পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এখনো ভয়াবহ অবস্থা পার করছে। তাই ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা আগামী বছরের ৩০ শে জুন পর্যন্ত বাড়াতে চিঠি দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংঠন এফবিসিসিআই।
বাংলাদেশ ব্যাংককে যত দ্রুত সম্ভব ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধার মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন। রবিবার সকালে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত এফবিসিসিআই’র বার্ষিক সাধারণ সভা ২০১৯-২০২০’য় তিনি এ আহ্বান জানান। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ঋণ শ্রেণীকরণের মেয়াদ বাড়ালে ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি আসবে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দ্রুত সম্ভব হবে।
বার্ষিক সাধারণ সভায়, সভাপতির বক্তব্যে মোঃ জসিম উদ্দিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি তাড়াহুরো করে নতুন আয়কর আইন চুড়ান্ত না করার আহ্বান জানান। যেহেতু বর্তমানে একটি আয়কর আইন প্রযোজ্য রয়েছে, তাই এফবিসিসিআইসহ সকল সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন আইন প্রণয়ণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বাংলাদেশকে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও উন্নয়নশীল দেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দেশের সবখাতের ব্যবসায়ীদের একসাথে কাজ করতে হবে।
রবিবার সকালে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত এফবিসিসিআই’র বার্ষিক সাধারণ সভা ২০১৯-২০২০ এ এই আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে।
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তর পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব এর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় কমিটি এবং এর অধীন বিভিন্ন উপ-কমিটি সভায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে এফবিসিসিআই। এছাড়াও ২০২৬ পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পলিসি অ্যাডভোকেসির অংশ হিসেবে “ইন্টারনাল রিসোর্স মোবিলাইজেশন এন্ড ট্যারিফ রেশনালাইজেশন”, “গ্লোবাল মার্কেট এক্সেস ২০২১-২০২৬ অ্যান্ড বিয়ন্ড”, “ইনভেস্টমেন্ট মেজারস ফর সাসটেইনেবল ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট” ও “সাসটেইনেবল এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট, সাবসিডিস অ্যান্ড ইনসেনটিভস” শীর্ষক চারটি কর্মকৌশল হ্যান্ডবুক আকারে প্রণয়ন করা হয়েছে। যা শিগগিরই সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে। একই সঙ্গে খাতভিত্তিক সক্ষমতা বাড়াতে এফবিসিসিআইতে ইনোভেশন সেন্টার স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
কোভিড মহামারিতে ব্যবসায়ীদের
এফবিসিসিআইকে সত্যিকার অর্থে গবেষণাভিত্তিক সংগঠনে পরিণত করতে খাতভিত্তিক ১৮ জন প্যানেল এডভাইজর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যে কোন বিষয়ে নীতি প্রণয়ণে এসব বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের বিশ্লেষণ ও পরামর্শের মাধ্যমে সরকারের কাছে এফবিসিসিআই তার সুপারিশ আরো শক্তিশালীভাবে তুলে ধরতে সমর্থ হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনটির দরজা সব ব্যবসায়ীর জন্য খোলা। তাদের যে কোন সমস্যা সমাধানে পাশে থাকার এফবিসিসিআই আশে থাকবে। এরইমধ্যে ৭৮টি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠিত হয়েছে। খাতভিত্তিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও দ্রুত সমাধানে কাজ করবে এসব কমিটি।
দেশের শিল্প কারখানায় উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এফবিসিসিআই যৌথভাবে কাজ করছে জানিয়ে সভাপতি বলেন, এরইমধ্যে এফবিসিসিআইতে সেফটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে নানা উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কোভিডকালিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশব্যাপী স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সামগ্রি বিতরণ করেছে এফবিসিসিআই। এছাড়াও, বিজয়ের সূবর্ণ জয়ন্তীকে স্বরণীয় করতে এফবিসিসিআই আয়োজন করেছে ১৬ দিনব্যাপী “বিজয়ের ৫০ বছর: লাল-সবুজের মহোৎসব”।
এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনে ৫০ জন ব্যবসায়ী মুক্তিযোদ্ধাকে সংবধর্না দেবে এফবিসিসিআই।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণজনিত কারণে, ২০১৯-২০২০ সময়ের বার্ষিক সাধারণ সভা নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠান সম্ভব হয়নি। সেই সভাটিই রবিবার অনুষ্ঠিত হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সভায় সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, মোঃ আমিনুল হক শামীম, মোঃ আমিন হেলালী, সালাহউদ্দীন আলমগীর, মোঃ হাবীব উল্লাহ ডন ও এম. এ. রাজ্জাক খান রাজ এবং পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এফবিসিসিআই’র সাধারণ পরিষদের সদস্যবৃন্দের উপস্থিতিতে সকাল ১১.০০টায় শুরু হওয়া সভায় ২০১৯-২০২০ বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
পরে বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।