকা সনদ দেখিয়ে খাওয়ার সিদ্ধান্ত শুরুর দিকে একটু চ্যালেঞ্জিং হবে। আস্তে আস্তে এটা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এটি আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে যারা টিকা নিচ্ছেন, তাদের আমরা কাগজের একটি কার্ড দিচ্ছি। সেই সনদ ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাচ্ছে। কার্ডটি নিজেদের কাছে রাখতে হবে। প্রমাণ হিসেবে কার্ডটি সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।