Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থপাচার ঠেকাতে নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়নের দাবি টিআইবির

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৫৬ পিএম

সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি কর্মীদের প্রায় সম্পূর্ণ আয় নিজ দেশে পাঠানোর যে সুযোগ দিয়েছে, তা একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তবে এক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করতে এবং অর্থপাচার ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের অংশগ্রহণে একটি সমন্বিত কৌশলগত নীতিমালা প্রণয়ন ও যথাযথ বাস্তবায়নকে পূর্বশর্ত হিসেবে দেখছে সংস্থাটি। এর ফলে অবৈধ পন্থায় রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধের পাশাপাশি সরকারের বিপুল রাজস্ব ক্ষতি এড়ানো সম্ভব বলে মনে করছে টিআইবি। বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানায় টিআইবি।

২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি টিআইবি প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে বিদেশিদের কর্মসংস্থান: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আজ এক বিবৃতিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, দেশে বিভিন্ন খাতে কাজ করা বিদেশি কর্মীদের বড় অংশই দেশে অবৈধভাবে কাজ করেন এবং অর্জিত আয় হুন্ডির মাধ্যমে নিজ দেশে পাঠিয়ে থাকেন। যার ন্যূনতম বার্ষিক পরিমাণ ২৬ হাজার কোটি টাকার অধিক। এতে কর ফাঁকির কারণে বার্ষিক রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। তবে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রদত্ত সুযোগ গ্রহণ করে বিদেশি কর্মীরা যদি তাদের অর্জিত আয় বৈধ পথে নিজ দেশে পাঠায়, তাহলেই কেবলমাত্র এই সিদ্ধান্তের ইতিবাচক ফল আশা করা যেতে পারে। অন্যথায়, অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রের ন্যায় এই প্রজ্ঞাপনও একটি কাগুজে সিদ্ধান্ত হিসেবে পরিগণিত হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের একাংশের অসাধু ও দুর্নীতিপরায়ণ মনোবৃত্তি এবং যথাযথ তদারকির ঘাটতি থাকায় বিদেশি কর্মী নিয়োগ, তাদের এ দেশে অবস্থান নিয়ে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলছেন, অধিকাংশ বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে আগমন, অবস্থান ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন না। বাংলাদেশে আগমনের মূল উদ্দেশ্য কর্মসংস্থান হলেও, এ ক্ষেত্রে তারা সাধারণত ট্যুরিস্ট ভিসা বা ভিসা অন অ্যারাইভাল অথবা বিজনেস ভিসায় এসে থাকেন। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় নিয়োগদাতাদের যোগসাজশে কর্মানুমতি ছাড়াই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দেন, যাদের কোনো হদিস সরকারিভাবে রাখা হয় না। আবার সরকার নির্ধারিত নূন্যতম মাসিক বেতন সীমা হালনাগাদ না করায়, কর ফাঁকি দিতে এসব বিদেশিদের সঠিক বেতনও ঘোষণা করে না নিয়োগদাতারা। এর ফলে একদিকে সরকার যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে এক শ্রেণির অসাধু চক্র বিদ্যমান পদ্ধতিকে বিদেশে অর্থপাচার করার সুর্বণ সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক গৃহীত সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বিদেশি কর্মী নিয়োগে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি সমন্বিত কৌশলগত নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। একইসঙ্গে, বিদেশি নাগরিকদের সব তথ্য কার্যকর উপায়ে সংরক্ষণ ও ব্যবহারের সুবিধার্থে সব আগমন ও প্রত্যাগমন পথে সমন্বিত তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু, বিদেশি কর্মীদের মাসিক বেতনসীমা হালনাগাদ করা এবং বিদেশি কর্মীদের তথ্যানুসন্ধানে বিভিন্ন অফিস ও কারখানায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো ও পুলিশের বিশেষ শাখার সমন্বয়ে নিয়মিত যৌথ টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করার আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ