পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মানবিক দিক বিবেচনা করে নিজের নির্বাহী ক্ষমতা দিয়ে যতটুকু সম্ভব খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকা এবং চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল যুবলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন তিনি। ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করা, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন সময় খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমান দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আর কত আশা করে তারা? কীভাবে আশা করে?
প্রধানমন্ত্রী শেখ বলেন, খালেদা জিয়ার বড় বোন আর ভাই আমার কাছে এসেছে। বোন-বোনের স্বামী, ভাই এরা সব এসেছিল। তখন রেহানাও আমার সঙ্গে উপস্থিত ছিল। মানবিক দিক থেকে আমার এক্সিকিউটিভ পাওয়ারে যতটুকু করতে পারি, তাকে তার বাসায় থাকার এবং চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশে সব থেকে দামী যে হাসপাতাল, যে হাসপাতাল সবচেয়ে ব্যয়বহুল, সেখানেই কিন্তু তার চিকিৎসা হচ্ছে। তার ছেলের বউ তো ডাক্তার। তারেকের বউ ডাক্তার, শুনেছি সে নাকি অনলাইনে শাশুড়িকে দেখে, কই ছেলে-ছেলের বউ তো কোনদিন দেখতে আসলো না। অবশ্য কোকোর বউ এসেছে। তারা তো আসেনি। খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করে বিএনপি আন্দোলন করছে খুব ভালো, তারা আন্দোলন করুক। কিন্তু আমার যতটুকু করার ছিল সেটা কিন্তু করেছি। খালেদা জিয়া তার সরকার আমলে এরশাদ, রওশন এরশাদসহ অনেককে কারাবন্দি রেখে চিকিৎসার সুযোগ দেননি।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে এ দেশে কী অবস্থা ছিল? আজকে তার চিকিৎসার জন্য এত চেঁচামেচি করে বেড়াচ্ছে, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে আমাদের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান যখন অসুস্থ, তাকে সিএমএইচে পর্যন্ত চিকিৎসা করতে দেয় নাই। এমনকি তিনি যখন আইসিইউতে ভর্তি তাকে স্টেচারে করে কোর্টে নিয়ে হাজির করেছে। আর এরশাদকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছিল, তাকে চিকিৎসার জন্য কোনোদিন সুযোগ দেয়নি। রওশন এরশাদকে দেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায়, আমাদের সাজেদা চৌধুরীর অপারেশন হয়েছিল, ঘা শুকায়নি সেই ব্যান্ডেজ অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে জেলে জিয়াউর রহমান ভরেছিল। ঠিক একই অবস্থা মতিয়া চৌধুরীর, তাকেও তখন জেলে দিয়েছিল, তারও তখন টিবি হয়েছিল অসুস্থ ছিল, তাকেও জেলে দিয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, এ রকম বহু অন্যায়-অবিচারের কথা। এমনকি আমাদের পার্টির অনেক নেতাকে গ্রেফতার করে যে অকথ্য অত্যাচার করেছে, বাহাউদ্দিন নাছিম থেকে শুরু করে মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবের হোসেন, শেখ সেলিমসহ বহু নেতাকে গ্রেফতার করে তাদের অকথ্য অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে। নাছিমকে তো এমন অত্যাচার করেছিল যে, তাকে মৃত মনে করে তাড়াতাড়ি কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। যা হোক সে বেঁচে গেছে। দিনের পর দিন অত্যাচার করেছে। আবার সেই অত্যাচারের ভিডিও নিয়ে খালেদা জিয়া-তারেক জিয়া দেখে উৎফুল হয়েছে। এই ধরনের হিংস্র একটা চরিত্র আমরা দেখেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করি, তারা যে সহানুভূতি দেখাতে বলে, তারা যে সহযোগিতা চায়, খালেদা জিয়া কি আচরণ করেছে। ২১ আগস্ট যে গ্রেনেড হামলা তার আগে খালেদা জিয়ার কী বক্তব্য ছিল? শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, কোন দিন বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। এই বক্তৃতাই তো খালেদা জিয়া দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তো আল্লাহর খেলা এটা তো বোঝা ভার। বরং খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীও হতে পারেনি, বিরোধী দলীয় নেতাও হতে পারেনি। এটা তার ওপরই ফলে গেছে।
স্বজন হারানোর বেদনায় আরও বেশি আঘাত দিতে খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, চার পাঁচটা তারিখ (জন্মদিন) হয় কীভাবে? কোথাও ৫ সেপ্টেম্বর, কোথাও ১৯ আগস্ট, আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে হয়ে গেলো ১৫ আগস্ট। এ রকম ১৫ আগস্ট জন্মদিন করে, কেক কেটে উৎসব করার অর্থটা কী?’ ওই দিন আমরা যারা বাবা-মা, ভাই হারিয়েছি। আমাদের মনে আঘাত করা, আমাদের কষ্ট দেওয়া, এটাই তো! এই কষ্টটা দেবার জন্যই তো খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট তার জন্মদিবস পালন করে। আমার কাছ থেকে আর কত আশা করে তারা? কীভাবে আশা করে? সেটাই আমার প্রশ্ন। বঙ্গবন্ধু হত্যার তদন্ত করতে না দেওয়া, বিচার বন্ধ এবং খুনিদের জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল।
জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে ঢাকা-দিল্লী উপকৃত হতে পারে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে ঢাকা-দিল্লী উপকৃত হতে পারে। কারণ, এটি হবে সবুজ জ্বালানি এবং সস্তাও। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে গতকাল সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ কথা বলেন।
সৌজন্য সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের ছোটখাট কিছু বিষয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজেবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। তিনি বলেন, বিজেবি ও বিএসএফের মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের ছোট বড় সকল সমস্যার সমাধান করতে পারে। আমরা চাই এ সমস্যার সমাধান হোক। প্রধানমন্ত্রীও এতে সম্মত হয়েছেন।
শ্রিংলা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানান।
শ্রিংলা বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানোয় তিনি ধন্যবাদ জানান এবং একে ‘বন্ধুত্বের বিশেষ বন্ধন’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতে উভয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারত বিশ্বজুড়ে তার মিশনসমূহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পকর্ স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী পালন করবে। এছাড়া, ওই সকল দেশের স্থানীয় জনগণের মাঝেও বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরবে।
শ্রিংলা আশা করছেন, কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলে জাতিসংঘে ভারত ও বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি যৌথ ছবির প্রদর্শনী করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে-ভারত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে চায়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিলিগুড়ি-পার্বতী পুর, ঢাকা-শিলিগুড়ি এবং ঢাকা-জলপাইগুড়ি রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা অশোক মল্লিক এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।