Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রথমদিনেই লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় বেক্সিমকোর সুকুক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:১২ পিএম

প্রথমদিনেই বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানির (বেক্সিমকো) সুকুক লেনদেনের দিক থেকে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শীর্ষ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

বেক্সিমকোর সুকুক দিয়ে বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ারবাজারে প্রথম কোনো সুকুক'র লেনদেন শুরু হয়। এটির লেনদেন শুরুর দাম ছিল ১১০ টাকা। যা দিনের সর্বোচ্চ দাম। লেনদেনের এক পর্যায়ে সুককটির দাম অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে যায়। তবে অভিহিত মূল্যের ওপরে থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

সুকুকটির প্রতি ইউনিটে অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা। লেনদেনের প্রথমদিন ৬ হাজার ৬ বারে সুকুকটির মোট ৩২ লাখ ৩২ হাজার ৭৭২টি ইউনিট লেনদেন হয়েছে। সর্বোচ্চ ১১০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৯৯ টাকা ৫০ পয়সায় এসব ইউনিট লেনদেন হয়েছে। টাকার অঙ্কে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ডিএসইর শীর্ষ লেনদেনের তালিকায় আট নম্বরে স্থান হয়েছে সুকুকটির।

বেক্সিমকো লিমিটেডের টেক্সটাইল ইউনিটের কার্যক্রম বাড়ানো এবং বেক্সিমকোর দুটি সরকার অনুমোদিত সাবসিডিয়ারি নবায়ন যোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের (তিস্তা সোলার লিমিটেড এবং করতোয়া সোলার লিমিটেড) বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিবেশ উন্নয়ন এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে গত বছরের জুনে বিএসইসি প্রতিষ্ঠানটির ৩ হাজার কোটি টাকার গ্রীন সুকুক অনুমোদন করে।

পাঁচ বছর মেয়াদী সিকিউরড কনভার্টেবল অথবা রিডেম্বল এসেট ব্যাকড এই সুকুক বিএসইসি থেকে অনুমোদন পাওয়া প্রথম গ্রীন সুকুক। ৩ হাজার কোটি টাকার এই গ্রীন সুকুকের ৭৫০ কোটি টাকা আইপিওতে উত্তোলনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। বাকি ২ হাজার ২৫০ কোটি টাকা প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর বেক্সিমকো ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ডের মধ্যে পাবলিক অফারে ৭৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য গত বছরের ১৬ আগস্ট চাদাঁ সংগ্রহ শুরু করে। যার জন্য প্রথম দফায় নির্ধারিত সর্বশেষ সময় ছিল ২৩ আগস্টের বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত।

প্রথম দফায় বন্ডটির চাহিদার ৭৫০ কোটি টাকার বিপরীতে ৭১ জন বিনিয়োগকারী আবেদন করেন। এই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আবেদন আসে ৫৫ কোটি ৬১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার বা ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।

চাহিদার মাত্র ৭ শতাংশের কিছু বেশি আবেদন পড়ায় সাবস্ক্রিপশনের বা আবেদনের সময় ১০ কার্যদিবস বাড়ায় বেক্সিমকো। যা ৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এ দফাতেও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে খুব একটা সাড়া মেলেনা। মাত্র একজন জন বিনিয়োগকারী ১০ লাখ টাকার আবেদন করেন। এর মাধ্যমে বন্ডটিতে মোট আবেদন পড়ে ৫৫ কোটি ৭১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। যা চাহিদার (৭৫০ কোটি টাকা) মাত্র ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

ডেবট সিকিউরিটিজ রুলসের ১২(২) এ ধারায় অনুযায়ী, পাবলিক অফারের যেকোন সিকিউরিটিজে সাধারন বিনিয়োগকারীদের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ আবেদন জমা পড়তে হবে। এছাড়া আন্ডাররাইটারের (অবলেখক) ২০ শতাংশ আবেদনের পড়লেও যদি ৫০ শতাংশের কম হয়, তাহলে ইস্যুটি বাতিল হবে।

আইনের এই বিষয়টি তুলে ধরে সাবস্ক্রিপশনের মেয়াদ আরও এক মাস সময় বাড়িয়ে দেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।

নতুন করে সময় পেয়ে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর সুকুকের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার সংগ্রহ শেষ করে এর উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো লিমিটেড।

৩ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২৬টি প্রতিষ্ঠান দিয়েছে ২ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। বাকি টাকার মধ্যে ২ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বর্তমান শেয়ারধারীদের কাছ থেকে। ১৩৫ কোটি টাকা সংগ্রহ হয়েছে আন্ডাররাইটার, ৪২৩ কোটি টাকা এসেছে পাবলিক সাবক্রিপশন থেকে এবং ৩৩৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাওয়া গেছে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে।

সুকুকের বিনিয়োগকারীরা চাইলে তাদের ইউনিটগুলো বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারে রূপান্তর করে নিতে পারবেন। প্রতি বছর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে এটি করা যাবে। এ জন্য নির্ধারিত রেকর্ড ডেটের আগের ২০ দিনে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারের দামের যে ভারিত গড় হবে, তার ২৫ শতাংশ কমে এ শেয়ার পাবেন সুকুকধারীরা।

অর্থাৎ উল্লিখিত সময়ে বেক্সিমকোর শেয়ারের গড় দাম ১০০ টাকা হলে রূপান্তর মূল্য হবে ৭৫ টাকা। তার মানে ১ হাজার টাকার সুকুকের বিপরীতে মিলবে ১৩ দশমিক ৩৩টি শেয়ার। কেউ প্রথম বছর রূপান্তর না করলেও পরবর্তী বছরে এ সুযোগ নিতে পারবে। কেউ একেবারেই রূপান্তর না করলে, মেয়াদ শেষে নিয়ামানুযায়ী বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত পাবেন।



 

Show all comments
  • Masud Rana ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:০০ পিএম says : 0
    সুদমুক্ত সমাজ গঠনে এ ধরণের বন্ড বাজারে আনায় বেক্সিমকোকে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Shariful Islam ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:০১ পিএম says : 0
    মালয়েশিয়ার দৃষ্টান্ত ফলো করা উচিত। অধিক পরিমাণে সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়া হউক। ইসলামিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেতেই থাকবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Ulama Forum ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:০১ পিএম says : 0
    মুসলমান হিসেবে আমরা চাই ইসলামি অর্থ নীতি ব্যবস্থা। সেটা এখনও সম্ভব না হলেও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ‘সুকুক’ বন্ড আমাদের সেই আশা অনেকটাই পুরণ করবে
    Total Reply(0) Reply
  • Nasim Reza ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:০১ পিএম says : 0
    দেশের মানুষ এ ধরণের ইসলামী বণ্ডের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলো।
    Total Reply(0) Reply
  • Talukder Mohammad Forqan ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:০১ পিএম says : 0
    সুকুক বন্ড জনগণের মাঝে ভালো সাড়া ফেলবে আশা করি। দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ