Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজউকের উপ-পরিচালক রাহেলা রহমত উল্লাহকে বদলি

ইনকিলাবে খবর প্রকাশের পর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না রাজউকের এক উপ-পরিচালক কাছে জিম্মি সেবাগৃহিতারা এই শিরোনামে দৈনিক ইনকিলাবে খবর প্রকাশ হওয়ার পরে রাজউকের উপ-পরিচালক (এস্টেট ও ভ‚মি-১) কর্মকর্তা রাহেলা রহমত উল্লাহকে প্রত্যাহার করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল রোববার রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাহেলা রহমত উল্লাহ রাজউকের উপ-পরিচালককে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে সিনিয়র সহকারি সচিব পদে বদলি করা হয়েছে। তবে তার আদেশে স্বাক্ষর করেছেন জনপ্রশাসনের উপসচিব আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
উল্লেখ, দৃশ্যত ধার্মিক। অফিসে টেবিলের ড্রয়ারে সব সময় থাকে টাকার বান্ডিল। সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, অথচ ঘুষ ছাড়া ফাইল এক চুলও নড়তে দেন না। হাতে টাকার বাÐিল তুলে না দিলে তার টেবিল থেকে ফাইল নড়ে না। টাকার বাÐিল ড্রয়ারে পড়লেই ফাইল নড়েচড়ে উঠে। তিনি আবার টাকা কম নেন না, চালু করেছেন ‘প্যাকেজ রেট’। এই নারী কর্মকর্তা এতোই প্রভাবশালী যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সব কর্মকর্তা কর্মচারী তাকে এক নামে চেনেন। কেউ তাকে ঘাটাতে যান না। ফলে যারা রাজধানী ঢাকায় জমাজমির মালিক ও ঘরবাড়ি করেন; তারা যেন ওই নারী কর্মকর্তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তার নাম রাহেলা রহমত উল্লাহ। রাজউকের উপ-পরিচালক (এস্টেট ও ভ‚মি-১)।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সেবামূলক কার্যকর্ম নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কোনো ঘটনা নয়। সরকারি এই সংস্থাটির বিভিন্ন পদে নানা সময় অদলবদল ঘটেছে। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ অপরিবর্তিত শুধু নয়, পর্যায়ক্রমে ব্যাপকতাও লাভ করেছে। শুধু রাজউক বলেই নয়, দেশের যেসব সেবা প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষ যত বেশি নির্ভরশীল, অনিয়ম-দুর্নীতি সেখানে তত বেশি। রাজউকে এখনো ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না। ঘুষের টাকা না দিলে মাসের পর মাস ফাইল পড়ে থাকে বিভিন্ন টেবিলে। ঘুষের টাকার জন্য জমি বা ফ্ল্যাট মালিকদের নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছেন।
রাজউকে ‘ঘুষ বাণিজ্য’ নিয়ে কর্মচারী ও দালালদের মধ্যে সিÐিকেট তৈরি হয়েছে। রাজউক ভবনের পাশের গলিতে সকাল ৯টার আগ থেকেই লোকজনের আনাগোনা শুরু। আশপাশের ছোট ছোট দোকানগুলোতে বেচাকেনাও জমজমাট। আগন্তুকদের বেশির ভাগই জমির দালাল, হাউজিং ব্যবসার এজেন্ট এবং সাধারণ সেবাপ্রার্থী। ফাঁকে ফাঁকে রাজউকের দু’চারজন কর্মচারীও আসছেন। চা অথবা সিগারেট খাওয়ার ফাঁকে ‘সিক্রেট’ আলাপও সেরে নিচ্ছেন। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেই টাকা-পয়সা লেনদেনের কথাবার্তা কানে আসে। বাড়ির নামজারি, প্লট বরাদ্দ, প্লট হস্তান্তর, ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর, প্লটের মালিকের নথিভুক্তি ইত্যাদি বিভিন্ন পরিষেবা দেয়ার ক্ষেত্রে সেবার ধরণ ভেদে ২ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ম-বহির্ভুত অর্থ লেনদেন হয়। সিÐিকেটের মাধ্যমে অর্থ না দিলে অহেতুক সময়ক্ষেপন করে গ্রাহককে হয়রানি করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পে সেবাগ্রহীতাদের প্রতারণা ও হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক যুগ্মসচিব, রাজউকের কর্মকর্তা বর্তমানে সেবাগৃহীতা বলেন, আমিও বড় বড় প্রতিষ্ঠানের চাকরি করেছি। এমন ঘুষখোর মহিলাকে দেখিনি। সে একজন সিনিয়র সহকারী সচিব পদের কর্মকর্তার তার মুখের ভাষা এমন দেখিনি। টাকা না দিলে সে মানুষের সাথে এমন আচারণ করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ