পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিতে দুইটি স্বর্ণের দোকানে ৭০০ ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় ২২১ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- শাহীদ মাতব্বর ওরফে শাহিন, শৈশব রায় ওরফে সুমন ও তাতীবাজারের ক্ষুদ্র স্বর্ণ ব্যবসায়ী উত্তম কুমার সুর। ডিবি বলছে, চুরির পর পালানোর সময় কিছু স্বর্ণ চোরদের কাছ থেকে পড়ে যায়। পরে হিরার গয়না ইমিটেশন ভেবে ফেলে দিয়েছে তারা। কিছু স্বর্ণ উত্তম কুমারের দোকানে রেখেছিলো, বাকি স্বর্ণ বিক্রি করেছে। সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি জানান, গত রোববার ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানা এলাকা থেকে শাহিনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার থেকে ধারাবাহিক অভিযানে বরিশাল ও রাজধানীর শাখারী বাজার এলাকা থেকে বাকি ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, এই চুরির নেতৃত্ব দেয় শাহিন মাতব্বর। তবে শাহিন ও শৈশব ঢাকায় আসে চুরির ঘটনার ১৫ দিন আগে। তাদের তাঁতিবাজারের কল্পনা বোর্ডিংয়ে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় উত্তম। এছাড়া চুরির জন্য যা টাকা পয়সা খরচ হয়েছে তাও বহন করে উত্তম। তারা ওই বোর্ডিংয়ে থাকার সময় উত্তমকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে রেকি করে। পরে অপেক্ষাকৃত দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনে হওয়ায় তারা কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি মার্কেট বেছে নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী মার্কেটের দুইটি দোকানে চুরি করে ৭০০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, মার্কেটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা ছায়াতদন্তের শুরুতে চোরদের গতিবিধি শনাক্ত করতে সক্ষম হই। তদন্তে আমরা জানতে পারি শৈশব ও শামীম দুজনই নিজ নিজ এলাকা ফরিদপুর ও বরিশালে চুরি ও ডাকাতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাদের একদিন মনে হলো তারা ঢাকায় এসে কিছু করবে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা তাদের পূর্বপরিচিত উত্তম রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে তারা তিনজন মিলে চুরির পরিকল্পনা করে। ঘটনার ৪ দিন আগে তারা একবার চুরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল।
তিনি বলেন, চোরদের ফেলে যাওয়া ২২ ভরি স্বর্ণ রমনা থানায় জমা পড়েছে। আর যদি কেউ স্বর্ণ বা হিরার গহনা কুড়িয়ে পেয়ে থাকেন তাহলে থানা বা ডিবি অফিসে জমা দেয়ার অনুরোধ করছি। যদি কেউ স্বইচ্ছায় জমা না দেয়, তাহলে তদন্তে বেরিয়ে আসলে চুরাই মালামাল রাখার দায়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, আমরা তদন্তকালে দেখেছি, কল্পনা বোর্ডিংয়ে চোররা যে উঠেছিল তারা কোনো ধরনের নাম এন্ট্রি করিনি। কিন্তু ডিএমপি থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে হোটেলে নাম এন্ট্রি করার। কল্পনা বোর্ডিংয়ে তাদের নাম এন্ট্রি করা থাকলে আমরা তাদের আরও সহজে ধরতে পারতাম। তবে এ বিষয়ে আমরা কল্পনা বোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আরেকটি বিষয় বলে রাখতে চাই যেসব দোকানিরা চোরাই স্বর্ণ কেনেন তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। মার্কেটের কেউ চোরদের সঙ্গে জড়িত আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো কারো নাম আমরা পাইনি তবে বিষয়টি তদন্ত করছি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ডিসেম্বর ভোর রাতে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি মার্কেটের মোহনা জুয়েলার্স ও বেস্ট এন্ড বেস্ট ক্রিয়েশন জুয়েল এ্যাভিনিউ জুয়েলার্স নামক দুটি স্বর্ণের দোকান থেকে ৭০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়। ওই দিন ভোরে গ্রেফতারকৃত চোররা কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি মার্কেটের পিছনের নির্মাণাধীন বিল্ডিং দিয়ে ৪র্থ তলার বাথরুমের এগঞ্জোস্ট ফ্যান খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। গ্রেফতারকৃতরা চুরির ঘটনার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, করোনাকালীন রাজধানীতে অনেক দিন সবকিছু বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধীরে ধীরে সব খুলে দেওয়া হয়। লকডাউন উঠে গেলে হঠাৎ করে বেড়ে যায় মানুষের চলাচলও। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাÐ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। এই বিষয়গুলো অস্বীকার করার কিছু নেই।
তিনি বলেন, বাসা-বাড়ি ও মার্কেটের আশপাশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগালে ছিনতাই ও চুরির ঘটনা কমে আসবে। আমরা ডিএমপি থেকেও রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকভাবে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাচ্ছি। হাফিজ আক্তার বলেন, যেকোনো ঘটনা ঘটলেই ডিবি চেষ্টা করে এটা শনাক্ত করতে। আগের চেয়ে ডিবি অনেক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সক্ষমতা ও ডাটা এনালাইসিস কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছে। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, যখনই ঘটনা ঘটে, তৎক্ষণাৎ যদি স্থানীয় থানায় কিংবা ডিবিতে জানানো হয় তাহলে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাই বেশি হলেও আমরা সঙ্গে সঙ্গে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।