পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুক্রবার সকালে গণভবন থেকে সড়কপথে বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মাপাড়ে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আকস্মিক পদ্মা সেতু পরিদর্শন করেছেন। স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে দুই কিলোমিটার ৭ নম্বর থেকে ১৮ নম্বর পিলার পর্যন্ত হাঁটেন তিনি। দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংকের মুখ ফিরিয়ে নেয়া, রাজনৈতিক বাদানুবাদ, গুজব, সব ছাপিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। পৌষের ভোরে নির্মাণের শেষপ্রান্তে থাকা সেই স্বপ্নের সেতু ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত দিয়ে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেন বঙ্গবন্ধুর বড় কন্যা।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস ইনকিলাবকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী ভোর সাড়ে ৬টায় গণভবন থেকে পদ্মা সেতুর উদ্দেশে রওনা দেন। এরপর তিনি বোনকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতুর ৭ নম্বর পিলার থেকে ১৮ নম্বর পিলার পর্যন্ত হেঁটে যান। পরে দুই বোন গাড়িতে করে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে সেতুর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যান। এ সময় তাদের সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সাড়ে ১১টার দিকে তিনি আবার গণভবনে ফিরে আসেন। এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বারবার তাকিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখছিলেন। হেলিকপ্টার থেকেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বেশ কিছু ভিডিও মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করেন। এর আগে গত বছরের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়া আসা-যাওয়ার পথে হেলিকপ্টার থেকে সরাসরি পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ দেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তখন পদ্মা সেতুর পূর্ণাঙ্গ কাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।
গত ২৬ ডিসেম্বর সচিবালয় থেকে ঢাকা নগর পরিবহন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। এখন পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলছে, এটা শেষ হলেই পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আমাদের টার্গেটের মধ্যেই আগামী ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পদ্মা সেতু পরিদর্শনে আসেন। তারা গাড়িতে করে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যান। ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দ্বিতল পদ্মা সেতুতে নিচ দিয়ে রেলপথ ও ওপর দিয়ে সড়কপথ থাকবে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) এবং নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। সেতুর কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছরের ৩০ জুন যান চলাচলের জন্য উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
জানা গেছে, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর। আর পরের বছর ১২ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ভিত স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় সেতু। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর ধূসর রঙের সপ্তম স্প্যান বসানোর পর সেতুর এক কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়। শুরুতে তিন-চার মাস পরপর স্প্যান বসানো হতো, তবে ২০১৮ সাল থেকে বদলে যায় পরিস্থিতি। প্রতি মাসে একাধিক স্প্যান বসাতে সক্ষম হয় সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ৪১ নম্বর স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয় পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ। পদ্মার বুকে দৃশ্যমান হয় ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। নদীশাসনের কাজ করেছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। শুরুতে এ মহাপ্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি, তবে তিন ধাপে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্প ব্যয়। শেষ পর্যন্ত ব্যয় দাঁয়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।