পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাণিজ্যক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক সুযোগ রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও পণ্যের গুণগত মান বাড়াতে গবেষণার উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমান কূটনীতি হবে বাণিজ্য ও অর্থ সংক্রান্ত। ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যিক সুযোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, করোনাকালে ও আমাদের রফতানি বেড়েছে। ডিজিটাল ডিভাইস রফতানিতে আমরা ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছি। ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনাকালেও ৪৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি করতে সক্ষম হয়েছি। তাছাড়া আমাদের সার্বিক রফতানি বেড়েছে। সময় কিন্তু এখন আমাদের, সময় বাংলাদেশের। এ কথাটা আমাদের মনে রাখতে হবে এবং সে সুযোগটা আমাদের নিতে হবে। রফতানিকে উৎসাহিত করার জন্য আমি প্রতি বছর একটি পণ্যকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করে থাকি। ২০২২ আইসিটি পণ্য সেবাকে জাতীয়ভাবে বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সব থেকে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে। আমরা ৯ ভাগ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য সেটা আর থাকেনি। কারণ অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে মিলিটারি ডিকটেটররা ক্ষমতা দখল করার ফলে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নত হওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা যেমন সৃষ্টি হয়, অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়। ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমি সরকারে আসার সঙ্গে সঙ্গে উদ্যোগ নিয়েছিলাম আমাদের দেশে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে। যেটা জাতির পিতার নীতিমালা ছিল। সেটা আমরা অনুসরণ করি। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী সৃষ্টি করি। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র উন্মুক্ত করে দিই।
গতকাল মাসব্যাপী ‘২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে অনেক কিছুই উন্মুক্ত ছিল না। ব্যাংক-বীমা যেন ব্যাপকভাবে বেসরকারি খাতে প্রস্তুত হতে পারে সেটা উন্মুক্ত করে দিই। হেলিকপ্টার-বিমান বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দিই। প্রতিটি খাতগুলোকে আমি বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করি। শুধু তাই নয়, মোবাইল ফোন আমরা বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে উন্নত মানের হাসপাতাল হতে পারে, তার জন্য যেসব পণ্য প্রয়োজন সেগুলো শুল্কমুক্ত করে আমদানি করার ব্যবস্থা আমরা করে দিই। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা করি কিন্তু তার প্রস্তুতি আমরা নিয়েছিলাম ১৯৯৬ সালে। আমাদের দেশটা যেন শিল্পে, বাণিজ্যে এগিয়ে যেতে পারে। উৎপাদন-রফতানি বাড়াতে পারে। সেদিকে যেমন আমি দৃষ্টি দিই। পাশাপাশি আরেকটা দিকে আমি লক্ষ করি, নিজস্ব বাজার সৃষ্টি করা। নিজের দেশের মানুষকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করা। তাদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। আমি যতই রফতানির কথা বলি, আমার দেশে শিল্পায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটবে তখনই, যখন আমাদের নিজস্ব বাজার সৃষ্টি হবে। সেভাবেই আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিই। বেসরকারি খাতে উদ্যোক্তা সৃষ্টির ব্যাপক সুযোগ আওয়ামী লীগ সরকার তৈরি করে দেয়।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাণিজ্য মেলার স্থানটা আমরা তৈরি করে দিলাম ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’-একটি স্থায়ী বাণিজ্য মেলার ব্যবস্থা করে দেয়া ছিল আমাদের লক্ষ্য। প্রথম আপনারা অনুষ্ঠান করছেন, কিছু সমস্যা থাকতেই পারে। আমি তো আপনাদের পুরো কাঠামো তৈরি করে দিয়েছি। সমস্যাগুলো আপনারা সমাধান করে নেন। আমাদের যেটা দায়িত্ব সেটা আমরা পালন করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা দেশ উন্নতি করতে পারে ব্যাপকভাবে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে। আমরা সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি। আন্তর্জাতিকভাবে নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করা, রফতানি বাণিজ্যের জন্য পণ্য উৎপাদন বহুমুখীকরণ একান্তভাবে অপরিহার্য। বর্তমান বিশ্বে করোনার পর আমাদের যে অভিজ্ঞতা, এখন খাদ্য পণ্যের চাহিদা বিভিন্ন দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এটা কখনোই কমবে না। আবার আমার নিজের দেশেও বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষিপণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। বাণিজ্য মেলার সুবিধা হলো দেশ-বিদেশ থেকে যারা আসেন, তাদের সঙ্গে মত বিনিময় করা যায়। অনেক পণ্যের চাহিদা সম্পর্কে জানা যায়। পার্টনারও খুঁজে পাওয়া যায়। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গেলে দেশে-বিদেশে পার্টনারশিপ খুব প্রয়োজন। বর্তমানে প্রযুক্তির যুগ, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সামনে, সেদিকে লক্ষ রেখে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা-আমরা সেদিকেও লক্ষ রেখেছি। কোনোভাবে যেন পিছিয়ে না থাকি সেটাই আমাদের লক্ষ্য, বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শ্রমিক-মালিক-উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনার মধ্যেও আমাদের অর্থনীতি কিন্তু একেবারে স্থবির হয়নি। যেভাবে হোক আমরা কিছুটা চালু রাখতে সক্ষম হয়েছি। পৃথিবীর বহু দেশ আজ ভীষণভাবে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে কিন্তু বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। হয়তো কিছুটা ধাক্কা আমাদের লেগেছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগের উপরে তুলতে সক্ষম হয়েছিলাম, যদিও সেটা কমে গিয়েছিল। ইনশাল্লাহ আমরা সেটা থেকেও অতিক্রম করতে পারবো বলে বিশ্বাস করি। কারণ আমরা একটা লক্ষ্য স্থির করেছি। ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি কিন্তু আমাদের আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছিলেন তা আমাদের অবশ্যই পূরণ করতে হবে। আমি প্রত্যেকটা দূতাবাসকে নির্দেশ দিয়েছি, বর্তমানে আমাদের যে কূটনীতি এটা হবে বাণিজ্যিক কূটনীতি। সেভাবেই সবাই কাজ করছেন এবং উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক চুক্তি সম্পাদনের লক্ষে ২৩টি দেশের বিষয়ে সম্ভাবনা সমীক্ষা সম্পন্ন করেছি। সবার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে আরও সহজভাবে করতে পারি, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যে মর্যাদা পেয়েছি সেটা ধরে রেখে যদি কোনো চ্যালেঞ্জ আসে সেটা যেন আমরা মোকাবিলা করতে পারি সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমার মনে হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও আমাদের গবেষণা দরকার। পণ্য, পণ্য চাহিদা এবং মান বিশেষভাবে নিরুপন করা এবং রফতানির ক্ষেত্রে গুণগত মান ধরে রাখা প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যারা আছেন তাদের অনুরোধ করবো, নিজের দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য আপনাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।